রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নাটক কোনটি?
A
নবান্ন
B
রাজা
C
ইডিপাস
D
কৃষ্ণকুমারী
উত্তরের বিবরণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে নাটকের মাধ্যমে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন। তাঁর রচিত নাটক ‘রাজা’ মানবজীবনের রহস্য, আত্ম-অনুসন্ধান এবং ঈশ্বরচেতনার এক গভীর দার্শনিক প্রকাশ। এটি শুধুমাত্র একটি নাটক নয়, বরং মানুষের অন্তর্লোক ও আত্মার মুক্তির এক প্রতীকী উপাখ্যান, যেখানে রাজাকে দেখা যায় এক অদৃশ্য শক্তির প্রতিরূপ হিসেবে। এই নাটকটি রবীন্দ্রনাথের প্রতীকী নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
• ‘রাজা’ নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১০ সালে। এটি মূলত একটি প্রতীকী ও আধ্যাত্মিক নাটক, যেখানে রাজাকে দেখা যায় ঈশ্বর বা পরম চেতনার প্রতীক হিসেবে, আর সুরঞ্জন চরিত্রটি মানুষের আত্মাকে প্রতিনিধিত্ব করে। নাটকটির মূল বক্তব্য—মানবজীবনে সত্য ও ঈশ্বরচেতনা উপলব্ধির প্রয়াস।
• এই নাটকে রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। রাজা এখানে দৃশ্যমান নয়, তবু তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র অনুভূত হয়। এটি ঈশ্বরের সেই অদৃশ্য উপস্থিতির রূপক, যিনি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন আত্মবিকাশ ও সত্যসন্ধানে।
• নাটকের ভাষা ও সংলাপ কাব্যময়, যা একে সাধারণ বাস্তবধর্মী নাটক থেকে আলাদা করেছে। রবীন্দ্রনাথ এই নাটকের মাধ্যমে নাট্যসাহিত্যে কবিত্ব, দর্শন ও প্রতীকের এক সুমিলন ঘটান।
• ‘রাজা’ নাটকের চরিত্রগুলো প্রতীকী। যেমন—সুরঞ্জন মানুষের মন, রাজা ঈশ্বর বা অন্তর আত্মা, সুরঙ্গমা চিরসঙ্গিনী আত্মা, এবং রাজসভা মানসিক জগৎকে বোঝায়। এসব চরিত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের অন্তর্গত সংঘাত, আত্মদহন এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।
• এই নাটকের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের “আত্মার রাজত্ব” ধারণা তুলে ধরেছেন। বাহ্যিক রাজা বা শক্তি নয়, বরং অন্তরের রাজাই মানুষকে পরিচালিত করে—এই দার্শনিক বক্তব্যই নাটকের মূল প্রেরণা।
• সাহিত্য বিশারদদের মতে, ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথের ‘প্রতীকী নাটক ত্রয়ী’—রাজা, ডাকঘর, ও মুকুট—এর মধ্যে সবচেয়ে গভীরতর ভাবসম্পন্ন রচনা।
অন্য বিকল্পগুলো সঠিক নয় কারণ—
-
‘নবান্ন’ নাটকটি রচিত হয়েছে বিজন ভট্টাচার্য কর্তৃক, যেখানে বাংলার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
-
‘ইডিপাস’ একটি গ্রিক ট্র্যাজেডি, যার রচয়িতা সফোক্লিস; এটি ভাগ্য ও নিয়তির বিরুদ্ধে মানব সংগ্রামের গল্প।
-
‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত, যেখানে ঐতিহাসিক পটভূমিতে রাজনীতি ও প্রেমের সংঘাত দেখা যায়।
অতএব, উপর্যুক্ত বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট যে ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য দার্শনিক ও প্রতীকী নাট্যকর্ম, যা বাংলা নাট্যসাহিত্যে এক যুগান্তকারী সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 day ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কৌতুক নাটক হচ্ছে-
Created: 1 month ago
A
বৈকুণ্ঠের খাতা
B
জামাই বারিক
C
বিবাহ-বিভ্রাট
D
হিতে বিপরীত
‘বৈকুণ্ঠের খাতা’
-
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
