মানবদেহে প্রতিদিন পানির প্রয়োজন কত?
A
৩ লিটার
B
৫ লিটার
C
১ লিটার
D
৬ লিটার
উত্তরের বিবরণ
মানবদেহের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ পানির প্রয়োজন হয়। সাধারণভাবে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন গড়ে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য হজম, রক্ত সঞ্চালন এবং কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিচে এই তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো।
• দেহের ৬০-৭০% পানি: মানবদেহের বড় একটি অংশ পানি দিয়ে গঠিত। তাই শরীরে পানির ঘাটতি হলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যায় এবং ক্লান্তি, মাথা ঘোরা বা তৃষ্ণার মতো সমস্যা দেখা দেয়।
• ৩ লিটার পানির প্রয়োজন: সাধারণ অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষের দৈনিক গড় পানির প্রয়োজন প্রায় ৩ লিটার বা ৮–১০ গ্লাস। এর কিছু অংশ আমরা পানীয় হিসেবে নেই, বাকিটা আসে ফল, সবজি ও খাবার থেকে।
• ঘাম ও শ্বাস-প্রশ্বাসে পানির ক্ষতি: প্রতিদিন শরীর থেকে ঘাম, মূত্র, নিঃশ্বাস ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়। এই ক্ষতি পূরণ করার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি।
• শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা: পানি দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখে। গরমে ঘাম ঝরানোর মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা হয়, আবার শীতে পানির ভারসাম্য বজায় রাখা শরীরকে সুস্থ রাখে।
• রক্ত সঞ্চালন ও পুষ্টি পরিবহনে সহায়তা: রক্তের বড় অংশই পানি দ্বারা গঠিত। পানি পুষ্টি উপাদানগুলোকে কোষে পৌঁছে দেয় এবং বর্জ্য পদার্থকে শরীর থেকে বের করে দেয়।
• হজম ও বিপাক প্রক্রিয়ায় প্রভাব: পর্যাপ্ত পানি খাদ্য হজমে সাহায্য করে এবং লিভার ও কিডনির কাজ সহজ করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধেও সহায়ক।
• কম পানি পানের ক্ষতি: যদি কেউ পর্যাপ্ত পানি না পান করে, তাহলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এর ফলে মুখ শুকিয়ে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, ত্বক শুষ্ক হওয়া, মাথাব্যথা ও দুর্বলতা হতে পারে।
• অতিরিক্ত পানি পানও ক্ষতিকর: যদিও পানি জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পানি পান করলে শরীরের সোডিয়াম ও খনিজ ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, যা কিডনি ও হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
• পরিবেশ ও কাজ অনুযায়ী পার্থক্য: যারা গরম আবহাওয়ায় কাজ করেন বা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের শরীরে পানির ক্ষতি বেশি হয়। তাই তাদের প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ ৩ লিটারের চেয়েও বেশি হতে পারে।
অতএব, প্রতিদিন প্রায় ৩ লিটার পানি পান করা মানবদেহের জন্য সর্বাধিক উপযোগী ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিমাণ। এটি শরীরের স্বাভাবিক কাজ বজায় রাখে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দেহকে সক্রিয় রাখে।
0
Updated: 1 day ago
তীব্র শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষনিক চিকিৎসা কি?
Created: 1 day ago
A
Supine position ও Oxygen
B
Recumbent position
C
Prop up position ও Oxygen
D
I. V. Fluid
তীব্র শ্বাসকষ্ট বা Acute Dyspnea এমন এক অবস্থা যেখানে রোগী হঠাৎ করে শ্বাস নিতে গুরুতর কষ্ট অনুভব করে। এটি ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, অথবা শ্বাসনালী সম্পর্কিত বিভিন্ন জটিল কারণে হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত ও সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ বিলম্ব ঘটলে অক্সিজেনের ঘাটতিতে মস্তিষ্ক ও অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সঠিক তাৎক্ষণিক চিকিৎসা হলো Supine position ও Oxygen প্রদান।
এই চিকিৎসার কারণ ও পদ্ধতি বোঝার জন্য নিচের তথ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ—
• Supine position বলতে বোঝায় রোগীকে পিঠের ওপর সোজা করে শোয়ানো। এই অবস্থায় বুকের পেশিগুলো ঢিলে থাকে, ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং বায়ুপ্রবাহ সহজ হয়। বিশেষ করে যখন রোগী দুর্বল থাকে বা দাঁড়াতে অক্ষম, তখন এই অবস্থান খুব কার্যকর।
• এই অবস্থায় রোগীর শরীরের রক্ত চলাচল সমানভাবে হয় এবং হৃদপিণ্ডের উপর অতিরিক্ত চাপ কমে। ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কিছুটা উন্নত হয়, যা শ্বাস নিতে সহায়তা করে।
• Oxygen Therapy হলো তীব্র শ্বাসকষ্টের সময় সবচেয়ে তাৎক্ষণিক ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ করা যায় এবং টিস্যুগুলোর কার্যকারিতা বজায় থাকে। সাধারণত ২–৪ লিটার/মিনিট হারে ন্যাজাল প্রঙ বা মাস্কের মাধ্যমে অক্সিজেন দেওয়া হয়।
