উত্তর: খ) রক্তকরবী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের এক অমর কৃতি সাহিত্যিক, যিনি কাব্য, গল্প, নাটক, গান ও প্রবন্ধের মাধ্যমে সমগ্র বাংলার সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁর লেখা নাটকগুলোর মধ্যে “রক্তকরবী” বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শুধু সাহিত্যিক দিক থেকে নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক দিক থেকেও দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
রক্তকরবী নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১৪ সালে। এই নাটকের মূল বিষয়বস্তু হলো শোষণ, অত্যাচার ও স্বাধিকার লড়াই। নাটকে ধনশালী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের শোষণমূলক আচারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সংগ্রাম এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নাটকে বিশেষভাবে মানবিক মূল্যবোধ, নৈতিকতার গুরুত্ব এবং সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকে উপস্থাপন করেছেন।
নাটকের কিছু মূল বিষয়সংক্রান্ত দিক:
-
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য: রক্তকরবী নাটকের মাধ্যমে ঠাকুর সমাজের অসংগতিগুলো তুলে ধরেছেন এবং মানুষের মধ্যে নৈতিক জাগরণ ও মানবিক চেতনার উন্নয়নের বার্তা দিয়েছেন।
-
পাত্র ও চরিত্র: নাটকে প্রধান চরিত্রগুলো সাধারণ মানুষ, যারা ধনশালী ও ক্ষমতাধর শোষকদের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। এই চরিত্রগুলোর মাধ্যমে মানবজাতির সাহস, নৈতিকতা ও একত্বের গুরুত্ব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
-
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য: রবীন্দ্রনাথের নাটকগুলি সাধারণ কথোপকথন, গানের সংযোজন এবং কাব্যিক ভাষার মাধ্যমে সমৃদ্ধ। রক্তকরবীর মধ্যে এই সব বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়, যা পাঠক ও দর্শক উভয়ের জন্যই আকর্ষণীয় করে তোলে।
-
সামাজিক প্রভাব: এই নাটক প্রকাশের পর এটি সামাজিক আন্দোলন ও চিন্তার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছিল। এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রতি সচেতনতা বাড়িয়েছে।
-
রবীন্দ্রনাথের অবদান: ঠাকুর শুধু নাট্যকারই নন, তিনি ছিলেন সমাজ চিন্তাবিদ। রক্তকরবীর মতো নাটকের মাধ্যমে তিনি সাহিত্যের সঙ্গে সমাজ ও নৈতিকতার সংযোগ স্থাপন করেছেন।
অন্য বিকল্পগুলো যেমন কৃষ্ণকুমারী, বসন্তকুমারী এবং সধবার একাদশী, এগুলো রবীন্দ্রনাথের লেখা নয়। এগুলো বিভিন্ন লেখকের কাব্য বা প্রবন্ধ হিসেবে পরিচিত। তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো খ) রক্তকরবী, কারণ এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি নাটক, যা সাহিত্যিক ও সামাজিকভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।