'দণ্ডকারণ্য' নাটকের রচয়িতা কে?
A
মুনীর চৌধুরী
B
শওকত ওসমান
C
আবু ইসহাক
D
এনামুল হক
উত্তরের বিবরণ
মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক, ভাষাবিজ্ঞানী, বাগ্মী ও শহিদ বুদ্ধিজীবী। তাঁর সাহিত্য ও নাট্যকর্মে দেশপ্রেম, প্রতিবাদ এবং মানবতার বোধ স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
- 
রক্তাক্ত প্রান্তর (১৯৬২): এই নাটকের মূল উপজীব্য পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের কাহিনী। নাটকটিতে তিনি যুদ্ধের বিভীষিকা ও যুদ্ধবিরোধী মনোভাব তুলে ধরেন। এই নাটকের জন্য তিনি ১৯৬২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।
 - 
চিঠি (১৯৬৬): মানবিক সম্পর্ক ও আবেগের জটিলতা তুলে ধরা একটি মননশীল নাটক।
 - 
কবর (রচনাকাল ১৯৫৩, প্রকাশকাল ১৯৬৬): এটি পূর্ববাংলার প্রথম প্রতিবাদী নাটক, যার পটভূমি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। নাটকটি তৎকালীন রাজনৈতিক বাস্তবতা ও জাতীয় চেতনার প্রতীক।
 - 
দণ্ডকারণ্য (১৯৬৬): এটি একটি রূপকাশ্রয়ী নাটক, যেখানে সমাজ ও মানবজীবনের বাস্তব সংকটকে প্রতীকীভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
 - 
পলাশী ব্যারাক ও অন্যান্য (১৯৬৯): রাজনৈতিক দমননীতি, স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও জাতীয়তাবোধের প্রতিফলন ঘটেছে এই নাটকে।
 
মুনীর চৌধুরীর রচনাসমূহ বাংলাদেশের নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসে অনন্য স্থান দখল করে আছে এবং তাঁর জীবন ও কর্ম আজও প্রেরণার উৎস।
0
Updated: 1 day ago
’'জমিদার দর্পন" নাটকে ট্র্যাজেডির গভীরতা ফুটে উঠেনি কারণ-
Created: 3 weeks ago
A
কাহিনী একমুখি ও সংলাপ রিপোর্টধর্মী
B
চরিত্রের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব অনুপস্থিত
C
নাট্যকারের শৈল্পিক নিরাশক্তির অভাব
D
উপরের তিনটিই সত্যি
মুনীর চৌধুরির মতে, এই দর্পণে একটি বিশেষ প্রকৃতির বর্বরোচিত অত্যাচারের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে, যা সম্ভবত অবিকলভাবে প্রতিবর্ণিত হয়েছে। তবে, এটি শিল্পমাধ্যমে পুরোপুরি রূপান্তরিত বা নান্দনিকভাবে আবদ্ধ হয়নি।
0
Updated: 3 weeks ago
মুনীর চৌধুরীর অনূদিত নাটক কোনটি?
Created: 2 months ago
A
কবর
B
চিঠি
C
রক্তাক্ত প্রান্তর
D
মুখরা রমণী বশীকরণ
মুনীর চৌধুরীর নাটক ও অনুবাদ
১. মুখরা রমণী বশীকরণ:
- 
মুনীর চৌধুরী উইলিয়াম শেক্সপিয়রের The Taming of The Shrew নাটকটি অনুবাদ করে বাংলা ভাষায় উপস্থাপন করেছেন মুখরা রমণী বশীকরণ (১৯৭০)।
 - 
এটি পাঁচ অঙ্ক বিশিষ্ট একটি কমেডি নাটক।
 - 
গল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: পদুয়া শহরের ধনী দুই কন্যা, ক্যাথেরিনা এবং বিয়াঙ্কা। ক্যাথেরিনা তীক্ষ্ণ ও মুখর, আর বিয়াঙ্কা খুব সুন্দরী। ভেরোনা শহরের যুবক পেট্রুশিও ক্যাথেরিনার অহংকার ভেঙে তার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
 - 
মুনীর চৌধুরীর নিজের মন্তব্য অনুযায়ী, নাটকের কাহিনী স্থুল হলেও হাস্যরসটি সতেজ, সরস ও আনন্দদায়ক।
 
