ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৌলিক গ্রন্থ কোনটি?
A
বেতালপঞ্চবিংশতি
B
সীতার বনবাস
C
অতি অল্প হইল
D
শকুন্তলা
উত্তরের বিবরণ
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা সাহিত্যের একজন প্রথিতযশা লেখক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। তিনি শিক্ষা, সমাজ সংস্কার ও শিশু সাহিত্য চর্চায় বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্যে কিছু গ্রন্থ সম্পূর্ণ রচনা, অর্থাৎ মৌলিক সৃষ্টি, এবং কিছু গ্রন্থ তিনি অনুবাদ করেছেন। প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ‘অতি অল্প হইল’ হলো বিদ্যাসাগরের মৌলিক গ্রন্থ। তাই সঠিক উত্তর হলো অতি অল্প হইল।
‘অতি অল্প হইল’ গ্রন্থটি মূলত শিশুদের জন্য লেখা এবং এতে সহজ ও সরল ভাষার মাধ্যমে শিক্ষামূলক গল্প উপস্থাপন করা হয়েছে। বিদ্যাসাগরের উদ্দেশ্য ছিল শিশুদের মনোজগৎ বিকাশ করা এবং তাদের নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষার ভিত্তি গড়ে তোলা। তিনি গল্পের মাধ্যমে শিশুদের সৎ চেতনা, সততা, পরিশ্রম ও সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করেছেন।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা সাহিত্যে মৌলিক সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষভাবে পরিচিত। তার সাহিত্যকর্মগুলোতে লক্ষ্য করা যায়—
সহজ ও সরল ভাষা: শিশুদের বোধগম্য এবং আকর্ষণীয় ভাষা ব্যবহার।
নৈতিক শিক্ষা: গল্প ও চরিত্রের মাধ্যমে মানবিক গুণাবলী ও নৈতিক শিক্ষা প্রচার।
সামাজিক বার্তা: সমাজ সংস্কার ও নারী শিক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন ইত্যাদির প্রাসঙ্গিকতা।
‘অতি অল্প হইল’ শুধু শিশুসাহিত্যের জন্য নয়, বাংলা ভাষার মৌলিক সাহিত্যকর্ম হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যাসাগরের অন্যান্য শিশু গ্রন্থ যেমন ‘চাঁদের হাসি’, ‘শিশু বিদ্যাসাগর’ প্রভৃতি রচনায়ও তার এই ধারা বজায় থাকে। তবে ‘অতি অল্প হইল’ তাঁর প্রথম ও স্বতন্ত্র মৌলিক সৃষ্টি, যা শিক্ষামূলক এবং সাহিত্যিক দিক থেকে সমানভাবে সমাদৃত।
অন্য বিকল্পগুলো, যেমন ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’, ‘সীতার বনবাস’, এবং ‘শকুন্তলা’, বিদ্যাসাগর অনুবাদ করেছেন। তিনি বাংলা ভাষায় এই রচনাগুলো পৌঁছে দিয়ে প্রাচীন ও বিদেশি সাহিত্যকে বাংলাভাষীর জন্য সহজলভ্য করেছেন। তাই এগুলো মৌলিক গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত নয়।
সংক্ষেপে, ‘অতি অল্প হইল’ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৌলিক গ্রন্থ, যা শিশু সাহিত্য ও শিক্ষামূলক গল্পচর্চার ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যের একটি অমূল্য নিদর্শন। এটি তাঁর সাহিত্যসৃষ্টির স্বতন্ত্রতা এবং সমাজ ও শিশু শিক্ষায় তাঁর অনন্য অবদানকে প্রতিফলিত করে।
0
Updated: 22 hours ago
কোন লেখক ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের হেড পণ্ডিত পদে নিযুক্ত ছিলেন?
