‘মজলুম’ শব্দের অর্থ কী?
A
স্বাধীন
B
অত্যাচারিত
C
পরিশ্রমী
D
সম্মানিত
উত্তরের বিবরণ
‘মজলুম’ শব্দটি আরবি ভাষা থেকে এসেছে। এটি এমন একজন ব্যক্তিকে বোঝায়, যিনি অন্যের দ্বারা অত্যাচার, অবিচার বা নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। বাংলায় শব্দটি সাধারণত অত্যাচারিত, নির্যাতিত বা বঞ্চিত ব্যক্তি বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। নিচে শব্দটির বিস্তারিত অর্থ, ব্যবহার ও প্রাসঙ্গিক তথ্য দেওয়া হলো—
-
উৎপত্তি:
‘মজলুম’ শব্দটি এসেছে আরবি মূল শব্দ ‘জুলম’ (ظلم) থেকে, যার অর্থ হলো ‘অত্যাচার করা’ বা ‘অন্যায় করা’। ‘জুলুম’ থেকে ‘মজলুম’ তৈরি হয়েছে, যার অর্থ দাঁড়ায় ‘যার উপর জুলুম করা হয়েছে’। অর্থাৎ, এটি কর্মবাচ্য রূপে ব্যবহৃত একটি শব্দ। -
অর্থ ও ব্যাখ্যা:
মজলুম অর্থ অত্যাচারিত, নির্যাতিত, বঞ্চিত বা অবিচারগ্রস্ত ব্যক্তি। এমন কেউ যিনি সমাজ, রাষ্ট্র, ব্যক্তি বা কোনো শক্তিশালী গোষ্ঠীর দ্বারা কষ্ট পেয়েছেন বা অধিকার হারিয়েছেন। -
ব্যবহারিক উদাহরণ:
যেমন বলা যায়, “মজলুম মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।” এখানে “মজলুম” মানে হলো সেই মানুষ, যিনি কোনো অন্যায় বা জুলুমের শিকার। -
ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ:
ইসলাম ধর্মে “মজলুম” শব্দটির বিশেষ তাৎপর্য আছে। ইসলামী শিক্ষায় বলা হয়েছে, মজলুমের দোয়া আল্লাহ্র কাছে সরাসরি পৌঁছে যায়, কারণ সে অন্যায়ের শিকার। এজন্য মজলুমের প্রতি সহানুভূতি দেখানো ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে গণ্য। -
বাংলা ভাষায় ব্যবহার:
বাংলা সাহিত্যে ও বক্তৃতায় “মজলুম” শব্দটি সাধারণত সমাজে নিপীড়িত ও দুর্বল শ্রেণির মানুষ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যেমন—
“মজলুম জাতির কণ্ঠরোধ করা যায় না।”
“তিনি ছিলেন মজলুম মানুষের নেতা।” -
সমার্থক শব্দ:
নির্যাতিত, অত্যাচারিত, বঞ্চিত, নিপীড়িত, অবিচারগ্রস্ত। -
বিপরীত শব্দ:
জালেম (অত্যাচারকারী), শক্তিশালী, প্রভাবশালী। -
সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার:
বাংলাদেশের ইতিহাসে “মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানী” উপাধি অত্যন্ত পরিচিত। এখানে “মজলুম জননেতা” অর্থ সেই নেতা, যিনি অত্যাচারিত মানুষের নেতা ছিলেন এবং তাদের অধিকার রক্ষায় সংগ্রাম করেছেন। -
ভাষাগত দিক থেকে বিশ্লেষণ:
শব্দটি আরবি “مظلوم” (মাজলুম) থেকে বাংলায় এসেছে। উচ্চারণগত পরিবর্তনে “মাজলুম” → “মজলুম” হয়েছে। এটি একটি বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত হলেও প্রায়ই বিশেষ্যরূপে মানুষ বা গোষ্ঠী বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। -
উদাহরণ বাক্য:
“মজলুমরা চিরকাল ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ায়।”
“তিনি সমাজের মজলুম মানুষের পাশে ছিলেন।”
সুতরাং, ‘মজলুম’ অর্থ অত্যাচারিত বা নির্যাতিত ব্যক্তি, যিনি অন্যায়ের শিকার হয়েছেন এবং যার পাশে দাঁড়ানো মানবিক কর্তব্য। এই শব্দটি শুধু ভাষাগত অর্থেই নয়, সামাজিক ও নৈতিক প্রেক্ষাপটেও গভীর তাৎপর্য বহন করে।
0
Updated: 1 day ago
‘কপোল’ শব্দের অর্থ কোনটি?
