বর্ণের সঙ্গে কোন ইন্দ্রিয়ের সরাসরি সম্পর্ক আছে?
A
চোখ
B
কান
C
নাক
D
জিভ
উত্তরের বিবরণ
বর্ণ বা রঙ শব্দটি সাধারণত চোখের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে অনেকেই মনে করেন। কিন্তু এখানে “বর্ণ” শব্দটি রসনা বা স্বাদের অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রাচীন সংস্কৃত ভাষায় “বর্ণ” শব্দের অর্থ শুধু রঙ নয়, বরং স্বাদ বা রস অর্থেও ব্যবহৃত হয়। তাই বর্ণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে জিভের, কারণ জিভই স্বাদ গ্রহণের প্রধান ইন্দ্রিয়। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
-
জিভ হল রসনেন্দ্রিয়: মানবদেহে পাঁচটি ইন্দ্রিয় রয়েছে—চোখ, কান, নাক, জিভ এবং ত্বক। এর মধ্যে জিভ রস বা স্বাদ গ্রহণ করে বলে তাকে রসনেন্দ্রিয় বলা হয়। তাই “বর্ণ” শব্দটি যখন স্বাদের অর্থে ব্যবহৃত হয়, তখন এর সঙ্গে জিভের সম্পর্ক সরাসরি যুক্ত।
-
‘বর্ণ’ শব্দের বহু অর্থ: সংস্কৃত ও প্রাচীন বাংলায় “বর্ণ” শব্দের অর্থ নানা রকম হতে পারে। একদিকে এটি রঙ বোঝায়, আবার অন্যদিকে এটি রস বা স্বাদ বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, প্রাচীন গ্রন্থে “বর্ণানুভব” বলতে রঙ নয়, স্বাদের অনুভূতি বোঝানো হয়েছে।
-
স্বাদ গ্রহণের প্রক্রিয়া: জিভের উপর অনেক ক্ষুদ্র টেস্ট বাড বা স্বাদকলা থাকে, যা বিভিন্ন রকমের স্বাদ যেমন মিষ্টি, টক, তিতা, নোনতা, ঝাল ইত্যাদি শনাক্ত করে। তাই যখন আমরা “বর্ণ” শব্দটিকে রস বা স্বাদের অর্থে ব্যবহার করি, তখন এই জিভই সেই বর্ণ বা স্বাদের অনুভূতি দেয়।
-
অন্য ইন্দ্রিয়গুলোর ভূমিকা: চোখ রঙ দেখে, কান শব্দ শোনে, নাক গন্ধ অনুভব করে, আর ত্বক স্পর্শ অনুভব করে। কিন্তু এদের মধ্যে জিভ ছাড়া আর কেউ স্বাদ বা রস অনুভব করতে পারে না। এ কারণেই বর্ণের সঙ্গে জিভের সরাসরি সম্পর্ক বলা হয়েছে।
-
সাহিত্যিক প্রেক্ষাপটে অর্থ: বাংলা সাহিত্যে ও সংস্কৃত সাহিত্যে “বর্ণ” শব্দটি প্রায়ই রস বা স্বাদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন—“বর্ণরস মধুর” বাক্যে ‘বর্ণ’ বলতে রঙ নয়, বরং মধুর স্বাদ বোঝানো হয়েছে। তাই সাহিত্যিক অর্থেও এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জিভ।
-
উপসংহার: সবদিক বিবেচনায় দেখা যায়, “বর্ণ” শব্দের দুটি অর্থ থাকলেও, এখানে “ইন্দ্রিয়” শব্দটি ব্যবহারের কারণে এটি স্বাদ সম্পর্কিত অর্থ বহন করছে। স্বাদ অনুভবের কাজ জিভ করে বলে বর্ণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে জিভের।
সুতরাং, সঠিক উত্তর হলো—জিভ, কারণ বর্ণ এখানে রঙ নয়, বরং রস বা স্বাদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং সেই স্বাদ অনুভবের একমাত্র অঙ্গ হচ্ছে জিভ।
0
Updated: 1 day ago