কোনটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস?
A
হাঙর নদী গ্রেনেড
B
শবনম
C
আরেক ফাল্গুন
D
চিলেকোঠার সেপাই
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। লেখক সেলিনা হোসেন এই উপন্যাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন বাস্তবতা, মানবিক বেদনা এবং ত্যাগের চিত্র অনবদ্যভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এটি কেবল একটি যুদ্ধের গল্প নয়, বরং মানুষের অন্তর্গত সাহস, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের এক অনন্য দলিল।
• লেখক ও প্রকাশকাল: উপন্যাসটি রচনা করেছেন সেলিনা হোসেন (জন্ম: ১৪ জুন ১৯৪৭)। এটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৬ সালে, মুক্তিযুদ্ধের পরপরই। লেখিকা নিজে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অভিজ্ঞতা ও প্রত্যক্ষ ঘটনার প্রেক্ষিতে এই কাহিনি নির্মাণ করেছেন।
• মূল বিষয়বস্তু: গল্পে দেখা যায়, একটি সাধারণ পরিবারের নারী চরিত্র তোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী নায়িকা মুক্তিযুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যেও মানবিকতা ও মাতৃত্বের চরম প্রকাশ ঘটান। শত্রুদের হাতে ধরা পড়ে তিনি নিজের সন্তানকে রক্ষা করতে নিজের জীবন বিসর্জন দেন। এই চরিত্রটি প্রতীকীভাবে সমগ্র বাঙালি নারীর ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি।
• প্রধান চরিত্রসমূহ: নায়িকা, তোফাজ্জল, শিশুটি, মুক্তিযোদ্ধারা এবং পাকিস্তানি সেনারা—সব চরিত্রই বাস্তবধর্মী। তাদের মাধ্যমে লেখিকা যুদ্ধের ভয়াবহতা, নিষ্ঠুরতা ও বাঙালির অদম্য লড়াইয়ের মনোভাব তুলে ধরেছেন।
• উপন্যাসের প্রেক্ষাপট: উপন্যাসটির পটভূমি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়। নদী, গ্রাম, জনপদ, মৃত্যু ও প্রতিরোধ—সবকিছু মিলে এটি একটি প্রতীকী কাহিনি। নদী ও গ্রেনেড এখানে জীবনের দুই বিপরীত শক্তির প্রতীক—নদী জীবন ও ধারাবাহিকতার, আর গ্রেনেড ধ্বংস ও সংগ্রামের।
• সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য: সেলিনা হোসেনের ভাষা আবেগঘন ও কাব্যিক। তিনি নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে যুদ্ধের কষ্ট ও বীরত্বকে চিত্রিত করেছেন। উপন্যাসটিতে প্রতীক, উপমা ও বাস্তবতার মিশ্রণ রয়েছে যা পাঠককে গভীরভাবে স্পর্শ করে।
• গুরুত্ব: ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’ বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসের ধারাকে নতুন মাত্রা দেয়। এটি শুধু যুদ্ধের ইতিহাস নয়, বরং এক মায়ের আত্মত্যাগের কাহিনি। এই উপন্যাসটি পরবর্তীতে নাটক ও চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে, যা এর জনপ্রিয়তা ও প্রভাবকে আরও বিস্তৃত করেছে।
• অন্যান্য বিকল্প ব্যাখ্যা:
খ) শবনম — সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত একটি মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস; মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
গ) আরেক ফাল্গুন — জহির রায়হান রচিত রাজনৈতিক উপন্যাস, যা ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে লেখা।
ঘ) চিলেকোঠার সেপাই — আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের উপন্যাস; এর বিষয়বস্তু শহুরে মধ্যবিত্তের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট।
অতএব, প্রদত্ত প্রশ্নে সঠিক উত্তর হলো “হাঙর নদী গ্রেনেড”, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ত্যাগ ও মাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছে।
0
Updated: 1 day ago
নিচের কোনটি জসীম উদ্দীনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ?
