প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণের অন্যতম কারণ কি?
A
Ovarian tumour
B
Twin pregnancy
C
Retained placenta
D
Pelvic Inflammation
উত্তরের বিবরণ
প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ বা Postpartum Hemorrhage (PPH) হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে সন্তান জন্মের পর অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটে। এটি মাতৃমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত। সাধারণত প্রসবের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫০০ মিলিলিটারের বেশি রক্তক্ষরণ হলে সেটিকে PPH বলা হয়। এই অবস্থার অন্যতম প্রধান কারণ হলো Retained placenta, অর্থাৎ জরায়ুর ভেতরে প্লাসেন্টার কিছু অংশ থেকে যাওয়া। নিচে এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
• Retained placenta মানে হলো প্রসবের পর প্লাসেন্টা সম্পূর্ণভাবে বাইরে না আসা। সাধারণত শিশুর জন্মের পর ৩০ মিনিটের মধ্যে প্লাসেন্টা বেরিয়ে আসা উচিত, কিন্তু যদি তা না হয়, তবে জরায়ুর ভেতরে থেকে যাওয়া অংশ রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে।
• প্লাসেন্টার এই অংশ জরায়ুর প্রাচীরে লেগে থাকে এবং জরায়ু পুরোপুরি সংকুচিত হতে পারে না। ফলে রক্তনালী বন্ধ না হয়ে ক্রমাগত রক্তপাত হতে থাকে।
• Retained placenta-এর পেছনে কিছু কারণ রয়েছে, যেমন – দীর্ঘ সময় ধরে প্রসব প্রক্রিয়া চলা, পূর্বে সিজারিয়ান ডেলিভারি হওয়া, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া থাকা, অথবা জরায়ুর অস্বাভাবিক গঠন।
• চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় Retained placenta তিন ধরনের হতে পারে –
(১) Placenta adherens (যেখানে প্লাসেন্টা স্বাভাবিকভাবে আলাদা হয় না),
(২) Trapped placenta (যেখানে প্লাসেন্টা আলাদা হলেও বাইরে বের হতে পারে না),
(৩) Placenta accreta (যেখানে প্লাসেন্টা জরায়ুর প্রাচীরে গভীরভাবে লেগে যায়)।
• এই অবস্থায় মা দ্রুত রক্তশূন্যতায় ভুগতে পারেন। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে শক হতে পারে, এমনকি জীবননাশের ঝুঁকিও থাকে। তাই এটি একটি জরুরি চিকিৎসা অবস্থা হিসেবে বিবেচিত।
• চিকিৎসা: Retained placenta থাকলে প্রথমে হাতে করে বা ম্যানুয়ালি প্লাসেন্টা বের করতে হয়। প্রয়োজনে অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে ম্যানুয়াল রিমুভাল করা হয়। পাশাপাশি রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে অক্সিটোসিন বা মিসোপ্রোস্টল জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
• যদি এই অবস্থার যথাসময়ে চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে ইনফেকশন বা সেপসিসও হতে পারে। এজন্য প্রসবের পরপরই প্লাসেন্টা সম্পূর্ণ বের হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
• অন্যান্য বিকল্পগুলো ভুল কারণ:
– Ovarian tumour প্রসব পরবর্তী নয়, বরং গর্ভধারণের আগে বা পরে ডিম্বাশয়ে টিউমার সৃষ্টি করে; এটি রক্তক্ষরণের কারণ নয়।
– Twin pregnancy রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, তবে এটি সরাসরি কারণ নয়।
– Pelvic inflammation বা পেলভিক প্রদাহ সাধারণত সংক্রমণের ফল, যা প্রসব পরবর্তী রক্তপাতের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, Retained placenta-ই প্রসব পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের অন্যতম প্রধান ও সরাসরি কারণ। সময়মতো প্লাসেন্টা বের না হলে তা মাতৃস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
0
Updated: 1 day ago
মানব দেহের মৌলিক ইউনিটের নাম কি?
Created: 1 week ago
A
কোষ
B
নিউক্লিয়াস
C
মাইটোকন্ড্রিয়া
D
নিউক্লিওলাস
0
Updated: 1 week ago
ABG analysis করার জন্য Blood সংগ্রহ কোথা থেকে করা হয়?
