বাংলা লিপির উদ্ভব হয়েছে কোন প্রাচীন লিপি থেকে?
A
সংস্কৃত লিপি
B
চীনা লিপি
C
আরবি লিপি
D
ব্রাহ্মী লিপি
উত্তরের বিবরণ
বাংলা লিপির উৎপত্তি একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক বিকাশের ফল, যা দক্ষিণ এশিয়ার প্রাচীন লিপির ধারার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। গবেষণা অনুযায়ী, বাংলা লিপির মূল উৎস হলো ব্রাহ্মী লিপি। তাই সঠিক উত্তর ব্রাহ্মী লিপি।
প্রথমে জানা দরকার, ব্রাহ্মী লিপি ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীনতম লিপি, যার সূচনা হয়েছিল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকে, সম্রাট অশোকের সময়। অশোকের শিলালিপি বা "অশোকের ফরমান" এই লিপিতে উৎকীর্ণ ছিল। পরবর্তীকালে ব্রাহ্মী লিপি থেকেই ভারতবর্ষের প্রায় সব আঞ্চলিক লিপির উদ্ভব ঘটে—দেবনাগরী, গুজরাটি, তামিল, তেলেগু, কন্নড়, ওডিয়া এবং বাংলা—সবই এই লিপির উত্তরসূরি।
বাংলা লিপির বিকাশ প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে ঘটেছে। প্রথমে ব্রাহ্মী লিপি থেকে উৎপন্ন হয় গুপ্ত লিপি, যা গুপ্ত সাম্রাজ্যের (চতুর্থ থেকে ষষ্ঠ শতক) শাসনামলে ব্যবহৃত হতো। গুপ্ত লিপি থেকে পরে বিকশিত হয় সিদ্ধমাত্রিকা লিপি, যা বাংলার পাশাপাশি বিহার ও অসম অঞ্চলেও প্রচলিত ছিল। এই সিদ্ধমাত্রিকা লিপিই ক্রমে রূপ নেয় গৌড়ীয় লিপিতে, যা মধ্যযুগে বাংলা ভাষা লেখার প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে।
বাংলা লিপি মূলত এই গৌড়ীয় লিপির পরিণত রূপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অক্ষরের গঠন, উচ্চারণ ও লেখনরীতিতে পরিবর্তন আসতে থাকে, এবং ধীরে ধীরে আজকের আধুনিক বাংলা লিপির রূপটি গড়ে ওঠে। এই রূপান্তর প্রক্রিয়া প্রায় এক হাজার বছরের দীর্ঘ বিবর্তনের ফল।
বাংলা লিপির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো—এটি স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের সম্মিলনে গঠিত একটি ধ্বনিমূলক লিপি, যেখানে প্রতিটি অক্ষর একটি নির্দিষ্ট ধ্বনিকে নির্দেশ করে। এছাড়া যুক্তাক্ষর, মাত্রা, কারচিহ্ন ও বিশেষ স্বরচিহ্নের ব্যবহারে এটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও জটিল লিপি হিসেবে পরিচিত।
বাংলা লিপির ইতিহাসে মধ্যযুগীয় শিলালিপি, তাম্রলিপি ও পুঁথি সাহিত্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত। যেমন—বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন ‘চর্যাপদ’, যা সিদ্ধাচার্যদের রচিত, সেটি বাংলা লিপির প্রাথমিক রূপের সাক্ষ্য দেয়। সেখানে দেখা যায়, লিপি এখনো সিদ্ধমাত্রিকার কাছাকাছি হলেও বাংলা ভাষার নিজস্ব ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য স্পষ্টভাবে উপস্থিত।
পরবর্তীকালে মুদ্রণযন্ত্রের আগমন ও সাহিত্যচর্চার প্রসারে বাংলা লিপি আরও মান্য ও একরূপ হয়। বিশেষ করে ঊনবিংশ শতকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা বর্ণমালাকে সংস্কার করেন এবং বর্তমানে ব্যবহৃত ১১টি স্বরবর্ণ ও ৩৯টি ব্যঞ্জনবর্ণের রূপটি প্রচলিত করেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলা লিপি কোনো হঠাৎ উদ্ভাবিত পদ্ধতি নয়; বরং এটি ভারতীয় লিপির এক ধারাবাহিক বিবর্তনের ফল, যার মূল শিকড় প্রাচীন ব্রাহ্মী লিপিতে প্রোথিত। এই ব্রাহ্মী লিপি থেকেই বহু শতাব্দী ধরে রূপান্তরিত হয়ে আজকের আধুনিক বাংলা লিপি গড়ে উঠেছে, যা শুধু লেখার মাধ্যম নয়, বরং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গভীর ঐতিহ্যের প্রতীক।
0
Updated: 22 hours ago
Custom' শব্দের পরিভাষা কোনটি যথার্থ?
Created: 3 months ago
A
আইন
B
প্রথা
C
শুল্ক
D
রাজস্বনীতি
‘Custom’ শব্দের অর্থ হচ্ছে — কোনো সমাজের প্রথা, অভ্যাস বা রীতিনীতি।
অন্যদিকে,
‘Customs’ শব্দের অর্থ — শুল্ক বিভাগ বা কাস্টমস অফিস।
‘Act’ শব্দের অর্থ — আইন বা বিধান।
‘Duty’ শব্দের অর্থ — শুল্ক বা কর।
উৎস: প্রশাসনিক পরিভাষা, বাংলা একাডেমি।
0
Updated: 3 months ago
'রসিদ' কোন ভাষার শব্দ?
Created: 1 month ago
A
আরবি
B
ফারসি
C
উর্দু
D
হিন্দি
• রসিদ (বিশেষ্য পদ),
- ফারসি ভাষার শব্দ।
অর্থ:
- পণ্য পরিবহনের জন্য ভাড়া আদায়ের দলিল।
• ফারসি ভাষার কিছু শব্দ:
সেতার, গুনাহ, পরহেজগার, দরগা, চশমা, খানা, জায়নামাজ, নামায, রোজা, আইন, সালিশ, নালিশ, বাদশাহ, সুপারিশ, সর্দি, শিরোনাম, হাঙ্গামা, ফরমান, ফরিয়াদ, বান্দা, আমদানি, সবজি, রসিদ।
0
Updated: 1 month ago
'অরবিন্দ' শব্দের অর্থ কী?
Created: 1 month ago
A
সূর্য
B
যোদ্ধা
C
বন
D
পদ্ম

'পদ্ম' শব্দের অন্যান্য সমার্থক শব্দ:
কমল, উৎপল, পঙ্কজ, কুমুদ, কুবলয়, শতদল, অরবিন্দ, রাজীব, নলিনী, সরোজ।
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২১ সংস্করণ) এবং বাংলা একাডেমি, আধুনিক বাংলা অভিধান।
0
Updated: 1 month ago