সাধারণত রোগীর Pulse দেখা হয় কোথায়?
A
Ulnar artery
B
Radial artery
C
Femoral artery
D
Brachial artery
উত্তরের বিবরণ
রোগীর শরীরের পালস বা নাড়ির গতি পরীক্ষা করা চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি শরীরে রক্তপ্রবাহের হার, ছন্দ এবং শক্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়। সাধারণত চিকিৎসক বা নার্সরা হাতের কবজির অংশে পালস মাপেন, কারণ সেখানে রক্তনালী সহজেই স্পর্শ করা যায়।
-
Radial artery হলো কবজির অভ্যন্তরীণ অংশে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী। এটি হাতের বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিকে থাকে। এই স্থানে নাড়ি সবচেয়ে সহজে অনুভব করা যায়, কারণ এখানে ধমনীটি ত্বকের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। তাই চিকিৎসকরা রোগীর হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য জানতে Radial artery তে পালস পরীক্ষা করেন।
-
এই স্থানে পালস দেখা সহজ কারণ এখানে ত্বকের নিচে কোনো মোটা মাংসপেশি বা হাড়ের প্রতিবন্ধকতা থাকে না। ফলে আঙুলের হালকা স্পর্শেই স্পন্দন অনুভূত হয়।
-
Pulse rate সাধারণত প্রতি মিনিটে ৬০–১০০ বার স্পন্দিত হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এই হার বয়স, লিঙ্গ ও শারীরিক ক্রিয়াকলাপের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
-
চিকিৎসকরা কবজির এই অংশে তিনটি আঙুল (মধ্যমা, অনামিকা ও তর্জনী) ব্যবহার করে পালস মাপেন। এতে নাড়ির গতি, ছন্দ, শক্তি ও নিয়মিততা নির্ধারণ করা যায়।
-
Ulnar artery, যা হাতের নিচের দিকে থাকে, তাতেও পালস অনুভব করা সম্ভব হলেও এটি Radial artery-এর মতো সহজ নয়। সাধারণত বিশেষ প্রয়োজনে এটি ব্যবহার করা হয়।
-
Femoral artery অবস্থিত উরুর উপরের অংশে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা বা জরুরি অবস্থায় পালস নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে দৈনন্দিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয় না।
-
Brachial artery সাধারণত শিশুদের পালস মাপার সময় বা রক্তচাপ মাপার সময় ব্যবহৃত হয়। এটি কনুইয়ের ভেতরের দিকে থাকে।
-
চিকিৎসাবিজ্ঞানে কবজির Radial pulse সবচেয়ে প্রচলিত কারণ এটি সহজলভ্য, নিরাপদ এবং দ্রুত নির্ণয়যোগ্য।
-
কিছু ক্ষেত্রে যদি হাতের আঘাত বা ক্ষত থাকে, তখন চিকিৎসকরা বিকল্প হিসেবে Carotid artery (গলার পাশে), Femoral artery, বা Brachial artery তে পালস পরীক্ষা করেন।
সবশেষে বলা যায়, রোগীর পালস সাধারণত Radial artery-তে দেখা হয়, কারণ এটি সহজে স্পর্শযোগ্য, সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহের হার বোঝায় এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 day ago
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?
Created: 2 days ago
A
৯৭.২° ফা.
B
৯৪.৮° ফা.
C
৯৬.৪° ফা.
D
৯৮.৪° ফা.
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বলতে এমন একটি গড় তাপমাত্রাকে বোঝানো হয়, যা শরীরের অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য অপরিহার্য। এই তাপমাত্রা সাধারণ অবস্থায় নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে থাকে, যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সুষ্ঠু কার্যকারিতা নির্দেশ করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্বীকৃত এই মান শরীরের স্বাস্থ্য ও রোগ নির্ণয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড।
-
মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা হলো ৯৮.৪° ফারেনহাইট বা ৩৭° সেলসিয়াস। এটি সাধারণত মুখের ভেতরে (oral temperature) মাপা হয়।
-
এই তাপমাত্রা শরীরের মেটাবলিক কার্যক্রম বা বিপাকীয় ক্রিয়ার ফলাফল। শরীরের ভেতরে প্রতিনিয়ত যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে, তার মাধ্যমে তাপ উৎপন্ন হয় এবং সেই তাপই শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বজায় রাখে।
-
হাইপোথ্যালামাস, যা মস্তিষ্কের একটি অংশ, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এটি শরীরের “থার্মোস্ট্যাট” হিসেবে কাজ করে এবং প্রয়োজনে ঘাম বা কাঁপুনি সৃষ্টি করে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখে।
-
তাপমাত্রা মাপার সাধারণ স্থান হলো জিহ্বার নিচে, বগলে ও মলদ্বারে। মলদ্বার দিয়ে মাপা তাপমাত্রা সাধারণত কিছুটা বেশি হয়।
-
শরীরের তাপমাত্রা দিন-রাতের বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হতে পারে। সকালে তা কিছুটা কম থাকে, আর বিকেলের দিকে বা রাতে সামান্য বেড়ে যায়।
-
শিশুদের শরীরের তাপমাত্রা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কিছুটা বেশি হতে পারে, কারণ তাদের বিপাকীয় কার্যক্রম তুলনামূলক দ্রুত ঘটে।
-
৯৮.৪° ফা. থেকে বেশি হলে তাকে সাধারণত জ্বর বা ফিভার বলা হয়, যা সংক্রমণ, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য শারীরবৃত্তীয় সমস্যার কারণে হতে পারে।
-
আবার ৯৫° ফা. এর নিচে নামলে সেটি হাইপোথারমিয়া নামে পরিচিত, যা শরীরের তাপমাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যাওয়ার অবস্থা।
-
স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য শরীর ঘাম, রক্তসঞ্চালন, শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে তাপ নির্গত করে এবং প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ তাপ উৎপন্ন করে।
-
পরিবেশ, বয়স, খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক পরিশ্রম—এই উপাদানগুলোও শরীরের তাপমাত্রায় প্রভাব ফেলে।
সুতরাং দেখা যায়, ৯৮.৪° ফা. মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা, যা শরীরের সুস্থতা ও কার্যক্ষমতার প্রতীক। এর থেকে সামান্য পরিবর্তন স্বাভাবিক হলেও অতিরিক্ত পার্থক্য শরীরের অসুস্থতার ইঙ্গিত বহন করে।
0
Updated: 2 days ago
মানব দেহে RBC-এর তুলনায় White Blood Cell-এর সংখ্যা কেমন থাকে?