Created: 1 day ago
A
Cephalic Vein
B
Femoral Vein
C
Artery
D
Capillary
ABG বা Arterial Blood Gas analysis হলো এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন (O₂), কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂), এবং পিএইচ (pH) এর মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এটি মূলত শ্বাসপ্রশ্বাস এবং বিপাকীয় অবস্থার কার্যকারিতা বোঝার জন্য করা হয়। এই পরীক্ষার জন্য রক্ত অবশ্যই ধমনী (Artery) থেকে সংগ্রহ করতে হয়, কারণ ধমনী রক্তে গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়।
-
Artery থেকে রক্ত সংগ্রহের কারণ: ধমনীর রক্ত অক্সিজেনে সমৃদ্ধ এবং এটি শরীরের টিস্যুগুলিতে সরাসরি অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে, অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ নির্ণয় করতে ধমনীর রক্তই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নমুনা। শিরার (Vein) রক্তে এই গ্যাসগুলোর মাত্রা পরিবর্তিত থাকে, তাই সেগুলো ব্যবহার করা যায় না।
-
রক্ত সংগ্রহের স্থান: সাধারণত তিনটি ধমনী ব্যবহৃত হয়—Radial artery (হাতে কব্জির কাছে), Brachial artery (বাহুর ভেতরের দিকে) এবং Femoral artery (উরুর গোড়ায়)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় Radial artery, কারণ এটি সহজলভ্য, রক্তপ্রবাহ ভালো থাকে এবং এতে জটিলতার আশঙ্কা কম।
-
নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি: রোগীর হাত সামান্য প্রসারিত করে নির্দিষ্ট স্থানে জীবাণুমুক্ত সুচ প্রবেশ করিয়ে রক্ত নেওয়া হয়। এই সময় সাধারণত Heparinized syringe ব্যবহার করা হয় যাতে রক্ত জমাট না বাঁধে। নমুনা সংগ্রহের পর সঙ্গে সঙ্গে তা বরফে রাখা হয় এবং যত দ্রুত সম্ভব ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।
-
ABG পরীক্ষার উদ্দেশ্য: এই পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা জানতে পারেন—
-
রক্তে pH মান স্বাভাবিক আছে কিনা (৭.৩৫–৭.৪৫)।
-
PaO₂ (partial pressure of oxygen) এবং PaCO₂ (partial pressure of carbon dioxide) এর মাত্রা স্বাভাবিক আছে কিনা।
-
রোগী Respiratory acidosis, Respiratory alkalosis, Metabolic acidosis বা Metabolic alkalosis অবস্থায় আছে কিনা।
-
-
Cephalic vein, Femoral vein বা Capillary থেকে রক্ত সংগ্রহ সাধারণত ABG পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত নয়, কারণ সেসব রক্তে গ্যাসের মান পরিবর্তিত থাকে। তবে নবজাতক বা শিশুদের ক্ষেত্রে কখনও কখনও Capillary blood ব্যবহার করা যেতে পারে, কিন্তু তা ধমনীর রক্তের বিকল্প নয়।
-
সতর্কতা ও ঝুঁকি: ধমনীর রক্ত নেওয়ার সময় ব্যথা, হালকা রক্তপাত বা স্থানীয় ফোলা দেখা দিতে পারে। তবে অভিজ্ঞ হাতে এটি খুবই নিরাপদ প্রক্রিয়া। বিশেষ ক্ষেত্রে Allen’s test করা হয় যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় ধমনীর পাশের অন্য রক্তনালী ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা।
সব মিলিয়ে, ABG analysis করার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে হয় Artery থেকে, কারণ এ রক্তই শরীরের গ্যাস বিনিময়ের সঠিক অবস্থা প্রতিফলিত করে এবং রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সঠিক মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।
0
Updated: 1 day ago
মানবদেহের কোন অঙ্গটি পরিপাকতন্ত্রের (Digestive System) অংশ?
Created: 1 month ago
A
হৃদপিণ্ড
B
যকৃত
C
বৃক্ক
D
ফুসফুস
যকৃত মানবদেহের সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ অঙ্গ এবং এটি পরিপাকতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অঙ্গ হলো প্রাণিদেহের একটি নির্দিষ্ট অংশ, যা এক বা একাধিক টিস্যু দিয়ে গঠিত এবং নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে। দেহের অঙ্গসমূহ নিয়ে জীববিজ্ঞানের যে শাখায় আলোচনা করা হয় তাকে বলা হয় অঙ্গসংস্থানবিদ্যা (Morphology)। মানুষের দেহে একাধিক তন্ত্র রয়েছে, যেগুলো বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গতন্ত্রের মাধ্যমে কাজ সম্পাদন করে।
-
অঙ্গ (Organ): প্রাণিদেহের অংশবিশেষ, যা একই অথবা ভিন্ন ধরনের টিস্যু দিয়ে তৈরি হয় এবং একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে।
-
অঙ্গসংস্থানবিদ্যা: দেহের অঙ্গসমূহ ও তাদের গঠন নিয়ে আলোচনা করা জীববিজ্ঞানের শাখা।
মানবদেহের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তন্ত্র হলো:
১। পরিপাকতন্ত্র (Digestive system):
-
খাদ্যগ্রহণ, পরিপাক, শোষণ এবং অপাচ্য খাদ্যাংশ নিষ্কাশনের সাথে জড়িত।
-
এর দুটি প্রধান অংশ হলো পৌষ্টিক নালি (digestive canal) এবং পৌষ্টিক গ্রন্থি (digestive glands)।
-
পৌষ্টিক নালি গঠিত মুখছিদ্র, মুখগহ্বর, গলবিল, অন্ননালি, পাকস্থলী, ডিওডেনাম, ইলিয়াম, রেকটাম বা মলাশয় এবং পায়ুছিদ্র দ্বারা।
-
পৌষ্টিক গ্রন্থির মধ্যে লালাগ্রন্থি, যকৃত এবং অগ্ন্যাশয় অন্তর্ভুক্ত। এদের নিঃসৃত রস খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে।
২। শ্বসনতন্ত্র (Respiratory system):
-
নাসারন্ধ্র, গলবিল, ল্যারিংস, ট্রাকিয়া, ব্রঙ্কাস, ব্রঙ্কিওল, অ্যালভিওলাই এবং একজোড়া ফুসফুস নিয়ে গঠিত।
-
পরিবেশ থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে খাদ্যের জারণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে, যা দেহের দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনে সহায়তা করে।
৩। স্নায়ুতন্ত্র (Nervous system):
-
দেহের বাইরের ও ভেতরের উদ্দীপনা গ্রহণ এবং তার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
-
মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড এবং করোটিক স্নায়ু নিয়ে গঠিত।
-
স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic Nervous System) অনৈচ্ছিক পেশির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
৪। রেচনতন্ত্র (Excretory system):
-
বিপাক প্রক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট নাইট্রোজেনযুক্ত বর্জ্য পদার্থ দেহ থেকে অপসারণ করে।
-
একজোড়া বৃক্ক, একজোড়া ইউরেটার, একটি মূত্রথলি এবং একটি মূত্রনালি (ইউরেথ্রা) নিয়ে গঠিত।
0
Updated: 1 month ago