শব্দের উৎপত্তির কারণ?
A
শব্দ তরঙ্গ
B
প্রতিধ্বনি
C
বস্তুর কম্পন
D
বস্তুর তাপমাত্রা
উত্তরের বিবরণ
শব্দ মূলত কোনো বস্তু কম্পিত হওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়। যখন কোনো বস্তু দোলায়মান বা কম্পিত হয়, তখন এটি চারপাশের বায়ুমণ্ডলে তরঙ্গের আকারে শক্তি প্রেরণ করে, যা আমরা শব্দ হিসেবে অনুভব করি। শব্দ নিজে কোনো পদার্থ নয়, বরং কম্পনের ফলে গঠিত কম্পন তরঙ্গ।
শব্দের উৎপত্তির মূল কারণ হলো কোনো বস্তুতে দ্রুত ও নিয়মিত কম্পন। উদাহরণস্বরূপ, বেল বা ঘড়ির ঘণ্টা ধাক্কা খেলে তার দোলন চারপাশের বায়ুকে কম্পিত করে। এই কম্পন বায়ুর কণাগুলোর মাধ্যমে একটি তরঙ্গ সৃষ্টি করে, যা আমাদের কানে পৌঁছালে আমরা শব্দ শোনি। বাণিজ্যিক বা যান্ত্রিক যন্ত্র, বাদ্যযন্ত্র, এমনকি মানুষের কণ্ঠও কম্পনের মাধ্যমে শব্দ উৎপন্ন করে।
শব্দের কম্পন বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে ফ্রিকোয়েন্সি এবং আম্প্লিটিউড বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ফ্রিকোয়েন্সি নির্ধারণ করে শব্দের উচ্চতা বা পিচ, আর আম্প্লিটিউড নির্ধারণ করে শব্দের তীব্রতা বা লাউডনেস। যে বস্তু দ্রুত কম্পিত হয়, তার উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সি থাকে এবং এটি উঁচু সুরের শব্দ দেয়। অন্যদিকে বড় বা ধীর কম্পিত বস্তুর কম্পন থেকে গভীর বা নিচু সুরের শব্দ উৎপন্ন হয়।
অন্যান্য বিকল্পগুলো শব্দের উৎপত্তির জন্য সরাসরি দায়ী নয়। শব্দ তরঙ্গ হলো শব্দের মাধ্যম বা প্রক্রিয়া, কিন্তু এটি উৎপত্তির কারণ নয়। প্রতিধ্বনি হলো শব্দের প্রতিফলন, যা শব্দ ইতিমধ্যে তৈরি হওয়ার পর ঘটে। বস্তুর তাপমাত্রা শব্দ উৎপন্ন করতে পারে না; এটি কেবল বায়ুর ঘনত্ব ও তরঙ্গের গতিতে প্রভাব ফেলে।
সুতরাং, শব্দের উৎপত্তি মূলত ঘটে বস্তুর কম্পনের মাধ্যমে, যা বায়ু বা অন্য কোনো মাধ্যমের কণাগুলোকে কম্পিত করে এবং আমাদের কানে পৌঁছালে আমরা শব্দ শুনতে পাই। এই প্রক্রিয়া বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটি হলো কম্পন থেকে তরঙ্গের সৃষ্টি, যা শব্দকে জন্ম দেয় এবং পরিবহণ করে।
0
Updated: 1 day ago
'শূন্যপূরাণের' রচয়িতা -
Created: 1 week ago
A
রামাই পণ্ডিত
B
হলায়ূধ মিশ্র
C
কাহ্নপা
D
কুক্কুরীপা
'শূন্যপুরাণ' রামাই পণ্ডিত রচিত একটি বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বগ্রন্থ এবং এটি অন্ধকার যুগের একটি সাহিত্য নিদর্শন। এই গ্রন্থটি মূলত ধর্মপূজাপদ্ধতি সম্পর্কে লিখিত, যেখানে গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত একটি চম্পুকাব্য রচিত হয়েছে। 'শূন্যপুরাণ' ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রথম ৫টি অধ্যায় সৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করে। এটি ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত রচিত হতে পারে, তবে সঠিক সময়কাল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। শূন্যপুরাণ নামহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল, এবং বিশ্বকোষপ্রণেতা নাগেন্দ্রনাথ বসু ১৩১৪ বঙ্গাব্দে 'বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ' থেকে এটি নামকরণ করে প্রকাশ করেন।