Created: 1 day ago
A
কপাল
B
চোখ
C
গাল
D
ঠোঁট
‘কপোল’ শব্দটি বাংলা ভাষার একটি প্রাচীন ও প্রচলিত শব্দ, যার অর্থ ‘গাল’। এই শব্দটি মূলত মুখমণ্ডলের একটি অঙ্গকে নির্দেশ করে এবং সাহিত্য, কবিতা ও দৈনন্দিন জীবনে সৌন্দর্য বা আবেগ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। নিচে এই শব্দটির অর্থ, ব্যবহার ও উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হলো।
-
শব্দের উৎস: ‘কপোল’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। সংস্কৃত ‘কপোল’ শব্দের অর্থও গাল বা মুখের পার্শ্বভাগ। বাংলা ভাষায় এটি অপরিবর্তিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
-
অর্থের বিশ্লেষণ: কপোল মানে হলো মানুষের মুখের দুই পার্শ্বে অবস্থিত নরম অংশ, যা সাধারণভাবে ‘গাল’ নামে পরিচিত। এটি সৌন্দর্যের একটি প্রধান অঙ্গ হিসেবে ধরা হয়।
-
সাহিত্যিক ব্যবহার: বাংলা সাহিত্য ও কবিতায় ‘কপোল’ শব্দটি বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন— “লজ্জায় রাঙা কপোল”, “চাঁদের মতো কপোল”, “অশ্রুসিক্ত কপোল” ইত্যাদি বাক্যে এটি আবেগ, সৌন্দর্য বা লজ্জার প্রকাশে ব্যবহৃত হয়।
-
রূপক অর্থে ব্যবহার: কখনো কখনো ‘কপোল’ শব্দটি রূপকভাবে ব্যবহার করা হয় আবেগ বা অনুভূতির প্রতীক হিসেবে। উদাহরণস্বরূপ, লজ্জা পেলে বা রাগ হলে কারও কপোল লাল হয়ে ওঠে— এটি শরীরের প্রতিক্রিয়াকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
-
সমার্থক শব্দ: গাল, মুখের পাশ, মুখমণ্ডল প্রভৃতি শব্দকে ‘কপোল’-এর সমার্থক বলা যায়। তবে ‘গাল’ সবচেয়ে প্রচলিত অর্থ।
-
বিপরীত অর্থ: এই শব্দের সরাসরি বিপরীত অর্থ নেই, কারণ এটি দেহের একটি নির্দিষ্ট অংশ বোঝায়।
-
শব্দরূপ ও উচ্চারণ: কপোল (উচ্চারণ: ক-পো-ল) – তিন অক্ষরের এই শব্দটি তৃতীয় বর্ণে স্পষ্ট ধ্বনি সৃষ্টি করে, যা কাব্যিক ছন্দে বিশেষ সুর যোগ করে।
-
ব্যাকরণগত শ্রেণি: এটি একটি বিশেষ্য পদ, যা কোনো বস্তুর নাম বা অঙ্গনির্দেশ বোঝায়।
-
সাহিত্যিক উদাহরণ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতায় যেমন পাওয়া যায়— “লজ্জায় রাঙা হলো কপোল, হাসিতে ফুটল আলোর দোলা।” এখানে ‘কপোল’ শব্দটি লজ্জা ও সৌন্দর্যের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত।
-
চিত্রকল্পে গুরুত্ব: চিত্রকলা ও কবিতায় ‘কপোল’ শব্দটি নান্দনিক সৌন্দর্য প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। যেমন, চিত্রে বা বর্ণনায় কোনো চরিত্রের কপোলে আলোর ছায়া ফেলার মাধ্যমে আবেগের গভীরতা বোঝানো হয়।
সুতরাং, ‘কপোল’ শব্দের প্রকৃত ও প্রচলিত অর্থ গাল। এটি বাংলা ভাষার একটি শুদ্ধ, রুচিশীল ও কাব্যময় শব্দ, যা মুখমণ্ডলের সৌন্দর্য, আবেগ ও অভিব্যক্তি প্রকাশে বহুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
0
Updated: 1 day ago
‘উপেক্ষা’ শব্দের অর্থ কী?
