রক্তে Sodium এর স্বাভাবিক মাত্রা কত?
A
১১৫-১৩৫
B
১৩৫-১৪৫
C
১৫০-১৭০
D
১৭০-১৯০
উত্তরের বিবরণ
রক্তে সোডিয়াম (Sodium) শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইট, যা শরীরের তরল ভারসাম্য, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম এবং পেশির সংকোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর স্বাভাবিক মাত্রা বজায় থাকা শরীরের জন্য অপরিহার্য, কারণ মাত্রা বেড়ে বা কমে গেলে তা শরীরের কার্যক্রমে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে।
• রক্তে সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩৫ থেকে ১৪৫ মিলি ইকুইভ্যালেন্ট প্রতি লিটার (mEq/L)। এই সীমার মধ্যেই শরীরের তরল ভারসাম্য সঠিক থাকে এবং কোষের ভেতর-বাইরের পানির পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয়।
• সোডিয়াম শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স রক্ষার মূল উপাদান। এটি কোষের ভিতরে ও বাইরে পানির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে রক্তচাপ ও রক্তের পরিমাণ স্থিতিশীল থাকে।
• শরীরে সোডিয়ামের একটি বড় অংশ কিডনি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। কিডনি অতিরিক্ত সোডিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বের করে দেয়, আর প্রয়োজনমতো ধরে রাখে।
• সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলে (যাকে বলে Hyponatremia) তখন মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব, খিঁচুনি বা চেতনা হারানোর মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত অতিরিক্ত ঘাম, বমি, ডায়রিয়া, অথবা অতিরিক্ত পানি পান করার ফলে হতে পারে।
• সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলে (যাকে বলে Hypernatremia) তখন তৃষ্ণা বেড়ে যায়, মুখ শুকিয়ে যায়, বিভ্রান্তি, পেশির দুর্বলতা বা অজ্ঞান হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। সাধারণত এটি শরীরে পানির ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশনের কারণে ঘটে।
• সোডিয়ামের মাত্রা সঠিক রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হয় এবং খাদ্যে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি সমস্যা ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
• রক্তে সোডিয়াম পরিমাপ সাধারণত Serum Electrolyte Test বা Basic Metabolic Panel (BMP) পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়। এতে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরাইডসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রোলাইটের পরিমাণ জানা যায়।
• চিকিৎসকরা রোগীর শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী অন্তঃশিরা স্যালাইন (IV saline) বা খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখেন।
• শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যে সামান্য পরিমাণে লবণ (সোডিয়াম ক্লোরাইড) থাকা প্রয়োজন, তবে অতিরিক্ত নয়।
অতএব, রক্তে সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা ১৩৫–১৪৫ mEq/L। এই সীমা অতিক্রম করলে বা নিচে নেমে গেলে শরীরের ভারসাম্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ে, তাই তা সবসময় স্বাভাবিক রাখাই স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জরুরি।
0
Updated: 23 hours ago
ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশার নাম কি?
