পানিবাহিত রোগ কোনটি?
A
গলগন্ড
B
হেপাটাইটিস A
C
ম্যালেরিয়া
D
কালাজ্বর
উত্তরের বিবরণ
পানিবাহিত রোগ হলো এমন রোগ যা দূষিত বা জীবাণুযুক্ত পানি পান করার ফলে ছড়ায়। হেপাটাইটিস A একটি পরিচিত পানিবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ যা সাধারণত অপরিষ্কার পানি বা দূষিত খাদ্যের মাধ্যমে ছড়ায়। এই রোগের প্রধান লক্ষ্য অঙ্গ হলো যকৃত বা লিভার, যা ভাইরাসের সংক্রমণে প্রদাহগ্রস্ত হয়। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
• হেপাটাইটিস A ভাইরাস (HAV) হলো এই রোগের মূল কারণ। এটি একটি RNA ভাইরাস যা শরীরে প্রবেশের পর লিভারে সংক্রমণ ঘটায়।
• রোগটি সাধারণত ছড়ায় দূষিত পানি, অপরিষ্কার খাবার, বা সংক্রমিত ব্যক্তির মলমিশ্রিত পদার্থের মাধ্যমে। বিশেষ করে যেখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা দুর্বল বা পানির উৎস অপরিষ্কার, সেখানে এ রোগ বেশি দেখা যায়।
• সংক্রমিত হওয়ার পর সাধারণত ২ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গ প্রকাশ পায়। প্রধান উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর, অবসাদ, বমিভাব, পেটব্যথা, চোখ ও ত্বক হলুদ হওয়া (জন্ডিস) ইত্যাদি।
• হেপাটাইটিস A সাধারণত প্রাণঘাতী নয়, তবে শিশু, বয়স্ক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
• এই রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো পরিষ্কার পানি পান করা, খাবার ভালোভাবে রান্না করা এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
• বর্তমানে হেপাটাইটিস A-এর কার্যকর টিকা পাওয়া যায়, যা শরীরকে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
• বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে এখনো দূষিত পানির কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে, বিশেষ করে বর্ষাকালে যখন নোংরা পানি পানির উৎসে মিশে যায়।
• হেপাটাইটিস A ছাড়াও পানিবাহিত আরও কিছু সাধারণ রোগ হলো অতিসার, আমাশয়, টাইফয়েড, কলেরা, রোটাভাইরাস সংক্রমণ ইত্যাদি। তবে গলগন্ড, ম্যালেরিয়া এবং কালাজ্বর পানির মাধ্যমে নয়, সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে ছড়ায়।
• গলগন্ড হয় আয়োডিনের অভাবে, ম্যালেরিয়া ছড়ায় মশার কামড়ে প্লাজমোডিয়াম পরজীবীর মাধ্যমে, আর কালাজ্বর (ভিসেরাল লাইশম্যানিয়াসিস) ছড়ায় স্যান্ডফ্লাই নামক পতঙ্গের মাধ্যমে।
• তাই, এই বিকল্পগুলির মধ্যে একমাত্র হেপাটাইটিস A-ই হলো পানিবাহিত রোগ, কারণ এটি সরাসরি দূষিত পানির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে সংক্রমণ ঘটায়।
সর্বোপরি বলা যায়, হেপাটাইটিস A একটি প্রতিরোধযোগ্য পানিবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ যা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বিশুদ্ধ পানি এবং টিকাদানের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
0
Updated: 1 day ago
HIV ভাইরাস প্রধানত কোন রক্ত কণিকাকে আক্রমণ করে?
Created: 1 month ago
A
প্লেটলেট
B
লোহিত কণিকা
C
B-লিম্ফোসাইট
D
T-লিম্ফোসাইট
এইডস (AIDS) একটি সংক্রামক রোগ, যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে এবং সারা বিশ্বে ব্যাপক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগটি প্রথম ১৯৮১ সালে আমেরিকায় চিহ্নিত হয় এবং তখন থেকেই এটি একটি মারাত্মক রোগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আফ্রিকার কিছু দেশ এই রোগের কারণে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত।
-
এইডস (AIDS) হলো একটি সংক্রামক রোগ যা মানুষের ইমিউন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
-
১৯৮১ সালে আমেরিকায় প্রথমবার এটি চিহ্নিত হয়।
-
আফ্রিকার দেশগুলোতে এই রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
-
মানুষের শরীরে স্বাভাবিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে, যা ইমিউনিটি নামে পরিচিত।
-
HIV (Human Immuno Deficiency Virus) ভাইরাস হলো এইডসের মূল কারণ। এটি ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে।
-
HIV শরীরে প্রবেশের পর T-লিম্ফোসাইট (শ্বেত রক্তকণিকা) আক্রমণ করে, যার ফলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়।
-
HIV সংক্রমণের পর প্রথম ৫ বছরের মধ্যে শরীরে সাধারণত কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না, কিন্তু এই সময়েই রোগটি অন্যদের মধ্যে ছড়াতে পারে।
-
সংক্রমণ প্রধানত যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে, এছাড়া মায়ের বুকের দুধ, রক্ত সঞ্চালন, বা ড্রাগ ব্যবহারকারীদের সিরিঞ্জ ব্যবহার থেকেও হতে পারে।
-
AIDS প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো HIV সংক্রমণের উপায় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা।
0
Updated: 1 month ago
ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ কি?
Created: 2 days ago
A
উচ্চ রক্তচাপ
B
অনেক জ্বর
C
মাড়িতে রক্তক্ষরণ
D
খিচুনি ধরা
ইবোলা ভাইরাস একটি মারাত্মক সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ, যা মানুষের শরীরে প্রবেশ করলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রান্ত করে। এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রথম দিকে যে লক্ষণটি স্পষ্টভাবে দেখা যায় তা হলো অনেক জ্বর। এটি রোগের প্রাথমিক ও সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ। নিচে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ও লক্ষণ সম্পর্কিত মূল তথ্যগুলো তুলে ধরা হলো।
• ইবোলা ভাইরাসের উৎস সাধারণত আফ্রিকার নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে পাওয়া ফলখেকো বাদুড় ও কিছু বন্য প্রাণীর দেহে। এসব প্রাণীর সংস্পর্শে আসা বা সংক্রমিত ব্যক্তির দেহতরলের সংস্পর্শে এলে মানুষ আক্রান্ত হয়।
• প্রথম লক্ষণ হিসেবে রোগী সাধারণত ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে অনেক জ্বরে আক্রান্ত হয়। এই জ্বরটি উচ্চমাত্রার হয় এবং সঙ্গে থাকে মাথাব্যথা ও শরীর ব্যথা।
• জ্বরের পাশাপাশি রোগী অতিরিক্ত দুর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, ও মাথা ঘোরা অনুভব করে। এগুলো ভাইরাসের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার প্রাথমিক সংকেত।
• রোগের অগ্রগতিতে বমি, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ও চোখে লালভাব দেখা দেয়। অনেক সময় শরীরের ভেতরে ও বাইরে রক্তক্ষরণও হতে পারে।
• তবে রক্তক্ষরণ বা অন্যান্য জটিল লক্ষণ সাধারণত পরবর্তী ধাপে দেখা দেয়; শুরুতে শুধুমাত্র জ্বর ও ক্লান্তি-ই প্রধান উপসর্গ হিসেবে প্রকাশ পায়।
• ইবোলা ভাইরাস শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে ফেলে, ফলে রোগী দ্রুত সংক্রমণ ও অঙ্গ বিকলের ঝুঁকিতে পড়ে।
• এ ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় এখনো নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই। তবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, তরল গ্রহণ এবং উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বাড়ে।
• সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য আক্রান্ত ব্যক্তির দেহতরল, কাপড়চোপড় বা ব্যবহৃত সামগ্রী থেকে দূরে থাকা জরুরি। চিকিৎসাকর্মীদের সুরক্ষিত পোশাক ও গ্লাভস ব্যবহার করা উচিত।
• ইবোলা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম শনাক্ত হয় ১৯৭৬ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে, এবং তখন থেকেই এটি একটি বৈশ্বিক উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে।
সব মিলিয়ে, ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক ও সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো অনেক জ্বর, যা পরে অন্যান্য জটিল উপসর্গে রূপ নিতে পারে যদি দ্রুত চিকিৎসা না নেওয়া হয়।
0
Updated: 2 days ago
“জিকা ভাইরাস” কোন দেশে সর্বপ্রথম ছড়ায়?
Created: 1 week ago
A
ভারত
B
আমেরিকা
C
ব্রাজিল
D
ইরাক
“জিকা ভাইরাস” সর্বপ্রথম ছড়ায় উগান্ডার জিকা জঙ্গলে ১৯৪৭ সালে, তবে এটি পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে ব্রাজিলে ২০১৫ সালে ব্যাপক সংক্রমণের মাধ্যমে, যেখানে এটি গর্ভবতী নারীদের মধ্যে মাইক্রোসেফালি নামক শিশুর মস্তিষ্কজনিত রোগের কারণ হয়। তাই, সঠিক উত্তর: গ) ব্রাজিল।
0
Updated: 1 week ago