Created: 1 month ago
A
কম
B
বেশি
C
সমান
D
শূন্য
শ্বেত রক্ত কণিকা (White Blood Cell বা WBC) হলো হিমোগ্লোবিনবিহীন, নিউক্লিয়াসযুক্ত বড় আকারের কোষ, যাদের নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই।
-
গড় আয়ু: ১–১৫ দিন
-
সংখ্যা: রক্তে WBC-এর সংখ্যা RBC-এর তুলনায় অনেক কম
-
চলাচল: অ্যামিবার মতো দেহের আকার পরিবর্তন করতে পারে এবং রক্ত জালিকার প্রাচীর ভেদ করে টিস্যুর মধ্যে প্রবেশ করতে পারে
-
ক্রিয়া:
-
ফ্যাগোসাইটোসিস প্রক্রিয়ায় জীবাণু ধ্বংস করে
-
রক্তরসের মাধ্যমে নিজেরাই চলতে সক্ষম
-
-
প্রতিক্রিয়া: দেহে বাইরের জীবাণু দ্বারা আক্রমণ হলে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়
-
মানবদেহে সংখ্যা: প্রতি ঘন মিলিমিটার রক্তে ৪–১০ হাজার
-
শিশু ও অসুস্থদের ক্ষেত্রে: শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়
0
Updated: 1 month ago
তীব্র শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষনিক চিকিৎসা কি?
Created: 1 day ago
A
Supine position ও Oxygen
B
Recumbent position
C
Prop up position ও Oxygen
D
I. V. Fluid
তীব্র শ্বাসকষ্ট বা Acute Dyspnea এমন এক অবস্থা যেখানে রোগী হঠাৎ করে শ্বাস নিতে গুরুতর কষ্ট অনুভব করে। এটি ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, অথবা শ্বাসনালী সম্পর্কিত বিভিন্ন জটিল কারণে হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ বিলম্ব ঘটলে অক্সিজেনের ঘাটতিতে মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সঠিক তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হলো Supine position ও Oxygen প্রদান।
এই চিকিৎসার কারণ ও পদ্ধতি বোঝার জন্য নিচের তথ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ—
• Supine position বলতে বোঝায় রোগীকে পিঠের ওপর সোজা করে শোয়ানো। এই অবস্থায় বুকের পেশিগুলো ঢিলে থাকে, ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বায়ুপ্রবাহ সহজ হয়। বিশেষ করে যখন রোগী দুর্বল থাকে বা দাঁড়াতে অক্ষম, তখন এই অবস্থান খুব কার্যকর।
• এই অবস্থায় রোগীর শরীরের রক্ত চলাচল সমানভাবে হয় এবং হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ কমে। ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কিছুটা উন্নত হয়, যা শ্বাস নিতে সহায়তা করে।
• Oxygen Therapy হলো তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় সবচেয়ে তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করা যায় এবং টিস্যুগুলোর কার্যকারিতা বজায় থাকে। সাধারণত ২–৪ লিটার/মিনিট হারে ন্যাজাল প্রঙ বা মাস্কের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হয়।
• রোগীর শ্বাসের গতি, স্যাচুরেশন লেভেল ও চেতনা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। প্রয়োজনে Pulse Oximeter দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় যাতে বোঝা যায় অক্সিজেন পর্যাপ্তভাবে পৌঁছাচ্ছে কিনা।
• অনেক সময় তীব্র শ্বাসকষ্টের পেছনে অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, কার্ডিয়াক ফেলিওর বা COPD থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে মূল কারণ নির্ণয় করে পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে Supine position ও Oxygen দেওয়াই জীবনরক্ষাকারী।
• যদি দেখা যায় রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস আরও খারাপ হচ্ছে বা স্যাচুরেশন ৯০%-এর নিচে নেমে যাচ্ছে, তবে দ্রুত হাসপাতাল পরিবহন ও জরুরি চিকিৎসা দরকার।
• অন্য বিকল্পগুলো কেন ভুল:
-
Recumbent position সাধারণ বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত, কিন্তু শ্বাসকষ্টে এই অবস্থায় ফুসফুসের চাপ বেড়ে যায়।
-
Prop up position ও Oxygen অনেক সময় হৃদযন্ত্রজনিত কেসে কাজে আসে, তবে তা তীব্র শ্বাসকষ্টের সাধারণ ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ নয়।
-
I.V. Fluid শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষণিক সমাধান নয়; বরং কিছু ক্ষেত্রে এটি ফুসফুসে তরল জমিয়ে অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে।
সব মিলিয়ে, তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে রোগীকে Supine position-এ শুইয়ে সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন দেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসকে সহজ করে, অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং রোগীর প্রাণরক্ষা করতে সহায়তা করে।
0
Updated: 1 day ago