কোন শব্দটি ধ্বন্যাত্মক দ্বিরক্তির উদাহরণ?
A
ঘনঘন
B
টনটন
C
বইটই
D
ধনজন
উত্তরের বিবরণ
ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তি এমন এক ধরনের শব্দরূপ যেখানে একই শব্দ বা ধ্বনিকে পুনরাবৃত্তি করে একটি বিশেষ শব্দ গঠন করা হয়, যা সাধারণত কোনো শব্দ বা ঘটনার শব্দ অনুকরণ করে। এই প্রশ্নে ‘টনটন’ শব্দটি সেই বৈশিষ্ট্য বহন করে, কারণ এটি কোনো বস্তুর আঘাতে বা ধাক্কায় উৎপন্ন শব্দকে প্রকাশ করে, যা ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তির অন্যতম উদাহরণ।
ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তির ক্ষেত্রে কিছু বিষয় লক্ষ্য করা যায়—
-
‘টনটন’ শব্দটি একই ধ্বনির পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে তৈরি, যা কানে শোনা কোনো বাস্তব শব্দকে অনুকরণ করে। এই শব্দের মাধ্যমে কোনো বস্তুতে আঘাতের বা ধাক্কাধাক্কির শব্দ ফুটে ওঠে।
-
এই ধরনের শব্দে বাস্তবিক শব্দধ্বনিকে ভাষায় অনুকরণের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, যেমন— ঠকঠক, টুপটাপ, ঝমঝম, টনটন ইত্যাদি।
-
এসব শব্দের ব্যবহার সাধারণত ভাষাকে জীবন্ত ও অভিব্যক্তিপূর্ণ করে তোলে। সাহিত্য, বিশেষত কবিতা ও গল্পে, এ ধরনের শব্দ বাক্যকে আরো বর্ণনামূলক করে তোলে।
-
‘টনটন’ শব্দে ধ্বনি-প্রতিধ্বনির প্রভাব বোঝা যায়, যা একে অন্যান্য দ্বিরুক্তি থেকে আলাদা করে। এটি কেবল অর্থবহ পুনরাবৃত্তি নয়, বরং শ্রবণগত অনুভূতির প্রকাশ।
-
ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তি শব্দগুলো সাধারণত অনুকারধর্মী হয়, অর্থাৎ কোনো ক্রিয়া বা শব্দের অনুকরণে গঠিত হয়।
-
বাংলা ভাষায় এমন অনেক শব্দ দেখা যায় যা প্রকৃতির শব্দ, মানুষের কাজ বা অনুভূতির ধ্বনি প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ— ঠকঠক (দরজার শব্দ), ঝমঝম (বৃষ্টির শব্দ), খটখট (বস্তু আঘাতের শব্দ), টনটন (আঘাতের শব্দ)।
-
অন্যদিকে, ‘ঘনঘন’ হলো সময় বা ঘটনার পুনরাবৃত্তি বোঝাতে ব্যবহৃত দ্বিরুক্তি; এটি ধ্বন্যাত্মক নয়, বরং অর্থগত পুনরাবৃত্তি।
-
‘বইটই’ শব্দটি জোর বা তুচ্ছার্থে ব্যবহৃত অপ্রমিত শব্দ, এটি ধ্বন্যাত্মক নয়।
-
‘ধনজন’ শব্দটি যৌগিক (সমাসজাত), দ্বিরুক্তি নয়; এটি দুটি ভিন্ন শব্দের সমন্বয়ে গঠিত।
অতএব, ‘টনটন’ একমাত্র শব্দ যা শ্রুতিগত বা ধ্বনিগত পুনরাবৃত্তির মাধ্যমে কোনো শব্দকে অনুকরণ করে, তাই এটি ধ্বন্যাত্মক দ্বিরুক্তির সঠিক উদাহরণ।
0
Updated: 1 day ago