Created: 5 days ago
A
সম্মান করা
B
অবহেলা করা
C
শ্রদ্ধা করা
D
প্রশংসা করা
‘উপেক্ষা’ শব্দটি বাংলা ভাষায় এমন একটি শব্দ, যা সাধারণত কাউকে বা কোনো বিষয়কে অগ্রাহ্য করা, গুরুত্ব না দেওয়া বা অবহেলা করার অর্থে ব্যবহৃত হয়। এটি মানুষের আচরণ, মানসিক অবস্থা বা সামাজিক সম্পর্ক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। শব্দটি প্রাচীন বাংলা ‘উপ’ ও ‘ইক্ষা’ ধাতু থেকে গঠিত, যার মূল ভাবার্থ “দেখেও না দেখা” বা “মনোযোগ না দেওয়া”।
তথ্যসমূহ:
-
শব্দের উৎপত্তি: ‘উপেক্ষা’ এসেছে সংস্কৃত শব্দ উপেক্ষা (Upekṣā) থেকে। এখানে উপ মানে ‘নিকট’ এবং ইক্ষা মানে ‘দেখা’। একত্রে এর অর্থ দাঁড়ায় “দেখেও না দেখা” বা “গুরুত্ব না দেওয়া”।
-
অর্থ: সাধারণভাবে ‘উপেক্ষা’ মানে অবহেলা করা, অগ্রাহ্য করা, বা গুরুত্ব না দেওয়া।
-
বিপরীত শব্দ: ‘সম্মান’, ‘মনোযোগ’, ‘গুরুত্ব প্রদান’।
-
সমার্থক শব্দ: ‘অবজ্ঞা’, ‘অবহেলা’, ‘অগ্রাহ্য’, ‘অমনোযোগ’।
-
ব্যবহার:
-
সে আমার কথা উপেক্ষা করল।
-
গুরুজনদের উপেক্ষা করা উচিত নয়।
-
-
মনস্তাত্ত্বিক দিক: উপেক্ষা প্রায়ই মানসিক কষ্ট বা বিরক্তির কারণ হয়। কেউ যদি বারবার উপেক্ষিত হয়, তবে সে নিজেকে অমূল্য মনে করতে পারে। তাই ব্যক্তিগত সম্পর্ক বজায় রাখতে উপেক্ষা না করে পরস্পরের অনুভূতি বুঝে চলা জরুরি।
-
সামাজিক প্রভাব: সমাজে যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে উপেক্ষা করা হয়, তবে তারা ধীরে ধীরে মূলধারার বাইরে চলে যায়। এটি সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে।
-
ধর্মীয় ও নৈতিক দৃষ্টিতে: ধর্মীয়ভাবে উপেক্ষা করা অনেক সময় অন্যায় হিসেবে ধরা হয়। ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মে মানুষকে সম্মান ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
-
সাহিত্যিক ব্যবহার: কবি ও সাহিত্যিকরা প্রায়ই ‘উপেক্ষা’ শব্দটি মানসিক বেদনা বা সম্পর্কের অবহেলা বোঝাতে ব্যবহার করেন। যেমন—“তোমার উপেক্ষায় হৃদয় ভেঙে গেছে”।
-
দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োগ: স্কুলে শিক্ষক, অফিসে কর্মচারী বা বন্ধুত্বের সম্পর্ক—সব ক্ষেত্রেই উপেক্ষা করলে সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়ে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘উপেক্ষা’ মানে কোনো ব্যক্তি বা বিষয়ে সচেতনভাবে গুরুত্ব না দেওয়া বা অবহেলা করা। এই আচরণ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও মানসিক সব দিক থেকেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই জীবন ও সম্পর্ক রক্ষায় উপেক্ষার পরিবর্তে সহমর্মিতা ও মনোযোগ প্রদর্শন করা শ্রেয়।
0
Updated: 5 days ago
অর্বাচীন শব্দের অর্থ কি?
Created: 6 days ago
A
বিদ্বান
B
শিক্ষিত
C
মূর্খ
D
বিজ্ঞ
‘অর্বাচীন’ শব্দটি বাংলা ভাষায় একটি নেতিবাচক অর্থ বহন করে, যার অর্থ মূর্খ বা অশিক্ষিত ব্যক্তি। সাধারণত, এটি এমন একজন ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয় যে জ্ঞান বা বুদ্ধিতে সীমিত, অথবা যিনি কোনো বিষয় বা কাজের ব্যাপারে অভিজ্ঞ নন।
এই শব্দটি সাধারণত তাচ্ছিল্য বা আক্ষেপের সঙ্গে ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে এমন কাউকে বর্ণনা করতে যিনি সঠিকভাবে কিছু জানেন না বা কোন বিষয়ে দক্ষ নন।
এছাড়া, ‘অর্বাচীন’ শব্দটি মানুষ বা তার আচরণকে তুচ্ছ করা বা ত্রুটিপূর্ণ মনে করা যেতে পারে।
মূল তথ্যের সংক্ষেপে:
-
অর্বাচীন শব্দের অর্থ মূর্খ।
-
এটি সাধারণত জ্ঞানহীন বা অভিজ্ঞতার অভাব থাকা ব্যক্তিকে বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
-
এটি একটি নেতিবাচক শব্দ, যা কাউকে তাচ্ছিল্য করতে ব্যবহার করা হয়।
এই শব্দটি বাংলা সাহিত্যে বিশেষত উপন্যাস, কবিতা, অথবা প্রবন্ধে এক ধরনের তিক্ততা বা বিরোধ প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
0
Updated: 6 days ago