Created: 3 weeks ago
A
রাখালী
B
ধানখেত
C
নক্সী কাঁথার মাঠ
D
সোজন বাদিয়ার ঘাট
‘রাখালী’ জসীম উদ্দীন রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ, যা বাংলা পল্লিসাহিত্যের এক অমূল্য সংযোজন। কাব্যগ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে এবং এতে মোট ১৯টি কবিতা সংকলিত রয়েছে। এই কাব্যের অন্তর্গত বিখ্যাত কবিতা ‘কবর’, যা জসীম উদ্দীনকে জনমানসে বিশেষভাবে পরিচিত করে তোলে। তাঁর কবিতায় গ্রামীণ জীবনের সরলতা, ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনা এবং মানবিক আবেগ অত্যন্ত জীবন্তভাবে প্রকাশ পেয়েছে।
জসীম উদ্দীন ছিলেন একাধারে কবি, শিক্ষাবিদ ও পল্লিসাহিত্যের সংগ্রাহক। তিনি ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি লোকসাহিত্য সংগ্রহের মাধ্যমে বাংলার গ্রামীণ সংস্কৃতি বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন। তাঁর কবিতা ও গদ্যে গ্রামের মানুষের জীবন, প্রেম ও সংগ্রাম বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে। এজন্যই তাঁকে বলা হয় ‘পল্লিকবি’ জসীম উদ্দীন।
জসীম উদ্দীনের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
বালুচর
-
রূপবতী
-
রাখালী
-
নক্সী কাঁথার মাঠ
-
ধানখেত
-
সোজন বাদিয়ার ঘাট
-
মাটির কান্না
-
মা যে জননী কান্দে
0
Updated: 3 weeks ago
'হস্তী' - কোন ধরনের শব্দ?
Created: 2 months ago
A
মৌলিক
B
যৌগিক
C
রূঢ়ি
D
যোগরূঢ়
রূঢ় বা রূঢ়ি শব্দ
সংজ্ঞা:
যে শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গ যুক্ত হয়ে মূল শব্দের আক্ষরিক অর্থের অনুগামী না থেকে একেবারে অন্য কোনো বিশেষ বা প্রচলিত অর্থে ব্যবহৃত হয়, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে।
উদাহরণসমূহ
-
হস্তী: হস্ত + ইন → আক্ষরিক অর্থ হাত আছে যার; কিন্তু রূঢ় অর্থে বোঝায় একটি পশু (হাতি)।
-
গবেষণা: গো + এষণা → আক্ষরিক অর্থ গরু খোঁজা; রূঢ় অর্থে ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা।
-
বাঁশি: আক্ষরিক অর্থে বাঁশ দিয়ে তৈরি বস্তু; রূঢ় অর্থে সুর বাজানোর বাদ্যযন্ত্র।
-
তৈল: মূল অর্থে তিলজাত স্নেহ পদার্থ; রূঢ় অর্থে যে কোনো উদ্ভিজ্জ স্নেহ পদার্থ (যেমন: বাদাম তেল)।
-
প্রবীণ: আক্ষরিক অর্থে প্রকৃষ্টভাবে বীণা বাজাতে পারেন যিনি; রূঢ় অর্থে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বয়স্ক ব্যক্তি।
-
সন্দেশ: মূল অর্থে সংবাদ; রূঢ় অর্থে একটি মিষ্টান্ন বিশেষ।
✅ অর্থাৎ, রূঢ়ি শব্দের প্রকৃত অর্থ তার আদি গঠনমূলক অর্থ থেকে ভিন্ন ও বিশেষ প্রচলিত অর্থে ব্যবহৃত হয়।
উৎস:
-
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)
-
ভাষা-শিক্ষা, ড. হায়াৎ মামুদ
0
Updated: 2 months ago
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল নাম কী?
Created: 3 weeks ago
A
প্রভাতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
B
প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
C
প্রভাতকুমার শর্মা
D
প্রবোধকুমার শর্মা
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন ত্রিশোত্তর বাংলা কথাসাহিত্যের একজন প্রভাবশালী এবং শক্তিমান লেখক। তিনি ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মে পিতার কর্মস্থল বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের নিকট মালবদিয়া গ্রামে। প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার, এবং ‘মানিক’ ছিল তাঁর ডাকনাম।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যকর্মে বাংলার সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবিক বাস্তবতার জীবন্ত চিত্র পাওয়া যায়। তাঁর উপন্যাসগুলোতে সাধারণ মানুষের জীবন, সংগ্রাম ও সম্পর্কের জটিলতা গভীরভাবে ফুটে ওঠে।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত উল্লেখযোগ্য উপন্যাসসমূহ
-
জননী
-
দিবারাত্রির কাব্য
-
পদ্মানদীর মাঝি
-
পুতুলনাচের ইতিকথা
-
শহরতলী
-
চিহ্ন
-
চতুষ্কোণ
-
সার্বজনীন
-
আরোগ্য
0
Updated: 3 weeks ago