'শূন্যপুরাণ' গ্রন্থের মধ্যে ‘নিরঞ্জনের রুষ্মা’ নামে একটি অংশ রয়েছে, যেখানে মুসলিম পীর-গাজী কর্তৃক ব্রাহ্মণদের অত্যাচারের হাত থেকে বৌদ্ধদের রক্ষা করার বিবরণ দেয়া হয়েছে। ভাষাগত বৈশিষ্ট্যের কারণে কিছু পণ্ডিত এই অংশকে পরবর্তীকালের রচনা বলে মনে করেন এবং তাঁদের মতে, এটি হিন্দু-মুসলিম ধর্মসমন্বয়ের চেতনা থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
তবে 'শূন্যপুরাণ' ছাড়া আরও কিছু লেখকও উল্লেখযোগ্য, যেমন হলায়ূধ মিশ্র, কাহ্নপা এবং কুক্কুরীপা। হলায়ূধ মিশ্র ছিলেন রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি এবং তিনি 'সেক শুভোদয়া' নামক একটি চম্পূকাব্য রচনা করেন, যা খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে রচিত হয়েছিল। কাহ্নপা, যিনি চর্যাপদের সর্বাধিক পদরচয়িতা, সহজিয়া তান্ত্রিক বৌদ্ধযোগী ছিলেন এবং তাঁর ১৩টি পদ রচনা করেন। কুক্কুরীপা, যিনি চর্যাপদের মহিলা কবি হিসেবে পরিচিত, তিনটি পদ রচনা করেন, তবে ৪৮নং পদটি খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এই তথ্যগুলো বাংলা সাহিত্য এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্ত্বের মূল্যবান অংশ হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 week ago
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি-
Created: 5 days ago
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
কাজী নজ্রুল ইসলাম
D
ফররুখ আহমেদ
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যিনি প্রথম বিদ্রোহী মনোভাব নিয়ে সাহিত্যকে নতুন ধারায় রূপ দিয়েছিলেন তিনি হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁর সাহিত্যকর্মে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, সমাজবিরোধী চিন্তা, ধর্মীয় কুসংস্কারের প্রতিবাদ এবং ইউরোপীয় ধ্যানধারণার প্রভাব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার সূচনা করেছিলেন, সেটি পরবর্তী প্রজন্মের সাহিত্যিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল।
তিনি তাঁর সাহিত্যজীবনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন যে সাহিত্য কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং চিন্তার বিপ্লব ঘটানোর এক শক্তিশালী অস্ত্র।
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) জন্মগ্রহণ করেন যশোর জেলার সাগরদাঁড়িতে। তিনি ছিলেন ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত প্রথমদিকের বাঙালিদের একজন, যিনি পশ্চিমা চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে সাহিত্য রচনায় যুক্ত হন।
-
তাঁর রচনাশৈলীতে বিদ্রোহ দেখা যায় ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার ও প্রথাবদ্ধ ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে। তিনি প্রচলিত সংস্কারকে ভাঙতে চেয়েছিলেন এবং সমাজে নতুন আলো জ্বালাতে সচেষ্ট ছিলেন।
-
বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের কৃতিত্ব তাঁর। এই ছন্দে লেখা ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে স্বীকৃত।
-
তাঁর কবিতায় মানবজীবনের দুঃখ, সংগ্রাম, প্রেম, অহংকার ও বিদ্রোহ—সবকিছুর মিলন ঘটেছে। বিশেষত, রাবণের চরিত্রকে তিনি এক বীরের প্রতীকে রূপ দিয়েছেন, যা বিদ্রোহী চিন্তারই প্রকাশ।
