ওয়াইফাই (Wi-Fi)-এর পূর্ণরূপ কী?

A

Wireless Facility

B

Wireless Fidelity

C

Wide Fidelity

D

Web Frequency

উত্তরের বিবরণ

img

ওয়াইফাই বা Wi-Fi হলো আধুনিক বিশ্বের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি যা মানুষকে তারবিহীনভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। এটি এমন একটি বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা যা রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য বা ডাটা প্রেরণ ও গ্রহণ করে। সহজভাবে বললে, Wi-Fi এমন এক প্রযুক্তি যা আপনাকে কেবল ছাড়া ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা দেয়।

  • পূর্ণরূপ ও অর্থ: Wi-Fi এর পূর্ণরূপ হলো Wireless Fidelity, যার অর্থ ‘তারবিহীন নির্ভুলতা’। এটি তারবিহীন ইন্টারনেট সংযোগের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

  • প্রযুক্তিগত নাম: এটি IEEE 802.11 স্ট্যান্ডার্ড নামে পরিচিত, যা ইন্সটিটিউট অব ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার্স (IEEE) দ্বারা তৈরি। এই স্ট্যান্ডার্ডের মাধ্যমেই Wi-Fi প্রযুক্তির নিয়ম ও কাঠামো নির্ধারিত হয়।

  • প্রধান উদ্দেশ্য: এর মূল উদ্দেশ্য হলো কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইসকে বেতারভাবে ইন্টারনেট বা লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কের (LAN) সঙ্গে যুক্ত করা।

  • কাজের প্রক্রিয়া: Wi-Fi মূলত রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে কাজ করে। রাউটার ইন্টারনেট সিগন্যাল গ্রহণ করে তা বেতার তরঙ্গে রূপান্তর করে, এবং ডিভাইস সেই তরঙ্গ গ্রহণ করে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করে।

  • প্রধান উপাদান: Wi-Fi ব্যবস্থায় সাধারণত তিনটি উপাদান থাকে—রাউটার, ইন্টারনেট সোর্স (যেমন ব্রডব্যান্ড লাইন), এবং Wi-Fi সমর্থিত ডিভাইস।

  • গতি ও সংস্করণ: Wi-Fi-এর বিভিন্ন সংস্করণ আছে যেমন 802.11a, 802.11b, 802.11g, 802.11n, 802.11ac এবং 802.11ax (Wi-Fi 6)। এর মধ্যে 802.11g সংস্করণের গতি প্রায় ৫৪ Mbps, আর Wi-Fi 6 প্রযুক্তিতে গতি ৯.৬ Gbps পর্যন্ত হতে পারে।

  • আবিষ্কার ও উন্নয়ন: Wi-Fi প্রযুক্তির মূল ধারণা তৈরি হয় ১৯৯০-এর দশকের শুরুতে। ১৯৯৭ সালে প্রথম Wi-Fi স্ট্যান্ডার্ড চালু হয়। Wi-Fi Alliance নামের একটি সংস্থা এই প্রযুক্তির সার্টিফিকেশন এবং মান নিয়ন্ত্রণ করে।

  • Wi-Fi Alliance: এটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এর সদর দপ্তর অস্টিন, টেক্সাস (যুক্তরাষ্ট্রে) অবস্থিত। সংস্থাটির কাজ হলো Wi-Fi ডিভাইসগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখা এবং উন্নত মান নিশ্চিত করা।

  • ব্যবহার ক্ষেত্র: Wi-Fi বর্তমানে বাড়ি, অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিমানবন্দর, রেস্টুরেন্ট, এমনকি গণপরিবহনেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অপরিহার্য অংশে পরিণত হয়েছে।

  • সুবিধা:

    • কেবল ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।

    • একই সঙ্গে একাধিক ডিভাইস সংযুক্ত করা সম্ভব।

    • ডেটা ট্রান্সফার দ্রুত এবং সহজ।

    • খরচ তুলনামূলকভাবে কম।

  • অসুবিধা:

    • নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে, কারণ সিগন্যাল হ্যাক করা সম্ভব।

    • রাউটার থেকে দূরত্ব বাড়লে সিগন্যাল দুর্বল হয়।

    • অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসের সিগন্যালের কারণে ইন্টারফেরেন্স হতে পারে।

Wi-Fi এখন শুধু একটি প্রযুক্তি নয়, বরং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, স্মার্ট টিভি—সবকিছুই Wi-Fi-এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে একটি স্মার্ট ও সংযুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলেছে। এ কারণে একে আধুনিক ডিজিটাল যুগের “তারহীন বিপ্লব” বলা হয়।

Unfavorite

0

Updated: 1 day ago

Related MCQ

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD