কোনটি মহাকাব্য?
A
মহাশ্মশান
B
নীল দর্পণ
C
দুর্গেশ নন্দিনী
D
সারদামঙ্গল
উত্তরের বিবরণ
মহাকাব্য সাধারণত এমন এক বিশাল আখ্যানমূলক কাব্য যেখানে বীরত্ব, মানবিক মূল্যবোধ, ধর্ম, সমাজ ও জাতীয় চেতনার প্রতিফলন ঘটে। বাংলা সাহিত্যে ‘মহাশ্মশান’ একটি বিশিষ্ট মহাকাব্য হিসেবে স্বীকৃত। এই কাব্যের মাধ্যমে কবি ইতিহাস, জাতীয়তা এবং ধর্মীয় ভাবধারাকে একত্রিত করে গভীর মানবতাবোধ প্রকাশ করেছেন। নিচে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হলো।
• ‘মহাশ্মশান’ রচয়িতা মধুসূদন দত্ত। এটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ রচনা। মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) বাংলা সাহিত্যে আধুনিক মহাকাব্যের প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত।
• এই কাব্যের বিষয়বস্তু ১৭৫৭ সালের পলাশীর যুদ্ধ, যেখানে বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস এক করুণ পরিণতি লাভ করে। কবি যুদ্ধ, বিশ্বাসঘাতকতা ও জাতীয় বেদনার কাব্যিক চিত্র অঙ্কন করেছেন।
• ‘মহাশ্মশান’ শব্দটি প্রতীকী—এটি বাংলার স্বাধীনতার মৃত্যুক্ষেত্র নির্দেশ করে। কবি এখানে পলাশীর প্রান্তরকে এক মহাশ্মশান হিসেবে চিত্রিত করেছেন যেখানে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা চিরনিদ্রায় শায়িত।
• এই কাব্যটি ইংরেজ শাসন, মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা এবং নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের ইতিহাস কাব্যিক রূপে উপস্থাপন করেছে। ইতিহাস ও কল্পনার মিশ্রণে এটি এক অনন্য কাব্যরূপ পেয়েছে।
• মধুসূদন দত্ত ‘মহাশ্মশান’-এ ইংরেজি মহাকাব্যিক রীতি ও বাংলা ছন্দের সমন্বয় ঘটিয়েছেন। তিনি ব্ল্যাঙ্ক ভার্স বা অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেছেন যা বাংলা কাব্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
• কাব্যের মূল বৈশিষ্ট্য হলো বীরত্ব, ট্র্যাজিক আবহ, ভাষার জৌলুস ও মানবিক আবেগের গভীরতা। এটি কেবল ইতিহাসের পুনর্লিখন নয়, বরং জাতীয় চেতনার জাগরণ ঘটানোর এক শিল্পসম্মত প্রচেষ্টা।
• ‘মহাশ্মশান’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র সিরাজউদ্দৌলা, যিনি বাংলার স্বাধীনতার শেষ প্রতীক হিসেবে আবির্ভূত হন। কবি তাঁকে একজন বীর, দেশপ্রেমিক এবং ট্র্যাজিক নায়ক হিসেবে চিত্রিত করেছেন।
• কাব্যের ভাষা আলঙ্কারিক ও গম্ভীর, যেখানে সংস্কৃতনির্ভর শব্দ ও কাব্যিক রূপকের সমাহার রয়েছে। এটি পাঠকের মনে এক মহত্ত্বের অনুভূতি জাগায়।
• মধুসূদন দত্তের অন্যান্য মহাকাব্য যেমন ‘বীরাঙ্গনা’, ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ইত্যাদির মতোই ‘মহাশ্মশান’-এও তাঁর দার্শনিক চিন্তা ও সাহিত্যিক কুশলতার প্রমাণ মেলে।
• তুলনামূলকভাবে, ‘নীল দর্পণ’ (দীনবন্ধু মিত্র) একটি সামাজিক নাটক, ‘দুর্গেশ নন্দিনী’ (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) একটি ঐতিহাসিক উপন্যাস এবং ‘সারদামঙ্গল’ একটি মঙ্গলকাব্য—তাই এগুলো মহাকাব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতএব, প্রশ্নে প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে ‘মহাশ্মশান’ই একমাত্র মহাকাব্য, যা বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস, বীরত্ব ও জাতীয় চেতনাকে কাব্যরূপে মহিমান্বিত করেছে।
0
Updated: 1 day ago
'ইউসুফ-জুলেখা' কাব্যের উৎস হচ্ছে-
Created: 2 weeks ago
A
ইরানের রুপকথা
B
আরবদেশের রুপকথা
C
আল কোরআনের সুরা ইউসুফ
D
কবির কাল্পনিক আখ্যান
ইউসুফ-জোলেখা কাহিনি ইসলামি ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় সাহিত্যের একটি বহুল প্রচলিত গল্প, যা উভয় ধর্মগ্রন্থেই বিভিন্নভাবে বর্ণিত হয়েছে। এই কাহিনিতে ইউসুফের পবিত্রতা ও জোলেখার প্রেম-আবেগের দ্বন্দ্বের মাধ্যমে নৈতিকতা, আত্মসংযম ও মানবিক গুণের প্রকাশ ঘটে।
-
এই গল্পটি বাইবেল ও কোরান— উভয় ধর্মগ্রন্থেই উল্লেখ আছে।
-
ইরানের কবি ফেরদৌসি তাঁর কাব্যে ‘ইউসুফ ও জোলেখা’-র কাহিনি কাব্যিক আঙ্গিকে রূপায়িত করেছেন।
-
বাংলা কবি সগীর বাইবেল না পড়ে কোরান ও ফেরদৌসির কাব্য থেকে কাহিনিসূত্র গ্রহণ করেন।
-
তিনি ইউসুফ ও জোলেখার প্রেমকাহিনিকে বাংলা আখ্যানকবিতার রূপে উপস্থাপন করেন, যেখানে ধর্মীয় ভাব, মানবপ্রেম ও নৈতিক শিক্ষা একত্রে প্রতিফলিত হয়েছে।
-
তাঁর রচনায় ইসলামী সাহিত্যধারার প্রভাব স্পষ্ট, তবে ভাষা ও প্রকাশভঙ্গিতে রয়েছে বাংলা কাব্যের নিজস্ব সুর।
0
Updated: 2 weeks ago
"মহাশ্মশান" মহাকাব্যের রচনার পটভূমি কী?
Created: 2 months ago
A
পলাশীর যুদ্ধ
B
পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ
C
বক্সারের যুদ্ধ
D
ফকির বিদ্রোহ
মহাশ্মশান
-
রচয়িতা: কায়কোবাদ
-
ধরণ: মহাকাব্য
-
ঐতিহাসিক পটভূমি: তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ (১৭৬১)
-
বিষয়বস্তু: মহারাষ্ট্রীদের পরাজয় এবং আহমদ শাহ আবদালীর বিজয়
-
খণ্ড: তিনটি খণ্ড
-
প্রথম খণ্ড: ২৯ সর্গ
-
দ্বিতীয় খণ্ড: ২৪ সর্গ
-
তৃতীয় খণ্ড: ৭ সর্গ
-
কায়কোবাদ
-
জন্ম: ১৮৫৭, ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ, আগলা গ্রাম
-
মৃত্যু: ১৯৫১
-
প্রকৃত নাম: মোহাম্মদ কাজেম আল কোরেশী
-
সাহিত্যিক ছদ্মনাম: কায়কোবাদ
-
বাঙ্গালি মুসলিম কবিদের মধ্যে প্রথম সনেট রচয়িতা
-
আধুনিক বাংলাসাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি
-
প্রথম প্রকাশিত কাব্য: বিরহবিলাপ (১৮৭০, বয়স ১৩)
অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ
-
কুসুম কানন
-
অশ্রুমালা
-
মহাশ্মশান
-
শিব-মন্দির
0
Updated: 2 months ago
'কালের কলস' কোন ধরনের রচনা?
Created: 1 month ago
A
উপন্যাস
B
কাব্যগ্রন্থ
C
প্রবন্ধ
D
নাটক
আল মাহমুদ
-
জন্ম: ১৯৩৬ সালে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে।
-
প্রকৃত নাম: মীর আবদুল শুকুর আল মাহমুদ।
-
স্বাধীনতা-পরবর্তীকালে দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন।
-
তাঁর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ: সোনালি কাবিন।
-
মৃত্যু: ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি, ঢাকার ধানমণ্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে, বয়স ৮২ বছর।
প্রধান কাব্যগ্রন্থ:
-
লোক লোকান্তর
-
কালের কলস
-
সোনালি কাবিন
-
বখতিয়ারের ঘোড়া
-
অদৃষ্টবাদীদের রান্নাবান্না
-
পাখির কাছে ফুলের কাছে
-
প্রেমের কবিতা
0
Updated: 1 month ago