-
‘তিলোত্তমা সম্ভব’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’, ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’—এসব রচনায় সমাজ, ধর্ম ও নৈতিকতার প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে তাঁর চিন্তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
-
তিনি খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে সমাজের তীব্র বিরোধিতার শিকার হন, কিন্তু তাতেও তিনি নিজের আদর্শে অবিচল ছিলেন। এই সাহস ও আত্মবিশ্বাসই তাঁকে বিদ্রোহী কবির মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
-
তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে বাংলা ভাষা পেয়েছে এক নতুন রূপ, যেখানে ভাবের গভীরতা ও শব্দচয়নের সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশে গেছে।
-
মধুসূদন বাংলা নাটককেও আধুনিক রূপ দেন। তাঁর ‘শর্মিষ্ঠা’ ও ‘পদ্মাবতী’ নাটকে পাশ্চাত্য নাট্যরীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সুতরাং, মাইকেল মধুসূদন দত্তই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি, যিনি পুরনো সাহিত্যধারাকে ভেঙে নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তাঁর এই বিদ্রোহই পরবর্তীতে কাজী নজরুল ইসলামের মতো কবিদের পথ দেখিয়েছে।
0
Updated: 5 days ago
“আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে?” রাঘবে শব্দটি কোন কারকে কোন বিভক্তি-
Created: 1 week ago
A
কর্মে ২য়া
B
করণে ৭মী
C
অপাদানে ৫মী
D
অপাদানে ৭মী
বাক্যটি হলো — “আমি কি ডরাই সখি ভিখারী রাঘবে?”। এখানে আমাদের কাজ হলো ‘রাঘবে’ শব্দটি কোন কারকে (case) এবং কোন বিভক্তিতে (vibhakti) ব্যবহার হয়েছে তা নির্ণয় করা। সঠিক উত্তর হলো (ঘ) অপাদানে ৭মী।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
১. অপাদান কার ও ৭মী বিভক্তি:
-
অপাদান কার (Ablative case) হলো এমন কার যা কোনো ব্যক্তি বা বস্তু থেকে বিচ্যুতি বা উৎস নির্দেশ করে।
-
বাংলা ব্যাকরণে অপাদানকে সাধারণত ‘থেকে’, ‘দ্বারা’, ‘এর দ্বারা’ ইত্যাদি দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
-
৭মী বিভক্তি হলো ঐ শব্দের বিকৃত রূপ যা অপাদান কার নির্দেশ করে।
২. ‘রাঘবে’ বিশ্লেষণ:
-
শব্দটি হলো রাঘব + এ
-
এখানে ‘এ’ যোগ হয়েছে কোনো বস্তু বা ব্যক্তির মাধ্যমে বা দ্বারা নির্দেশ করার জন্য।
-
অর্থাৎ, ‘ভিখারী’ (ভিক্ষুক) রাঘবের মাধ্যমে বা রাঘব থেকে কিছু প্রাপ্ত হচ্ছে বোঝাচ্ছে।
-
তাই এটি অপাদানে ৭মী বিভক্তি।
৩. অন্যান্য বিকল্পের ভুল ব্যাখ্যা:
-
(ক) কর্মে ২য়া: কোনো ক্রিয়ার সরাসরি পদ বোঝায়, যেমন: রাম খেলো → ‘খেলো’ কর্মে।
-
(খ) করণে ৭মী: কোনো কাজের উপকরণ নির্দেশ করে, যেমন: লাঠি দিয়ে মারল → ‘লাঠি’ করণে।
-
(গ) অপাদানে ৫মী: ৫মী অপাদান ব্যবহৃত হয় কিছু নির্দিষ্ট অবস্থা বা মাধ্যমের ক্ষেত্রে, কিন্তু এখানে ৭মী প্রযোজ্য।
সারসংক্ষেপ:
-
বাক্যে ‘রাঘবে’ হলো কোন মাধ্যমে বা কার দ্বারা কিছু কার্য সম্পাদন হচ্ছে তা নির্দেশ করছে।
-
অতএব, এটি অপাদানে ৭মী বিভক্তি।
উপসংহার:
‘রাঘবে’ শব্দটি অপাদানে ৭মী বিভক্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে, তাই সঠিক উত্তর হলো (ঘ) অপাদানে ৭মী।
0
Updated: 1 week ago