Created: 6 hours ago
A
ইষ্টিগোরিয়া
B
এনোফিলিস
C
কিউলেক্স
D
এডিস
ম্যালেরিয়া একটি প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ যা মূলত মশার মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগের জীবাণু প্লাজমোডিয়াম (Plasmodium) নামক পরজীবীর দ্বারা সৃষ্ট এবং এটি মানুষের রক্তে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়। তবে এই পরজীবী নিজে মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে না; এর বাহক হিসেবে কাজ করে এনোফিলিস (Anopheles) নামের স্ত্রী মশা। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো।
• এনোফিলিস মশা হচ্ছে একমাত্র প্রজাতি যা ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহন করে। শুধুমাত্র স্ত্রী এনোফিলিস মশা রক্ত পান করে কারণ ডিম পাড়ার জন্য তার প্রোটিন প্রয়োজন হয়। পুরুষ মশা কেবল ফুলের রস খায় এবং কোনো রোগ বহন করে না।
• এই মশার দেহে যখন ম্যালেরিয়াজনিত প্লাজমোডিয়াম পরজীবী প্রবেশ করে, তখন তা মশার লালাগ্রন্থিতে অবস্থান করে। পরে মশা যখন কোনো মানুষকে কামড়ায়, তখন সেই পরজীবী রক্তে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়।
• ম্যালেরিয়ার প্রধান জীবাণু হলো Plasmodium vivax, Plasmodium falciparum, Plasmodium malariae, ও Plasmodium ovale। এর মধ্যে Plasmodium falciparum সবচেয়ে প্রাণঘাতী এবং দ্রুত প্রাণহানি ঘটাতে সক্ষম।
• এনোফিলিস মশা সাধারণত স্থির ও পরিষ্কার পানিতে ডিম পাড়ে, যেমন—ধানক্ষেত, পুকুরের ধারে, বা খোলা পানির ট্যাংকে। অন্যদিকে কিউলেক্স বা এডিস মশা সাধারণত ময়লা বা শহুরে জমা পানিতে জন্মায়।
• এই মশার ক্রিয়াশীলতা মূলত রাত্রিকালীন; সূর্যাস্তের পর থেকে ভোর পর্যন্ত তারা সক্রিয় থাকে। এজন্য রাতে মশারি ব্যবহার করাই ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
• ম্যালেরিয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাঁপুনি, ঘাম, মাথাব্যথা, এবং শরীর ব্যথা। গুরুতর অবস্থায় রক্তস্বল্পতা ও অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
• বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ২০ কোটিরও বেশি মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং লাখো মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। বাংলাদেশেও বর্ষাকালে এই রোগের প্রকোপ দেখা যায়, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে।
• ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ব্যবহৃত প্রধান ওষুধ হলো কুইনাইন (Quinine), ক্লোরোকুইন (Chloroquine), এবং বর্তমানে আর্টেমিসিনিন (Artemisinin)-ভিত্তিক ওষুধসমূহ। তবে এসব ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করতে হয়।
• এনোফিলিস মশার দমন করতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, জমে থাকা পানির অপসারণ, এবং ইনসেক্টিসাইড-যুক্ত মশারি ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশা হলো এনোফিলিস, যা মানুষের শরীরে প্লাজমোডিয়াম প্রবেশ করিয়ে এই মারাত্মক রোগের সৃষ্টি করে। তাই সচেতনতা, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও চিকিৎসার সমন্বয়েই এই রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
0
Updated: 6 hours ago
Penicillin কে আবিস্কার করেন?
Created: 1 day ago
A
Robert Brown
B
Alexander Fleming
C
Robert Kotch
D
Joseph Lister
পেনিসিলিন হলো বিশ্বের প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছিল। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট নানা সংক্রমণ একসময় মানুষের জীবনের জন্য হুমকি ছিল। কিন্তু পেনিসিলিন আবিষ্কারের মাধ্যমে মানবসভ্যতা পেল এক শক্তিশালী অস্ত্র, যা অগণিত প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়। এই ওষুধটি আবিষ্কার করেন Alexander Fleming, যিনি ছিলেন একজন স্কটিশ ব্যাকটেরিওলজিস্ট।
• Alexander Fleming ১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনের সেন্ট মেরি’স হাসপাতালে তাঁর গবেষণাগারে কাজ করছিলেন। সেসময় তিনি স্ট্যাফাইলোকক্কাস নামের ব্যাকটেরিয়া নিয়ে গবেষণা করছিলেন। হঠাৎ একদিন তিনি লক্ষ্য করেন, তাঁর এক পরীক্ষার পাত্রে নীল-সবুজ রঙের এক ধরনের ছত্রাক জন্মেছে, যার চারপাশের ব্যাকটেরিয়াগুলো মরে যাচ্ছে।
• এই ছত্রাকটির নাম ছিল Penicillium notatum, যা থেকেই উৎপন্ন পদার্থটি ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করছিল। এখান থেকেই Fleming বুঝতে পারেন, ছত্রাকটি এমন একটি পদার্থ উৎপন্ন করে যা ক্ষতিকর জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম।
• Fleming সেই পদার্থটির নাম দেন Penicillin, যা “Penicillium” ছত্রাকের নাম থেকে নেওয়া হয়।
• ১৯২৯ সালে Fleming তাঁর গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেন। যদিও প্রথমদিকে এর ব্যবহার সীমিত ছিল, কারণ সে সময় প্রযুক্তিগতভাবে বিশুদ্ধ পেনিসিলিন তৈরি করা কঠিন ছিল।
• পরবর্তীতে Howard Florey এবং Ernst Boris Chain ১৯৪০-এর দশকে Fleming-এর আবিষ্কারকে আরও উন্নত করেন এবং পেনিসিলিনকে বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনযোগ্য করেন।
• দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পেনিসিলিন হাজারো সৈনিকের জীবন রক্ষা করে, বিশেষ করে ক্ষত বা সংক্রমণজনিত রোগে।
• এই অবদানের জন্য Fleming, Florey, ও Chain ১৯৪৫ সালে যৌথভাবে Nobel Prize in Physiology or Medicine লাভ করেন।
• পেনিসিলিন ব্যাকটেরিয়ার কোষপ্রাচীর ধ্বংস করে কাজ করে, ফলে ব্যাকটেরিয়াগুলো মারা যায়। এটি মানুষের কোষকে ক্ষতি করে না, যা একে নিরাপদ ও কার্যকর করে তোলে।
• আজও পেনিসিলিন ও এর বিভিন্ন রূপ চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন অ্যামোক্সিসিলিন ও অ্যাম্পিসিলিন, যা নানা ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
• Fleming-এর এই আবিষ্কার আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক বিশাল মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর অবদানের ফলে মানবজাতি প্রথমবারের মতো সংক্রমণকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
সুতরাং, পেনিসিলিনের আবিষ্কারক হলেন Alexander Fleming, যিনি ২০শ শতাব্দীর চিকিৎসা বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদানকারী হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
0
Updated: 1 day ago
সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশের প্রাপ্য ব্রান্ডউইথ -
Created: 1 week ago
A
10 Gigabites/sec
B
100 Megabites/sec
C
200 Megabites/sec
D
200 Gigabites/sec
বাংলাদেশের সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্র্যান্ডউইথ পাওয়ার ক্ষমতা বর্তমানে ২০০ গিগাবাইট/সেকেন্ড (Gigabits/sec)। সাবমেরিন ক্যাবল হলো পৃথিবীজুড়ে সমুদ্র তলদেশে স্থাপন করা অত্যন্ত উচ্চগতির ক্যাবল যা বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্রুত ডেটা আদান-প্রদান নিশ্চিত করে। বাংলাদেশের জন্য এই ব্র্যান্ডউইথ বর্তমানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে দেশের ইন্টারনেট গতি এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ অনেক দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য হয়েছে।
বাংলাদেশে অনেক আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবল লিঙ্ক রয়েছে, যেমন SEA-ME-WE (Southeast Asia-Middle East-Western Europe) সিরিজের ক্যাবল, যা বাংলাদেশকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-এশিয়া অঞ্চলের সাথে সংযুক্ত করে। এসব ক্যাবল একসাথে দেশের আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্র্যান্ডউইথ সরবরাহ করে, যার পরিমাণ বর্তমানে ২০০ গিগাবাইট/সেকেন্ড পৌঁছেছে।
এই ক্যাবলগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইন্টারনেট সংযোগে উচ্চগতি ও স্থিতিশীলতা এসেছে। সাবমেরিন ক্যাবল বাংলাদেশে ইন্টারনেটের অভ্যন্তরীণ ব্যবহার এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়ক হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেটের গতি ও প্রাপ্যতা বাড়ানো, উদ্ভাবনী প্রযুক্তির বিস্তার এবং গ্লোবাল যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এই সাবমেরিন ক্যাবল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
মুখ্য পয়েন্টসমূহ:
-
সাবমেরিন ক্যাবল আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করে।
-
বাংলাদেশের জন্য এই ক্যাবল বর্তমানে ২০০ গিগাবাইট/সেকেন্ড ব্র্যান্ডউইথ সরবরাহ করে।
-
এই ব্র্যান্ডউইথ দেশের প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট পরিষেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
-
সাবমেরিন ক্যাবল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গতি ও যোগাযোগের উন্নতির ক্ষেত্রে সহায়ক।
0
Updated: 1 week ago