• রোগীর শ্বাসের গতি, স্যাচুরেশন লেভেল ও চেতনা পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। প্রয়োজনে Pulse Oximeter দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় যাতে বোঝা যায় অক্সিজেন পর্যাপ্তভাবে পৌঁছাচ্ছে কিনা।
• অনেক সময় তীব্র শ্বাসকষ্টের পেছনে অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, কার্ডিয়াক ফেলিওর বা COPD থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে মূল কারণ নির্ণয় করে পরবর্তী চিকিৎসা দেওয়া হয়, তবে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে Supine position ও Oxygen দেওয়াই জীবনরক্ষাকারী।
• যদি দেখা যায় রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস আরও খারাপ হচ্ছে বা স্যাচুরেশন ৯০%-এর নিচে নেমে যাচ্ছে, তবে দ্রুত হাসপাতাল পরিবহন ও জরুরি চিকিৎসা দরকার।
• অন্য বিকল্পগুলো কেন ভুল:
-
Recumbent position সাধারণ বিশ্রামের জন্য উপযুক্ত, কিন্তু শ্বাসকষ্টে এই অবস্থায় ফুসফুসের চাপ বেড়ে যায়।
-
Prop up position ও Oxygen অনেক সময় হৃদযন্ত্রজনিত কেসে কাজে আসে, তবে তা তীব্র শ্বাসকষ্টের সাধারণ ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপ নয়।
-
I.V. Fluid শ্বাসকষ্টের তাৎক্ষণিক সমাধান নয়; বরং কিছু ক্ষেত্রে এটি ফুসফুসে তরল জমিয়ে অবস্থাকে আরও খারাপ করতে পারে।
সব মিলিয়ে, তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে রোগীকে Supine position-এ শুইয়ে সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেন দেওয়াই সবচেয়ে কার্যকর তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। এটি শ্বাসপ্রশ্বাসকে সহজ করে, অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি করে এবং রোগীর প্রাণরক্ষা করতে সহায়তা করে।
0
Updated: 1 day ago
সাধারণত রোগীর Pulse দেখা হয় কোথায়?
Created: 1 day ago
A
Ulnar artery
B
Radial artery
C
Femoral artery
D
Brachial artery
রোগীর শরীরের পালস বা নাড়ির গতি পরীক্ষা করা চিকিৎসাবিজ্ঞানের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি শরীরে রক্তপ্রবাহের হার, ছন্দ এবং শক্তি সম্পর্কে ধারণা দেয়। সাধারণত চিকিৎসক বা নার্সরা হাতের কবজির অংশে পালস মাপেন, কারণ সেখানে রক্তনালী সহজেই স্পর্শ করা যায়।
-
Radial artery হলো কবজির অভ্যন্তরীণ অংশে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ধমনী। এটি হাতের বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিকে থাকে। এই স্থানে নাড়ি সবচেয়ে সহজে অনুভব করা যায়, কারণ এখানে ধমনীটি ত্বকের খুব কাছাকাছি অবস্থান করে। তাই চিকিৎসকরা রোগীর হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপ সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য জানতে Radial artery তে পালস পরীক্ষা করেন।
-
এই স্থানে পালস দেখা সহজ কারণ এখানে ত্বকের নিচে কোনো মোটা মাংসপেশি বা হাড়ের প্রতিবন্ধকতা থাকে না। ফলে আঙুলের হালকা স্পর্শেই স্পন্দন অনুভূত হয়।
-
Pulse rate সাধারণত প্রতি মিনিটে ৬০–১০০ বার স্পন্দিত হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় এই হার বয়স, লিঙ্গ ও শারীরিক ক্রিয়াকলাপের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।
-
চিকিৎসকরা কবজির এই অংশে তিনটি আঙুল (মধ্যমা, অনামিকা ও তর্জনী) ব্যবহার করে পালস মাপেন। এতে নাড়ির গতি, ছন্দ, শক্তি ও নিয়মিততা নির্ধারণ করা যায়।
-
Ulnar artery, যা হাতের নিচের দিকে থাকে, তাতেও পালস অনুভব করা সম্ভব হলেও এটি Radial artery-এর মতো সহজ নয়। সাধারণত বিশেষ প্রয়োজনে এটি ব্যবহার করা হয়।
-
Femoral artery অবস্থিত উরুর উপরের অংশে, যা হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা বা জরুরি অবস্থায় পালস নির্ণয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। তবে দৈনন্দিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহার করা হয় না।
-
Brachial artery সাধারণত শিশুদের পালস মাপার সময় বা রক্তচাপ মাপার সময় ব্যবহৃত হয়। এটি কনুইয়ের ভেতরের দিকে থাকে।
-
চিকিৎসাবিজ্ঞানে কবজির Radial pulse সবচেয়ে প্রচলিত কারণ এটি সহজলভ্য, নিরাপদ এবং দ্রুত নির্ণয়যোগ্য।
-
কিছু ক্ষেত্রে যদি হাতের আঘাত বা ক্ষত থাকে, তখন চিকিৎসকরা বিকল্প হিসেবে Carotid artery (গলার পাশে), Femoral artery, বা Brachial artery তে পালস পরীক্ষা করেন।
সবশেষে বলা যায়, রোগীর পালস সাধারণত Radial artery-তে দেখা হয়, কারণ এটি সহজে স্পর্শযোগ্য, সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহের হার বোঝায় এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 day ago
ABG analysis করার জন্য Blood সংগ্রহ কোথা থেকে করা হয়?