Created: 1 month ago
A
গোলকনাথ শর্মা
B
চণ্ডীচরণ মুনশী
C
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
D
রামরাম বসু
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
-
বাংলা গদ্যের জনক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
-
তিনি বাংলা গদ্যে যতি বা বিরামচিহ্নের প্রবর্তন করেন।
-
বাংলা গদ্য প্রবাহ সমৃদ্ধির জন্য তিনি ‘উচ্চবচন ধ্বনিতরঙ্গ’ ও ‘অনতিলক্ষ্য ছন্দঃস্রোত’ সৃষ্টি করেন।
-
তিনি বাংলা গদ্যকে গতিশীল করে প্রাণদান করেছেন।
-
বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যে সুললিত শব্দবিন্যাস, পদবিভাগ ও যতিসন্নিবেশে সুবোধ্য ও শিল্প গুণান্বিত করে তোলেন।
-
বাংলা গদ্যকে তিনি সাহিত্যগুণসম্পন্ন ও সর্বভাব প্রকাশক্ষম করেছিলেন বলেই তাঁকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়।
-
তিনি ১৮৪১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯শে ডিসেম্বর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের হেড পণ্ডিত পদে নিযুক্তি হন।
উল্লেখ্য,
-
চণ্ডীচরণ মুনশী ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের বাংলা বিভাগের অন্যতম অধ্যাপক।
-
তিনি ১৮০৫ খ্রিষ্টাব্দে কাদির বখশ রচিত ফারসী গ্রন্থ ‘তুতীনামা’ বাংলায় অনুবাদ করেন।
অন্যদিকে,
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের পণ্ডিতগণ হলেন:
-
উইলিয়াম কেরী
-
রামরাম বসু
-
গোলকনাথ শর্মা
-
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার
-
তারিণীচরণ মিত্র
-
রাজীবলোচন
-
চণ্ডীচরণ মুনশী
-
হরপ্রসাদ রায় ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; লাল নীল দীপাবলি – হুমায়ুন আজাদ; বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – মাহবুবুল আলম।
0
Updated: 1 month ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রথম কোনগ্রন্থে বিরামচিহ্ন ব্যবহার করেন?
Created: 2 weeks ago
A
বেতাল পঞ্চবিংশতি
B
ব্যকরণ কৌমুদী
C
শকুন্তলা
D
ভূগোলখগোল বর্ণনম
বাংলা গদ্যভাষার বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনন্য। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ ছিল সেই প্রথম গ্রন্থ, যেখানে বাংলা গদ্য জড়তা ও দুর্বোধ্যতা থেকে মুক্ত হয়ে সাহিত্যিক রূপে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি গদ্যের ভাষাকে শুধু সরল করেননি, বরং তাকে নিয়ম, শৃঙ্খলা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ করেছেন।
-
বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যের বিশৃঙ্খল ও অনিয়মিত রূপকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন।
-
তিনি কমা ও অন্যান্য যতিচিহ্নের সুষ্ঠু ব্যবহার করে বাক্যকে অর্থবোধক অংশে বিভক্ত করেন, ফলে ভাষা হয় সুসংগঠিত।
-
গদ্যে উপবাক্য ও অন্বয় প্রয়োগের মাধ্যমে তিনি বাক্যগঠনকে যুক্তিসঙ্গত ও ভাবসম্পন্ন করেন।
-
ভাবের গভীরতা অনুযায়ী বাক্যের দৈর্ঘ্য ও ছন্দে বৈচিত্র্য আনেন, যা গদ্যে লাবণ্য ও সংগতি সৃষ্টি করে।
-
তাঁর এই শৈলীকৌশল বাংলা গদ্যকে প্রথমবারের মতো সাহিত্যসুলভ মর্যাদা ও নান্দনিক পূর্ণতা দেয়।
0
Updated: 2 weeks ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অনুবাদ গ্রন্থ 'শকুন্তলা' কোন কবির রচনা অবলম্বনে অনুবাদ করা হয়েছিল?
Created: 1 month ago
A
বাল্মীকি
B
কালিদাস
C
মার্শম্যান
D
মৈনাসত
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০–১৮৯১)
-
পূর্ণ নাম: ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
-
তিনি অনেক সময় “ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা” নামেও স্বাক্ষর করতেন।
-
সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে অসাধারণ পাণ্ডিত্যের জন্য ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ তাঁকে “বিদ্যাসাগর” উপাধি প্রদান করে।
-
১৮৪১ সালের ২৯ ডিসেম্বর, মাত্র একুশ বছর বয়সে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান পণ্ডিত হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
-
তাঁর আত্মজীবনীমূলক অসমাপ্ত রচনা: ‘আত্মচরিত’।
অনুবাদ গ্রন্থসমূহ
-
ভ্রান্তিবিলাস – শেক্সপিয়রের Comedy of Errors অবলম্বনে।
-
বেতালপঞ্চবিংশতি – হিন্দি বৈতালপচ্চিসি এর বঙ্গানুবাদ।
-
শকুন্তলা – কালিদাসের অভিজ্ঞান শকুন্তলাম অনুসারে।
-
সীতার বনবাস – রামায়ণ অনুসারে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; উচ্চমাধ্যমিক সাহিত্যপাঠ; বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago