কাজী নজরুল ইসলাম রচিত 'বিদ্রোহী' কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
A
সিন্ধু হিন্দোল
B
অগ্নিবীণা
C
ভাঙার গান
D
বিষের বাঁশি
উত্তরের বিবরণ
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতা ‘বিদ্রোহী’-এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য বিপ্লবের সূচনা করেন। এই কবিতাটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’-তে অন্তর্ভুক্ত, যা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই পাঠক সমাজে আলোড়ন তোলে। নিচে এই কবিতা ও কাব্যগ্রন্থ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হলো।
• ‘অগ্নিবীণা’ প্রকাশিত হয় ১৯২২ সালে। এটি কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম কাব্যগ্রন্থ, যার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্যে নিজের অবস্থান শক্ত করে তোলেন। এই গ্রন্থেই প্রকাশ পায় তাঁর বিদ্রোহী, মানবতাবাদী ও স্বাধীনতাকামী মনোভাব।
• ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২১ সালের জানুয়ারিতে। কবিতাটি প্রথম ‘বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রকাশের পরই এটি বাংলার সাহিত্য ও সমাজে বিপুল আলোড়ন সৃষ্টি করে, কারণ এতে প্রকাশ পেয়েছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক অগ্নিমূর্তির মতো প্রতিবাদ।
• কবিতার মূল ভাব হচ্ছে বিদ্রোহ ও মুক্তির আহ্বান। নজরুল এখানে নিজেকে রূপান্তরিত করেছেন বিশ্বমানবের প্রতীক হিসেবে—যিনি অত্যাচার, অন্যায় ও দাসত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
• ‘অগ্নিবীণা’ গ্রন্থের অন্যান্য বিখ্যাত কবিতা হলো—‘প্রলয়োল্লাস’, ‘রক্তাম্বর ধরণী মা’, ‘রণভেরী’, ‘দারিদ্র্য’, ‘শাত-ইল-আরব’ প্রভৃতি। সবগুলো কবিতাতেই আগুন, শক্তি, প্রতিবাদ ও মানবতার বার্তা ধ্বনিত হয়েছে।
• ‘বিদ্রোহী’ কবিতায় ব্যবহৃত প্রতীক ও অলংকার নজরুলের অসাধারণ কাব্যশক্তির প্রমাণ বহন করে। দেব-দেবী, ইতিহাস, পুরাণ, প্রকৃতি—সবকিছুর সঙ্গে তিনি বিদ্রোহী মানসিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন।
• নজরুলের এই কবিতার প্রভাব ছিল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উভয় ক্ষেত্রেই। এটি শুধু সাহিত্য নয়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনেও অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে। তরুণ প্রজন্ম এই কবিতাকে স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করে।
• ‘অগ্নিবীণা’ নামের প্রতীক অর্থও গভীর। ‘অগ্নি’ মানে আগুন—ধ্বংস ও সৃষ্টির প্রতীক; আর ‘বীণা’ সংগীত ও সৌন্দর্যের প্রতীক। দুইয়ের মিলনে নজরুল প্রকাশ করেছেন ধ্বংসের মধ্য দিয়েই নতুন সৃষ্টির তত্ত্ব।
• এই কাব্যগ্রন্থ নজরুলকে ‘বিদ্রোহী কবি’ উপাধি এনে দেয়। তাঁর কবিতার ভেতর দিয়ে প্রকাশ পায় সমাজের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর।
• অন্য বিকল্পগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
– ‘সিন্ধু হিন্দোল’ (১৯২৭): এই কাব্যগ্রন্থে প্রেম, প্রকৃতি ও সৃষ্টির ভাব প্রাধান্য পেয়েছে।
– ‘ভাঙার গান’ (১৯২৪): এখানে সামাজিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের আহ্বান শোনা যায়।
– ‘বিষের বাঁশি’ (১৯২৪): রাজনৈতিক প্রতিবাদের তীব্র সুর এই গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে।
সুতরাং, ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটি ‘অগ্নিবীণা’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত, যা কাজী নজরুল ইসলামকে চিরকালীন বিদ্রোহী কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
0
Updated: 1 day ago
বৈষ্ণব পদাবলির আদি নিদর্শন 'গীতগোবিন্দম্' কাব্যটি কার রচনা?
Created: 1 month ago
A
জয়দেব
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
‘গীতগোবিন্দম্’ কাব্য
-
রচয়িতা: জয়দেব
-
ধরণ: সংস্কৃত গীতিকাব্য, আদি বৈষ্ণব পদাবলির নিদর্শন
-
মূল বিষয়: রাধা–কৃষ্ণের প্রেমলীলা, যা জীবাত্মা–পরমাত্মার সম্পর্ক এবং নর–নারীর চিরন্তন প্রেমের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
গঠন: ২৮৬টি শ্লোক এবং ২৪টি গীতের সমন্বয়ে ১২ সর্গে রচিত।
-
সর্গের নামকরণ: বর্ণিত বিষয় অনুযায়ী ১২টি ভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে।
-
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য:
-
রাগমূলক গীতসমূহ কাব্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
-
চরণশেষে অন্তমিল ব্যবহার করা হয়েছে, যা সংস্কৃত সাহিত্যে বিরল।
-
-
প্রভাব: পরবর্তীকালের বাংলা পদাবলি সাহিত্যে এর গভীর প্রভাব রয়েছে।
-
গুরুত্ব: বৈষ্ণব সম্প্রদায় ও সাহিত্য-রসিকদের কাছে গীতগোবিন্দম্ এক সময় পরম শ্রদ্ধার বিষয় ছিল।
উৎস: বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago
'অগ্নিবীণা' কাব্যের প্রথম কবিতা কোনটি?
Created: 3 months ago
A
ধূমকেতু
B
বিদ্রোহী
C
প্রলয়োল্লাস
D
অগ্রপথিক
অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থ:
-
‘অগ্নিবীণা’ কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই।
-
এই কাব্যের সবচেয়ে বিখ্যাত কবিতা হলো ‘বিদ্রোহী’।
-
‘বিদ্রোহী’ কবিতার কারণে কাজী নজরুল ইসলাম ‘বিদ্রোহী কবি’ নামে পরিচিত হন।
-
‘অগ্নিবীণা’ বইয়ের প্রথম কবিতার নাম ‘প্রলয়োল্লাস’।
-
এই কাব্যগ্রন্থটি তিনি বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষকে উৎসর্গ করেছেন।
অগ্নিবীণায় মোট ১২টি কবিতা রয়েছে:
১. প্রলয়োল্লাস
২. বিদ্রোহী
৩. রক্তাম্বর-ধারিণী মা
৪. আগমণী
৫. ধূমকেতু
৬. কামাল পাশা
৭. আনোয়ার
৮. রণভেরী
৯. শাত-ইল-আরব
১০. খেয়াপারের তরণী
১১. কোরবানী
১২. মহররম
0
Updated: 3 months ago
৯) মনসামঙ্গল কাব্যের প্রধান চরিত্র কোনটি?
Created: 2 months ago
A
চাঁদ সওদাগর
B
ভাঁড়দত্ত
C
ধনপতি
D
মানসিংহ
মনসামঙ্গল কাব্য
সংজ্ঞা ও বিষয়বস্তু
-
সাপের দেবী মনসা-র স্তব, স্তুতি ও কাহিনি নিয়ে রচিত কাব্যকে মনসামঙ্গল বলা হয়।
-
একে পদ্মাপুরাণ নামেও অভিহিত করা হয়।
-
রামায়ণ বা রাধাকৃষ্ণ-কাহিনি মূলত সংস্কৃত প্রভাবিত হলেও, মনসামঙ্গল উদ্ভূত হয়েছে বাংলার প্রাকৃত জীবন ও লৌকিক জীবনাচার থেকে।
প্রধান আখ্যান
-
চাঁদ সওদাগরের প্রথমে মনসা দেবীর প্রতি বিরূপ মনোভাব এবং পরে তাঁর অলৌকিক শক্তির প্রভাব স্বীকার করে বশ্যতা মেনে নেওয়াই মনসামঙ্গল কাব্যের মূল কাহিনি।
-
এই কাহিনি চৈতন্য-পূর্ব যুগ থেকেই নদী-নালা পরিবেষ্টিত গ্রাম বাংলার সর্পভীত মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
রূপ ও প্রচলন
-
মনসামঙ্গল মূলত পাঁচালি পালা।
-
এর কবির সংখ্যা শতাধিক, আর মুদ্রিত ও অমুদ্রিত পুথির সংখ্যাও বিপুল।
প্রধান কবি
-
আদি কবি: কানা হরিদত্ত
-
অন্যান্য কবি: বিজয়গুপ্ত, বিপ্রদাস পিপলাই, দ্বিজ বংশীদাস, কেতকা দাস, ক্ষেমানন্দ প্রমুখ।
মনসামঙ্গলের প্রধান চরিত্র
-
মনসা
-
চাঁদ সওদাগর
-
বেহুলা
-
লখিন্দর
-
সনকা
তুলনামূলক তথ্য
-
চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের চরিত্র: ভাঁড়দত্ত, ধনপতি
-
অন্নদামঙ্গল কাব্যের চরিত্র: মানসিংহ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
0
Updated: 2 months ago