রামায়ণের অনুবাদক নয় কে?
A
কবীন্দ্র পরমেশ্বর
B
কৃত্তিবাস
C
নিত্যানন্দ আচার্য
D
চন্দ্রাবতী
উত্তরের বিবরণ
রামায়ণ বাংলা সাহিত্যে বহুবার অনূদিত হয়েছে, তবে বিভিন্ন অনুবাদকদের দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন রূপে প্রকাশিত হয়েছে। প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে কবীন্দ্র পরমেশ্বর রামায়ণের অনুবাদক নন। সঠিক উত্তর হলো কবীন্দ্র পরমেশ্বর।
কৃত্তিবাস হলো বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন রামায়ণ অনুবাদক, যিনি চণ্ডী রামায়ণ বা কৃত্তিবাসী রামায়ণ নামে পরিচিত। তিনি ১৫শ শতকে রামায়ণকে বাংলায় রূপান্তরিত করেন এবং এটি বাংলা সাহিত্যে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অর্জন করে।
নিত্যানন্দ আচার্য ও চন্দ্রাবতী—দুটি নামও রামায়ণ অনুবাদে যুক্ত। নিত্যানন্দ আচার্য প্রাচীনকালের অনুবাদক এবং চন্দ্রাবতী বাংলায় রামায়ণের নারীসংক্রান্ত বা ভিন্ন আঙ্গিকের অনুবাদ করেন।
অন্যদিকে, কবীন্দ্র পরমেশ্বর বিভিন্ন সাহিত্যের ক্ষেত্রে কাজ করলেও রামায়ণের অনুবাদক হিসেবে পরিচিত নন। তাই তিনি রামায়ণের অনুবাদক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নন।
সারসংক্ষেপে, রামায়ণের অনুবাদক নয় কবীন্দ্র পরমেশ্বর, এবং অন্যান্য বিকল্প—কৃত্তিবাস, নিত্যানন্দ আচার্য ও চন্দ্রাবতী—রামায়ণ অনুবাদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
0
Updated: 22 hours ago
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি-
Created: 5 days ago
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
কাজী নজ্রুল ইসলাম
D
ফররুখ আহমেদ
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যিনি প্রথম বিদ্রোহী মনোভাব নিয়ে সাহিত্যকে নতুন ধারায় রূপ দিয়েছিলেন তিনি হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁর সাহিত্যকর্মে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, সমাজবিরোধী চিন্তা, ধর্মীয় কুসংস্কারের প্রতিবাদ এবং ইউরোপীয় ধ্যানধারণার প্রভাব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার সূচনা করেছিলেন, সেটি পরবর্তী প্রজন্মের সাহিত্যিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল।
তিনি তাঁর সাহিত্যজীবনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন যে সাহিত্য কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং চিন্তার বিপ্লব ঘটানোর এক শক্তিশালী অস্ত্র।
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) জন্মগ্রহণ করেন যশোর জেলার সাগরদাঁড়িতে। তিনি ছিলেন ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত প্রথমদিকের বাঙালিদের একজন, যিনি পশ্চিমা চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে সাহিত্য রচনায় যুক্ত হন।
-
তাঁর রচনাশৈলীতে বিদ্রোহ দেখা যায় ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার ও প্রথাবদ্ধ ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে। তিনি প্রচলিত সংস্কারকে ভাঙতে চেয়েছিলেন এবং সমাজে নতুন আলো জ্বালাতে সচেষ্ট ছিলেন।
-
বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের কৃতিত্ব তাঁর। এই ছন্দে লেখা ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে স্বীকৃত।
-
তাঁর কবিতায় মানবজীবনের দুঃখ, সংগ্রাম, প্রেম, অহংকার ও বিদ্রোহ—সবকিছুর মিলন ঘটেছে। বিশেষত, রাবণের চরিত্রকে তিনি এক বীরের প্রতীকে রূপ দিয়েছেন, যা বিদ্রোহী চিন্তারই প্রকাশ।
-
‘তিলোত্তমা সম্ভব’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’, ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’—এসব রচনায় সমাজ, ধর্ম ও নৈতিকতার প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে তাঁর চিন্তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
-
তিনি খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে সমাজের তীব্র বিরোধিতার শিকার হন, কিন্তু তাতেও তিনি নিজের আদর্শে অবিচল ছিলেন। এই সাহস ও আত্মবিশ্বাসই তাঁকে বিদ্রোহী কবির মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
-
তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে বাংলা ভাষা পেয়েছে এক নতুন রূপ, যেখানে ভাবের গভীরতা ও শব্দচয়নের সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশে গেছে।
-
মধুসূদন বাংলা নাটককেও আধুনিক রূপ দেন। তাঁর ‘শর্মিষ্ঠা’ ও ‘পদ্মাবতী’ নাটকে পাশ্চাত্য নাট্যরীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সুতরাং, মাইকেল মধুসূদন দত্তই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি, যিনি পুরনো সাহিত্যধারাকে ভেঙে নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তাঁর এই বিদ্রোহই পরবর্তীতে কাজী নজরুল ইসলামের মতো কবিদের পথ দেখিয়েছে।
0
Updated: 5 days ago
'নদী সিকস্তি' কারা?
Created: 1 week ago
A
নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ
B
নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়
C
নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে
D
নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে
বাংলা ভাষায় ‘নদী সিকস্তি’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয় এমন জনগণের বর্ণনার জন্য যারা নদী ভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়েছে, অর্থাৎ নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে তাদের বসতভূমি, ফসলি জমি এবং জীবনযাপন হারাতে হয়েছে। এটি কোনো বিশেষ পেশা বা বসবাসের ভিত্তিতে নয়, বরং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে বোঝায়। তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
নদী সিকস্তি শব্দের অর্থ:
-
“নদী” → নদী সম্পর্কিত বা নদীর আশেপাশের।
-
“সিকস্তি” → ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বস্বান্ত ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত।
-
মিলিতভাবে, নদী সিকস্তি অর্থ দাঁড়ায় নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ।
বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ:
-
বাংলাদেশে নদীভাঙন একটি সাধারণ সমস্যা। নদীর বালুচর, বাঁধ, ভাঙা পাড়ের কারণে অনেক মানুষ তাদের জমি ও বসতি হারায়।
-
এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে স্থানীয় ভাষায় নদী সিকস্তি বলা হয়।
-
তারা শুধু বসতিই হারান না, বরং জীবিকার উৎসও অনেকাংশে লোপ পায়।
অন্য বিকল্পগুলোর ভুল ব্যাখ্যা:
-
(খ) নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়: এটি নদীর নতুন জমি বা চর দখলকারীদের বোঝায়, কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়।
-
(গ) নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে: এটি মৎস্যজীবীদের বর্ণনা, যাদের ‘সিকস্তি’ বা ভাঙনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই।
-
(ঘ) নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে: এটি শুধু অবস্থান নির্দেশ করে, তবে তারা সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত নাও হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
-
নদী সিকস্তি হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
-
এটি জীবিকার ক্ষতি, বসতি ধ্বংস ও সম্পদের ক্ষয় নির্দেশ করে।
উপসংহার:
বাংলা ভাষায় নদী সিকস্তি বলতে বোঝায় নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ, তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
0
Updated: 1 week ago
'শূন্যপূরাণের' রচয়িতা -
Created: 1 week ago
A
রামাই পণ্ডিত
B
হলায়ূধ মিশ্র
C
কাহ্নপা
D
কুক্কুরীপা
'শূন্যপুরাণ' রামাই পণ্ডিত রচিত একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বগ্রন্থ এবং এটি অন্ধকার যুগের একটি সাহিত্য নিদর্শন। এই গ্রন্থটি মূলত ধর্মপূজাপদ্ধতি সম্পর্কে লিখিত, যেখানে গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত একটি চম্পুকাব্য রচিত হয়েছে। 'শূন্যপুরাণ' ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রথম ৫টি অধ্যায় সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে। এটি ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত রচিত হতে পারে, তবে সঠিক সময়কাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। শূন্যপুরাণ নামহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, এবং বিশ্বকোষপ্রণেতা নাগেন্দ্রনাথ বসু ১৩১৪ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ' থেকে এটি নামকরণ করে প্রকাশ করেন।
'শূন্যপুরাণ' গ্রন্থের মধ্যে ‘নিরঞ্জনের রুষ্মা’ নামে একটি অংশ রয়েছে, যেখানে মুসলিম পীর-গাজী কর্তৃক ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের হাত থেকে বৌদ্ধদের রক্ষা করার বিবরণ দেয়া হয়েছে। ভাষাগত বৈশিষ্ট্যের কারণে কিছু পণ্ডিত এই অংশকে পরবর্তীকালের রচনা বলে মনে করেন এবং তাঁদের মতে, এটি হিন্দু-মুসলিম ধর্মসমন্বয়ের চেতনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
তবে 'শূন্যপুরাণ' ছাড়া আরও কিছু লেখকও উল্লেখযোগ্য, যেমন হলায়ূধ মিশ্র, কাহ্নপা এবং কুক্কুরীপা। হলায়ূধ মিশ্র ছিলেন রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি এবং তিনি 'সেক শুভোদয়া' নামক একটি চম্পূকাব্য রচনা করেন, যা খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে রচিত হয়েছিল। কাহ্নপা, যিনি চর্যাপদের সর্বাধিক পদরচয়িতা, সহজিয়া তান্ত্রিক বৌদ্ধযোগী ছিলেন এবং তাঁর ১৩টি পদ রচনা করেন। কুক্কুরীপা, যিনি চর্যাপদের মহিলা কবি হিসেবে পরিচিত, তিনটি পদ রচনা করেন, তবে ৪৮নং পদটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই তথ্যগুলো বাংলা সাহিত্য এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বের মূল্যবান অংশ হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 week ago