২. কবর নাটক:
- 
মার্কিন নাট্যকার ইরভিন শ’র Bury The Dead নাটক থেকে প্রেরণা নিয়ে, বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ‘কবর’ নাটক রচিত হয়েছে।
 - 
মূল থিমটি অনুকরণ হলেও, ‘কবর’ একটি অনুবাদ নাটক নয়।
 - 
নাটকে সমাধি থেকে মানুষের আত্মার পুনরুত্থান ঘটার ঘটনার অনুকরণ আছে, যা মূল Bury The Dead নাটকে দেখা যায়।
 
৩. মুনীর চৌধুরীর জীবন ও সৃজন:
- 
মুনীর চৌধুরী (জন্ম: ২৭ নভেম্বর ১৯২৫, মানিকগঞ্জ) ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
 - 
শিক্ষা ও কর্মজীবনের পাশাপাশি তিনি বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
 
৪. মুনীর চৌধুরীর নাটকসমূহ:
- 
মৌলিক নাটক: রক্তাক্ত প্রান্তর, চিঠি, কবর, দণ্ডকারণ্য
 - 
অনুবাদ নাটক: কেউ কিছু বলতে পারে না, রূপার কৌটা, মুখরা রমণী বশীকরণ
 
উৎস: ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
ভাষা-আন্দোলন ভিত্তিক ‘কবর’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 1 day ago
A
জসীম উদ্দীন
B
আহমদ ছফা
C
শওকত ওসমান
D
মুনীর চৌধুরী
ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত ‘কবর’ বাংলাদেশের নাট্যসাহিত্যের এক অমর সৃষ্টি। এটি লিখেছিলেন মুনীর চৌধুরী, যিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবী। ভাষা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে এই নাটকটি বাঙালির আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত হয়েছে। নিচে এর সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো।
• ‘কবর’ নাটকটি রচিত হয় ১৯৫৩ সালে, অর্থাৎ ভাষা আন্দোলনের ঠিক এক বছর পর। এতে মুনীর চৌধুরী সেই আন্দোলনের বেদনাকে প্রতীকীভাবে প্রকাশ করেছেন। নাটকটি বাস্তব ঘটনার উপর ভিত্তি না হলেও এর প্রতিটি চরিত্র ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতিচ্ছবি বহন করে।
• এই নাটকটি একটি প্রতীকধর্মী একাঙ্ক নাটক, যেখানে জীবিত ও মৃতের মধ্যে সংলাপের মাধ্যমে ভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের চেতনা ফুটে উঠেছে। নাটকের মূল প্রতীক ‘কবর’—যা শুধু মৃতদের আশ্রয় নয়, বরং জাতির পুনর্জাগরণের চিহ্ন।
• মুনীর চৌধুরী (জন্ম: ১৯২৫, মৃত্যু: ১৯৭১) ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাট্যকার। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের হাতে বন্দি হয়ে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর শহীদ হন। তাই তিনি শুধু লেখক নন, এক মহান শহীদও।
• ‘কবর’ ছাড়াও তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য নাটক হলো ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’, ‘দণ্ডকারণ্য’, ‘চিঠি’ ও ‘মির্জা গালিব’। এই নাটকগুলোতেও তিনি সমাজের বাস্তবতা ও মানবিক মূল্যবোধের প্রশ্নকে গভীরভাবে উপস্থাপন করেছেন।
• নাটকের প্রধান চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে মা, ছেলে ও কবরবাসী, যারা মৃত্যুর মধ্য দিয়েও জীবনের বার্তা দেন। এটি প্রতীকীভাবে বোঝায়, ভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছে, তারা মৃত নয়—তাদের চেতনা বাঙালির অন্তরে চিরজাগরূক।
• নাটকটির ভাষা সহজ, সংলাপগুলো গভীর ও আবেগময়। এতে মুনীর চৌধুরী সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর হিসেবে বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটিয়েছেন।
• ভাষা আন্দোলনভিত্তিক নাটক হিসেবে ‘কবর’ বাঙালি সংস্কৃতির ইতিহাসে প্রথম সফল প্রতীকী নাটক। এটি পরবর্তী নাট্যচর্চায় গভীর প্রভাব ফেলে এবং স্বাধীনতাবাদী চেতনার সাহিত্যধারাকে অনুপ্রাণিত করে।
• এই নাটকটি আজও বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্য এবং ভাষা শহীদদের স্মরণে নিয়মিতভাবে মঞ্চস্থ হয়।
সুতরাং, ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক আবহে রচিত ‘কবর’ নাটকের রচয়িতা মুনীর চৌধুরী—যিনি নিজের জীবন দিয়েও প্রমাণ করেছিলেন বাঙালির ভাষা ও স্বাধীনতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা।
0
Updated: 1 day ago