রক্তের লোহিত কণিকার কাজ-
A
অক্সিজেন বহন করা
B
নাইট্রোজেন বহন করা
C
কার্বন-ডাই-অক্সাইড বহন করা
D
রোগ প্রতিরোধ করা
উত্তরের বিবরণ
মানবদেহে রক্তের লোহিত কণিকা বা রেড ব্লাড সেল (RBC) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলোই দেহের কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয় এবং কোষ থেকে উৎপন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইড ফুসফুসে ফিরিয়ে আনে। রক্তের লোহিত কণিকার মূল কাজ হলো অক্সিজেন বহন করা, যা জীবনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।
লোহিত কণিকার ভেতরে থাকে একটি বিশেষ রঞ্জক পদার্থ হিমোগ্লোবিন, যা লোহা-সমৃদ্ধ প্রোটিন। এই হিমোগ্লোবিনের কারণেই লোহিত কণিকা অক্সিজেন ধারণ করতে সক্ষম হয়। ফুসফুসে যখন বাতাস প্রবেশ করে, তখন হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে অক্সিহিমোগ্লোবিন তৈরি করে। এই যৌগটি রক্তনালীর মাধ্যমে শরীরের প্রতিটি কোষে পৌঁছে যায় এবং কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করে। কোষে অক্সিজেন ব্যবহৃত হওয়ার পর হিমোগ্লোবিন আবার কার্বন-ডাই-অক্সাইড বহন করে ফুসফুসে নিয়ে আসে, যেখানে তা নিঃশ্বাসের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।
লোহিত কণিকার গঠনও এর কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলো চক্রাকার এবং কেন্দ্রহীন, ফলে কোষের অভ্যন্তরে হিমোগ্লোবিনের জন্য বেশি স্থান থাকে। এর ফলে অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। মানুষের প্রতি ঘনমিলিমিটার রক্তে প্রায় ৪.৫ থেকে ৫.৫ মিলিয়ন লোহিত কণিকা থাকে, যা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য যথেষ্ট। এদের আয়ু প্রায় ১২০ দিন, এরপর এরা প্লীহা ও যকৃতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং নতুন কোষ তৈরি হয় অস্থিমজ্জা থেকে।
লোহিত কণিকার কার্যক্ষমতা নষ্ট হলে বা সংখ্যা কমে গেলে শরীরে রক্তাল্পতা (Anemia) দেখা দেয়। তখন হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যায়, ফলে শরীর পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এর ফলে দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা ও ত্বকের ফ্যাকাসে ভাব দেখা দেয়। তাই দেহে পর্যাপ্ত আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ফলিক অ্যাসিড থাকা জরুরি, কারণ এগুলো নতুন লোহিত কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, রোগ প্রতিরোধের কাজ লোহিত কণিকা নয়, বরং শ্বেত রক্তকণিকা (WBC) সম্পাদন করে। আবার কার্বন-ডাই-অক্সাইড বহনের কাজ আংশিকভাবে প্লাজমা ও হিমোগ্লোবিনের মাধ্যমে হয়, তবে সেটিই লোহিত কণিকার প্রধান কাজ নয়। নাইট্রোজেন সরাসরি রক্ত দ্বারা পরিবাহিত হয় না।
সুতরাং দেখা যায়, লোহিত কণিকার মূল ও প্রধান কাজ হলো অক্সিজেন বহন করা এবং তা শরীরের প্রতিটি কোষে পৌঁছে দেওয়া। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেহের কোষে জৈব-রাসায়নিক ক্রিয়া সংঘটিত হয়, যা জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য।
0
Updated: 1 day ago
কোন গ্রুপের রক্তের ব্যক্তিকে সর্বজনীন রক্তদাতা বলা হয়?
Created: 2 months ago
A
O গ্রুপ
B
A গ্রুপ
C
B গ্রুপ
D
AB গ্রুপ
রক্তের গ্রুপ (Blood Group):
মানুষের লোহিত রক্তকণিকায় A ও B নামক অ্যান্টিজেন থাকে এবং রক্তরসে a ও b নামক অ্যান্টিবডি থাকে।
অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতির ভিত্তিতে মানুষের রক্তকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা হয়, যা ব্লাড গ্রুপ নামে পরিচিত।
বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার 1901 সালে মানুষের রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করেছেন এবং চারটি গ্রুপের নামকরণ করেছেন: A, B, AB, O।
সাধারণত মানুষের রক্তের গ্রুপ আজীবন একই থাকে।
ব্লাড গ্রুপের বিবরণ:
গ্রুপ A:
লোহিত রক্তকণিকায় A অ্যান্টিজেন থাকে।
রক্তরসে অ্যান্টি-B অ্যান্টিবডি থাকে।
গ্রুপ B:
লোহিত রক্তকণিকায় B অ্যান্টিজেন থাকে।
রক্তরসে অ্যান্টি-A অ্যান্টিবডি থাকে।
গ্রুপ AB:
লোহিত রক্তকণিকায় A ও B অ্যান্টিজেন থাকে।
রক্তরসে কোনো অ্যান্টিবডি থাকে না।
গ্রুপ O:
লোহিত রক্তকণিকায় কোনো অ্যান্টিজেন নেই।
রক্তরসে a ও b অ্যান্টিবডি থাকে।
বিশেষ বৈশিষ্ট্য:
O গ্রুপের রক্তধারী ব্যক্তি: সব গ্রুপের মানুষকে রক্ত দিতে পারে → সর্বজনীন রক্তদাতা (Universal Donor)।
AB গ্রুপের রক্তধারী ব্যক্তি: যেকোনো রক্তগ্রুপের রক্ত গ্রহণ করতে পারে → সর্বজনীন রক্তগ্রহীতা (Universal Recipient)।
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি
0
Updated: 2 months ago
মানুষের রক্তের গ্রুপকে কী দ্বারা শ্রেণিবিন্যাস করা হয়?
Created: 1 month ago
A
রক্তের চাপ ও গতির ভিত্তিতে
B
হরমোন ও এনজাইমের ভিত্তিতে
C
রক্তের রঙ ও ঘনত্বের ভিত্তিতে
D
অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডির উপস্থিতির ভিত্তিতে
ব্লাড গ্রুপ বা রক্তের গ্রুপ
-
অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতির উপর ভিত্তি করে মানুষের রক্তকে বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ করা যায়। এ ধরনের শ্রেণিবিন্যাসকে ব্লাড গ্রুপ বলা হয়।
-
বিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টেইনার ১৯০১ সালে মানুষের রক্তের শ্রেণিবিন্যাস করেন এবং চারটি গ্রুপে নামকরণ করেন: A, B, AB এবং O।
-
সাধারণত একজন মানুষের রক্তের গ্রুপ আজীবন একই থাকে।
রক্তের গ্রুপের অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি সারণি:
| রক্তের গ্রুপ | রক্তকণার অ্যান্টিজেন | প্লাজমার অ্যান্টিবডি |
|---|---|---|
| A | A | Anti-B |
| B | B | Anti-A |
| AB | A ও B | কোনো নেই |
| O | কোনো নেই | Anti-A ও Anti-B |
উৎস: জীববিজ্ঞান, নবম-দশম শ্রেণি
0
Updated: 1 month ago