রেড ইন্ডিয়ান কারা?
A
ইন্ডিয়ার আদি অধিবাসী
B
আমেরিকায় আগত ভারতবাসী
C
আমেরিকায় আদি অধিবাসী
D
সব কয়টি
উত্তরের বিবরণ
রেড ইন্ডিয়ান বলতে মূলত উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার আদি অধিবাসীদের বোঝানো হয়, যাদের ইউরোপীয় অভিযাত্রীরা প্রথমে ভুলবশত “ইন্ডিয়ান” নামে অভিহিত করে। কারণ ক্রিস্টোফার কলম্বাস যখন ১৪৯২ সালে আমেরিকায় পৌঁছান, তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জে এসেছেন। সেই ভুল ধারণা থেকেই আমেরিকার আদিবাসীদের “ইন্ডিয়ান” বলা শুরু হয়, এবং তাদের ত্বকের লালচে বর্ণের কারণে পরে তারা পরিচিত হয় “রেড ইন্ডিয়ান” নামে।
রেড ইন্ডিয়ানরা আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বসবাস করত, বিশেষ করে উত্তর আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন স্থানে। তারা ছিল স্বতন্ত্র সংস্কৃতি, ভাষা, ধর্মবিশ্বাস এবং জীবনযাপনের ধারার অধিকারী এক গোষ্ঠী। তাদের সমাজ ছিল প্রকৃতিনির্ভর, যেখানে শিকার, মাছ ধরা, কৃষিকাজ ও বন্য প্রাণী পালন ছিল জীবিকার প্রধান উৎস।
রেড ইন্ডিয়ানদের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের অন্যতম দিক ছিল প্রকৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। তারা বিশ্বাস করত, প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানে—সূর্য, চাঁদ, বৃষ্টি, বাতাস, পশু-পাখি—একটি আত্মা বা শক্তি বিরাজ করে। এই বিশ্বাস থেকেই তারা পরিবেশ ও প্রাণিকুলের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করত। তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, নৃত্য, সংগীত ও চিত্রকলায় এই প্রকৃতিপ্রেমের ছাপ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠত।
ইউরোপীয় উপনিবেশবাদ শুরু হলে রেড ইন্ডিয়ানদের জীবনে এক ভয়াবহ পরিবর্তন আসে। ইউরোপীয়রা তাদের ভূমি দখল করে কৃষি ও বাণিজ্য বিস্তার শুরু করে। এতে রেড ইন্ডিয়ানদের হাজার বছরের ঐতিহ্য ও স্বাধীন জীবনধারা নষ্ট হয়ে যায়। যুদ্ধ, রোগব্যাধি ও নিপীড়নের ফলে তাদের জনসংখ্যা ক্রমে কমে যেতে থাকে। অনেক উপজাতিকে জোর করে নির্দিষ্ট এলাকায় সরিয়ে দেওয়া হয়, যেগুলোকে বলা হতো “রিজার্ভেশন এলাকা”।
রেড ইন্ডিয়ানরা নিজেদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করেছে দীর্ঘকাল। আজও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল ও অন্যান্য দেশে তাদের বংশধরেরা বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করছে। তাদের ভাষা, শিল্প, পোশাক ও জীবনাচারে প্রাচীন ঐতিহ্যের প্রভাব এখনো বিদ্যমান। আধুনিক সমাজে তাদের অধিকার রক্ষার জন্য নানা আইন ও সংস্থা কাজ করছে, বিশেষ করে “Native American Rights Fund” ও “National Congress of American Indians”।
বর্তমানে “রেড ইন্ডিয়ান” শব্দটি অনেক ক্ষেত্রে অপ্রচলিত হয়ে পড়েছে, কারণ এটি অনেকের কাছে বর্ণবৈষম্যমূলক ধারণা বহন করে। তাই আধুনিক সমাজে তাদের উল্লেখ করতে “Native Americans”, “Indigenous Peoples of the Americas” বা “First Nations” শব্দগুলো বেশি ব্যবহার করা হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, রেড ইন্ডিয়ানরা হল আমেরিকার আদি অধিবাসী—যারা একসময় প্রকৃতিনির্ভর, স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংস্কৃতিতে জীবনযাপন করত, কিন্তু ইউরোপীয় আগ্রাসনের ফলে ইতিহাসে নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠীতে পরিণত হয়। তবুও তারা আজও নিজেদের ঐতিহ্য ও অস্তিত্ব ধরে রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
0
Updated: 15 hours ago
আলেপ্পো শহরটি কোন দেশে অবস্থিত?
