মানুষের দৈনিক খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছের অন্তর্ভুক্তি যে রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহা্যে করে-

A

রিকেটস

B

অক্টি ও মাইলাইটিস

C

হাইপো-থাইরয়ডিজম

D

আর্থাইটিস

উত্তরের বিবরণ

img

সামুদ্রিক মাছ মানুষের দেহে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব মাছের মধ্যে বিশেষভাবে আয়োডিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা শরীরের হরমোন ভারসাম্য রক্ষা এবং থাইরয়ড গ্রন্থির কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এজন্য সামুদ্রিক মাছ নিয়মিত খেলে হাইপো-থাইরয়ডিজম বা থাইরয়ড হরমোনের ঘাটতিজনিত রোগের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।

  • সামুদ্রিক মাছ আয়োডিনের উৎকৃষ্ট উৎস। থাইরয়ড গ্রন্থি সঠিকভাবে কাজ করতে আয়োডিন প্রয়োজন হয়, কারণ এটি থেকেই থাইরক্সিন হরমোন তৈরি হয়। আয়োডিনের অভাবে এই হরমোনের উৎপাদন কমে গিয়ে হাইপো-থাইরয়ডিজম দেখা দেয়।

  • হাইপো-থাইরয়ডিজমের উপসর্গ হিসেবে সাধারণত শরীরের ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, ত্বক শুষ্ক হওয়া, ও মানসিক উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ যেমন ইলিশ, টুনা, সার্ডিন, স্যামন বা রুই জাতীয় মাছ খেলে এসব লক্ষণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

  • ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সামুদ্রিক মাছের আরেকটি প্রধান উপাদান, যা থাইরয়ড গ্রন্থিতে প্রদাহ কমায় এবং হরমোনের কার্যকারিতা বাড়ায়। এটি শরীরের বিপাকক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে।

  • ভিটামিন ডি ও সেলেনিয়াম সামুদ্রিক মাছ থেকে পাওয়া যায়, যা হরমোন নিঃসরণ ও রক্তে ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য রক্ষা করে। সেলেনিয়াম থাইরয়ড হরমোনের সক্রিয় রূপে রূপান্তরে সাহায্য করে।

  • বাংলাদেশে থাইরয়ডজনিত রোগের একটি বড় কারণ আয়োডিন ঘাটতি, বিশেষ করে পাহাড়ি ও নদী দূরবর্তী এলাকায়। তাই স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত ২–৩ দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরামর্শ দেন।

  • সামুদ্রিক শৈবাল ও অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীও আয়োডিনে সমৃদ্ধ, তাই এগুলোকেও খাদ্য তালিকায় যুক্ত করা যায়। এতে শরীরের আয়োডিনের ঘাটতি পূরণ হয়ে থাইরয়ড হরমোন উৎপাদন স্বাভাবিক থাকে।

  • হাইপো-থাইরয়ডিজম প্রতিরোধ ছাড়াও সামুদ্রিক মাছ হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ও জয়েন্টের ব্যথা কমাতেও কার্যকর। এর ওমেগা-৩ উপাদান রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তনালীর স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়।

অন্য বিকল্পগুলো এ রোগ প্রতিরোধে তেমন কার্যকর নয়। রিকেটস মূলত ভিটামিন ডি ঘাটতির কারণে হয়; অক্টি ও মাইলাইটিস হলো স্নায়ু বা মস্তিষ্কজনিত প্রদাহজনিত রোগ; আর আর্থাইটিস জয়েন্টের প্রদাহজনিত সমস্যা, যা সামুদ্রিক মাছ খেলে কিছুটা কমতে পারে, তবে এটি হাইপো-থাইরয়ডিজমের মতো সরাসরি সম্পর্কিত নয়।

সুতরাং মানুষের দৈনিক খাদ্য তালিকায় সামুদ্রিক মাছের অন্তর্ভুক্তি বিশেষভাবে হাইপো-থাইরয়ডিজমের প্রাদুর্ভাব কমাতে সাহায্য করে, কারণ এর আয়োডিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও সেলেনিয়াম থাইরয়ড গ্রন্থির সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখে এবং হরমোন ভারসাম্য রক্ষা করে।

Unfavorite

0

Updated: 21 hours ago

Related MCQ

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD