পানিতে কোন ভিটামিন দ্রবণীয়?
A
A ও D
B
E ও K
C
B ও C
D
A ও C
উত্তরের বিবরণ
মানবদেহের জন্য ভিটামিন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ভিটামিন সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত — চর্বিতে দ্রবণীয় ও পানিতে দ্রবণীয়। পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন দেহে সঞ্চিত থাকে না, অতিরিক্ত অংশ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। এই কারণেই প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে এই ভিটামিনগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা প্রয়োজন।
মূল তথ্যগুলো নিম্নরূপ—
-
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন হলো ভিটামিন B কমপ্লেক্স ও ভিটামিন C।
এরা পানিতে সহজেই দ্রবীভূত হয় এবং শরীরের টিস্যুতে সীমিত সময়ের জন্য থাকে। -
ভিটামিন B কমপ্লেক্স আসলে একদল ভিটামিনের সমষ্টি। এর মধ্যে আছে—
B₁ (Thiamine), B₂ (Riboflavin), B₃ (Niacin), B₅ (Pantothenic acid), B₆ (Pyridoxine), B₇ (Biotin), B₉ (Folic acid) এবং B₁₂ (Cobalamin)।
এরা শরীরে শক্তি উৎপাদন, স্নায়ুতন্ত্রের কার্যক্রম ও রক্তকণিকা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। -
ভিটামিন C (Ascorbic acid) দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, ত্বক ও মাড়ির সুস্থতা রক্ষা করে এবং ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। এছাড়া এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, ফলে কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
-
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের প্রধান উৎস:
-
ভিটামিন B কমপ্লেক্স পাওয়া যায়— দুধ, ডিম, শস্যদানা, ডাল, মাংস, মাছ ও শাকসবজিতে।
-
ভিটামিন C পাওয়া যায়— লেবু, আমলকি, কমলা, পেয়ারা, টমেটো, কাঁচা মরিচ ও অন্যান্য টক ফলে।
-
-
অভাবজনিত রোগ:
-
ভিটামিন B₁-এর অভাবে হয় বেরিবেরি রোগ।
-
ভিটামিন B₂-এর অভাবে হয় চোখ ও ত্বকের সমস্যা।
-
ভিটামিন B₃-এর অভাবে হয় পেল্লাগ্রা।
-
ভিটামিন B₉ বা ফোলিক অ্যাসিডের অভাবে হয় অ্যানিমিয়া (রক্তস্বল্পতা)।
-
ভিটামিন C-এর অভাবে হয় স্কার্ভি (মাড়ি ফুলে রক্ত পড়া)।
-
-
বৈশিষ্ট্য:
-
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন তাপে সংবেদনশীল, অর্থাৎ রান্নার সময় সহজেই নষ্ট হয়।
-
এরা দেহে সঞ্চিত থাকে না, তাই প্রতিদিন খাবারের মাধ্যমে পূরণ করতে হয়।
-
অতিরিক্ত গ্রহণের পরিমাণ সাধারণত প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়, তাই বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা কম।
-
-
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিনের বিপরীতে পার্থক্য:
-
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (A, D, E, K) দেহে সঞ্চিত থাকে, কিন্তু পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন থাকে না।
-
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন শোষণের জন্য চর্বি প্রয়োজন, কিন্তু পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন সহজেই পানিতে মিশে যায়।
-
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ভিটামিন B ও C হলো পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন, যা দেহের শক্তি উৎপাদন, রোগ প্রতিরোধ ও কোষের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি, ফলমূল ও পুষ্টিকর খাদ্য অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
0
Updated: 1 day ago
রাতকানা রোগ সাধারণত কোন ভিটামিনের অভাবে হয়ে থাকে?
Created: 1 month ago
A
ভিটামিন এ
B
ভিটামিন বি
C
ভিটামিন সি
D
ভিটামিন কে
রাতকানা (Night Blindness):
-
কারণ: ভিটামিন ‘এ’ এর ঘাটতি।
-
ভিটামিন ‘এ’ অভাবে চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জেরোফথ্যালমিয়া (Xerophthalmia) রোগের বিভিন্ন মাত্রা দেখা দেয়।
-
এই রোগ সাধারণত দুই থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
-
-
লক্ষণ:
-
চোখের সংবেদী ‘রড’ কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ফলে স্বল্প আলোতে দেখতে সমস্যা হয়।
-
চোখে সবকিছু ঝাপসা দেখা যায়।
-
রোগ বেড়ে গেলে কর্নিয়া ঘোলাটে হয়ে যায়।
-
-
জেরোফথ্যালমিয়ার মাত্রা:
-
সাত থেকে আটটি মাত্রা রয়েছে।
-
সর্বনিম্ন মাত্রা হলো রাতকানা।
-
প্রথম কয়েকটি মাত্রায় ভিটামিন ‘এ’ ও কিছু ওষুধ প্রয়োগে রোগ ভালো হয়।
-
চূড়ান্ত পর্যায়ে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন অস্ত্রোপচার ছাড়া আর তেমন কার্যকর সমাধান থাকে না।
-
-
প্রতিরোধ:
-
ভিটামিন ‘এ’-সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
-
যেমন: মাছের যকৃতের তেল, কলিজা, সবুজ শাকসবজি, রঙিন ফল (পাকা আম, কলা), সবজি (মিষ্টি কুমড়া, গাজর) এবং মলা-ঢেলা মাছ।
-
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি।
0
Updated: 1 month ago
নিচের কোন উপাদান দেহে রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে?
Created: 1 month ago
A
স্নেহ
B
পানি
C
ভিটামিন
D
খনিজ লবণ
খাদ্য উপাদান:
-
খাদ্য অনেকগুলো রাসায়নিক বস্তুর সমন্বয়ে গঠিত, এবং এই রাসায়নিক বস্তুগুলোকে খাদ্য উপাদান বলা হয়।
-
এই উপাদানগুলোর মধ্যে পুষ্টি থাকে, তাই খাদ্য উপাদানকে পুষ্টি উপাদানও বলা হয়।
-
উপাদান অনুযায়ী খাদ্যবস্তুকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়:
১। আমিষ: দেহের বৃদ্ধি সাধন ও ক্ষয়পূরণ করে।
২। শর্করা: দেহে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
৩। স্নেহ: বা চর্বিজাতীয় খাদ্য দেহে তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে। -
এছাড়া আরও তিন ধরনের উপাদান দেহের জন্য প্রয়োজন:
৪। ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ: দেহে রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায় এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উদ্দীপনা যোগায়।
৫। খনিজ লবণ: দেহের বিভিন্ন জৈবিক কাজে অংশ নেয়।
৬। পানি: দেহে পানি ও তাপের সমতা রক্ষা করে, কোষের কার্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষ ও তার অঙ্গাণুগুলোকে ধারণ করে।
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি।
0
Updated: 1 month ago
সবুজ শাক-সবজিতে কোনটি বেশি থাকে?
Created: 1 day ago
A
Vitamin A
B
Vitamin C
C
Vitamin B
D
Vitamin K
সবুজ শাকসবজি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী খাদ্য উপাদান। এতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে সবুজ শাকসবজিতে সবচেয়ে বেশি থাকে Vitamin A, যা চোখ, ত্বক ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
• Vitamin A চোখের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। বিশেষ করে রাতকানা প্রতিরোধে এটি অত্যন্ত কার্যকর। এটি “রেটিনল” নামক এক গুরুত্বপূর্ণ যৌগে পরিণত হয় যা চোখের রেটিনায় কাজ করে।
• সবুজ শাক যেমন পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, পুঁই শাক ইত্যাদিতে প্রচুর বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা শরীরে গিয়ে Vitamin A-তে রূপান্তরিত হয়।
• Vitamin A ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ফলে এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
• এই ভিটামিন হাড় ও দাঁতের গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, কারণ এটি ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে।
• শিশুর বৃদ্ধি ও কোষ বিভাজনের জন্যও Vitamin A অপরিহার্য। তাই শিশুদের খাদ্যতালিকায় নিয়মিত শাকসবজি থাকা উচিত।
• শাকসবজির মধ্যে পালং শাক Vitamin A-এর অন্যতম সেরা উৎস। ১০০ গ্রাম পালং শাকে প্রায় ৯,০০০ IU পর্যন্ত Vitamin A পাওয়া যায়।
• এছাড়া লালশাক, লাল মরিচ, মিষ্টি আলু, গাজর প্রভৃতিতেও বিটা-ক্যারোটিন বেশি থাকায় শরীর Vitamin A পায়।
• Vitamin A-এর অভাবে চোখের শুষ্কতা, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া, ত্বকের শুষ্কতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।
• প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অল্প পরিমাণে শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরে প্রয়োজনীয় Vitamin A-এর ঘাটতি পূরণ হয়।
• ভিটামিন A একটি ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন, অর্থাৎ এটি চর্বির সঙ্গে দ্রবীভূত হয়। তাই শাকসবজি রান্নার সময় সামান্য তেল ব্যবহার করলে Vitamin A ভালোভাবে শরীরে শোষিত হয়।
সবুজ শাকসবজি শুধু Vitamin A নয়, অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজেও সমৃদ্ধ। তবে চোখের সুরক্ষা, ত্বকের সুস্থতা ও রোগ প্রতিরোধে Vitamin A-এর অবদান সবচেয়ে বেশি, তাই সঠিকভাবে রান্না ও নিয়মিত গ্রহণই সুস্থ জীবনের নিশ্চয়তা দেয়।
0
Updated: 1 day ago