Created: 1 week ago
A
ইরান
B
ইরাক
C
জর্ডান
D
সিরিয়া
আলেপ্পো হলো উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার একটি ঐতিহাসিক ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ শহর, যা দীর্ঘকাল ধরে মধ্যপ্রাচ্যের বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এটি সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলোর একটি এবং তুর্কি সীমান্ত থেকে প্রায় ৩০ মাইল (প্রায় ৪৮ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত।
আলেপ্পোর ইতিহাস ও গুরুত্ব:
-
আলেপ্পো খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই মধ্যপ্রাচ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ থেকে ৪র্থ শতাব্দী পর্যন্ত এটি ছিল পারস্যের আচেমেনীয় রাজবংশের নিয়ন্ত্রণে।
-
পরবর্তীতে, খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্য আলেপ্পো দখল করে নেয় এবং শহরটি বাণিজ্য ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে সমৃদ্ধ হয়।
-
৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে, আলেপ্পো আরবদের দ্বারা জয়লাভ করে এবং এর প্রাচীন নাম হালাব পুনরায় ব্যবহৃত হয়।
-
মধ্যযুগে এটি সিল্ক রোডের অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, যা ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপন করেছিল।
-
আলেপ্পো তার ঐতিহাসিক স্থাপনা, দুর্গ, মসজিদ ও বাজারগুলোর জন্য বিখ্যাত।
-
১৯৮৬ সালে শহরের পুরোনো অংশকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়, কারণ এটি ইসলামী ও রোমান স্থাপত্যের অনন্য সমন্বয় বহন করে।
সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট:
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ (২০১১–বর্তমান) চলাকালে আলেপ্পো শহরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এক সময়ের প্রাণবন্ত এই শহর এখনো পুনর্গঠনের পথে রয়েছে, তবে এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
সিরিয়া সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য:
-
অবস্থান: পশ্চিম এশিয়ায়, ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে, আরব উপদ্বীপের উত্তরে।
-
স্বাধীনতা লাভ: ১৯৪৬ সালে, ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
-
রাজধানী: দামেস্ক (Damascus)।
-
বিখ্যাত শহর: আলেপ্পো, ইদলিব, পালমিরা।
-
মুদ্রা: সিরীয় পাউন্ড (Syrian Pound)।
সব মিলিয়ে, আলেপ্পো কেবল সিরিয়ার নয়, বরং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, যার অতীত সভ্যতা, স্থাপত্য ও বাণিজ্য ইতিহাস আজও মানবসমাজের ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে।
0
Updated: 1 week ago
বান্দা আচেহ কোথায় অবস্থিত?
Created: 3 weeks ago
A
ইন্দোনেশিয়া
B
থাইল্যান্ড
C
ফিলিপাইন
D
কম্বোডিয়া
বান্দা আচেহ হলো ইন্দোনেশিয়ার প্রদেশ আচেহ এর রাজধানী এবং এটি সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ নদীর তীরে অবস্থিত। ঐতিহাসিকভাবে এটি “doorway to Mecca” বা মক্কার প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত, কারণ এখান থেকে জাহাজে করে সহজে মুসলিমরা পবিত্র মক্কা যাত্রা করতে পারতেন।
-
বান্দা আচেহ ইন্দোনেশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলের মধ্যে একমাত্র এলাকা যেখানে ইসলামী শরিয়াহ কার্যকরভাবে অনুসরণ করা হয়।
-
বিখ্যাত ভ্রমণকারী মার্কো পোলো ১৩৪৫ সালে এবং ইবনে বতুতা ১৩৪৬ সালে এখানে ভ্রমণ করেছেন।
-
শহরটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিকভাবে মুসলিম তীর্থযাত্রীদের যাত্রাপথের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 3 weeks ago
গ্রিনল্যান্ড নিচের কোন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত?
Created: 2 weeks ago
A
সুইডেন
B
ডেনমার্ক
C
নরওয়ে
D
ফিনল্যান্ড
গ্রিনল্যান্ড বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ এবং এটি ডেনমার্কের অধীন একটি স্বশাসিত অঞ্চল। ভৌগোলিকভাবে এটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অংশ, তবে অবস্থিত উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে, কানাডা ও আইসল্যান্ডের মাঝে। আয়তনে এটি মূল ডেনমার্কের প্রায় ৫০ গুণ বড় এবং এর রাজধানী নুউক।
গ্রিনল্যান্ডের অধিবাসীরা এস্কিমো নামে পরিচিত।
-
এটি ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ডেনমার্কের উপনিবেশ ছিল।
-
১৯৭৯ সালে গণভোটের মাধ্যমে স্বায়ত্তশাসন লাভ করে, তবে পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা নীতি এখনো ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণে।
-
এর প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস এবং বিরল ধাতু, যা বৈদ্যুতিক গাড়ি, বায়ুকল ও সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
0
Updated: 2 weeks ago