Created: 1 day ago
A
Cephalic Vein
B
Femoral Vein
C
Artery
D
Capillary
ABG বা Arterial Blood Gas analysis হলো এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা যার মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন (O₂), কার্বন ডাই-অক্সাইড (CO₂), এবং পিএইচ (pH) এর মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এটি মূলত শ্বাসপ্রশ্বাস এবং বিপাকীয় অবস্থার কার্যকারিতা বোঝার জন্য করা হয়। এই পরীক্ষার জন্য রক্ত অবশ্যই ধমনী (Artery) থেকে সংগ্রহ করতে হয়, কারণ ধমনী রক্তে গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়।
-
Artery থেকে রক্ত সংগ্রহের কারণ: ধমনীর রক্ত অক্সিজেনে সমৃদ্ধ এবং এটি শরীরের টিস্যুগুলিতে সরাসরি অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে, অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ নির্ণয় করতে ধমনীর রক্তই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নমুনা। শিরার (Vein) রক্তে এই গ্যাসগুলোর মাত্রা পরিবর্তিত থাকে, তাই সেগুলো ব্যবহার করা যায় না।
-
রক্ত সংগ্রহের স্থান: সাধারণত তিনটি ধমনী ব্যবহৃত হয়—Radial artery (হাতে কব্জির কাছে), Brachial artery (বাহুর ভেতরের দিকে) এবং Femoral artery (উরুর গোড়ায়)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় Radial artery, কারণ এটি সহজলভ্য, রক্তপ্রবাহ ভালো থাকে এবং এতে জটিলতার আশঙ্কা কম।
-
নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি: রোগীর হাত সামান্য প্রসারিত করে নির্দিষ্ট স্থানে জীবাণুমুক্ত সুচ প্রবেশ করিয়ে রক্ত নেওয়া হয়। এই সময় সাধারণত Heparinized syringe ব্যবহার করা হয় যাতে রক্ত জমাট না বাঁধে। নমুনা সংগ্রহের পর সঙ্গে সঙ্গে তা বরফে রাখা হয় এবং যত দ্রুত সম্ভব ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়।
-
ABG পরীক্ষার উদ্দেশ্য: এই পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসকরা জানতে পারেন—
-
রক্তে pH মান স্বাভাবিক আছে কিনা (৭.৩৫–৭.৪৫)।
-
PaO₂ (partial pressure of oxygen) এবং PaCO₂ (partial pressure of carbon dioxide) এর মাত্রা স্বাভাবিক আছে কিনা।
-
রোগী Respiratory acidosis, Respiratory alkalosis, Metabolic acidosis বা Metabolic alkalosis অবস্থায় আছে কিনা।
-
-
Cephalic vein, Femoral vein বা Capillary থেকে রক্ত সংগ্রহ সাধারণত ABG পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত নয়, কারণ সেসব রক্তে গ্যাসের মান পরিবর্তিত থাকে। তবে নবজাতক বা শিশুদের ক্ষেত্রে কখনও কখনও Capillary blood ব্যবহার করা যেতে পারে, কিন্তু তা ধমনীর রক্তের বিকল্প নয়।
-
সতর্কতা ও ঝুঁকি: ধমনীর রক্ত নেওয়ার সময় ব্যথা, হালকা রক্তপাত বা স্থানীয় ফোলা দেখা দিতে পারে। তবে অভিজ্ঞ হাতে এটি খুবই নিরাপদ প্রক্রিয়া। বিশেষ ক্ষেত্রে Allen’s test করা হয় যাতে নিশ্চিত হওয়া যায় ধমনীর পাশের অন্য রক্তনালী ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা।
সব মিলিয়ে, ABG analysis করার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে হয় Artery থেকে, কারণ এ রক্তই শরীরের গ্যাস বিনিময়ের সঠিক অবস্থা প্রতিফলিত করে এবং রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সঠিক মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে।
0
Updated: 1 day ago