প্রকাশিত: ১৮৮৭
-
ধরণ: কৌতুক নাটক
-
কাহিনী সংক্ষেপ: নাটকের কেন্দ্রবিন্দু একজন সরল ও আত্মভোলা বৃদ্ধ। তাঁর চারপাশে নানা রকম হাস্যরসাত্মক ঘটনা ঘটে।
-
বিশেষত্ব: সংলাপের প্রাণবন্ততা এবং চরিত্রের অভিনয়গত বৈশিষ্ট্য নাটকটির জনপ্রিয়তার মূল।
-
চরিত্রসমূহ: কোনো কোনো চরিত্রে লেখকের আত্মীয়-বন্ধুদের ছায়াপাত লক্ষ্য করা যায়।
তুলনামূলক তথ্য:
-
‘জামাই বারিক’ – দীনবন্ধু মিত্র রচিত প্রহসন
-
‘বিবাহ-বিভ্রাট’ – নওরীন জাহান রচিত গ্রন্থ
-
‘হিতে বিপরীত’ – সুকুমার রায়ের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
জন্ম: ৭ মে ১৮৬১ (২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ), কলকাতা
-
পরিবার: অভিজাত ঠাকুর পরিবার; পিতা – দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিতামহ – প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর
-
পেশা ও দক্ষতা: কবি, গল্পকার, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং সমাজ সংস্কারক
-
প্রথম প্রকাশিত কাব্য: বনফুল (বাল্যকালে প্রকাশিত)
-
নোবেল পুরস্কার: ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যের জন্য
-
মৃত্যু: ৭ আগস্ট ১৯৪১ (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ), জোড়াসাঁকোর বাড়ি
নাট্যকর্মের তালিকা (কিছু প্রধান)
-
বিসর্জন
-
রাজা
-
অচলায়তন
-
চিরকুমার সভা
-
তাসের দেশ
-
শারদোৎসব
-
প্রায়শ্চিত্ত
-
ডাকঘর
-
বসন্ত
-
চণ্ডালিকা
-
নটীর পূজা
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
'হৈমন্তী' রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত একটি-
Created: 1 month ago
A
ছোটগল্প
B
উপন্যাস
C
প্রবন্ধ
D
কাব্যগ্রন্থ
‘হৈমন্তী’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ছোটগল্প, যা সমাজের নানান সমস্যার দিকে আলোকপাত করে। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হলো হৈমন্তী, যার ডাকনাম ছিল শিশির, এবং তাঁর স্বামীর নাম অপু। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় মাসিক সবুজপত্র পত্রিকায়।
-
গল্পের উল্লেখযোগ্য চরিত্র:
-
হৈমন্তী (শিশির)
-
গৌরীশংকর
-
অপু
-
বনমালী
-
-
গল্পের কিছু বিখ্যাত উক্তি:
-
“জ্যৈষ্ঠের খররোদ্রই তো জ্যৈষ্ঠের অশ্রুশূণ্য রোদন।”
-
“আমি পাইলাম ইহাকে পাইলাম।”
-
“সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ।”
-
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যান্য সামাজিক গল্প:
-
দেনাপাওনা
-
দান প্রতিদান
-
হৈমন্তি
-
ছুটি
-
পোস্টমাস্টার
-
কাবুলিওয়ালা
-
0
Updated: 1 month ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গীতাঞ্জলি' কাব্য প্রকাশিত হয় কত সনে?
Created: 2 months ago
A
১৯১০
B
১৯১১
C
১৯১২
D
১৯১৩
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলি
-
গীতাঞ্জলি হলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ১৫৭টি গানের সংকলন।
-
গানগুলো মূলত ১৯০৮ ও ১৯০৯ সালে লেখা হয় এবং ১৯১০ সালে একত্রিত গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়।
-
গীতাঞ্জলি লেখা হয়েছে সহজ ও সাবলীল ভাষায়, যার ছন্দ পড়তে এবং বোঝতেও সুন্দর।
-
এই গানগুলো মূলত কবিতার আকারে, তাই সাহিত্যিক এবং ভাবগভীর।
-
১৯১২ সালের নভেম্বরে ইংল্যান্ডে Song Offerings নামে একটি ইংরেজি অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়, যা মূলত গীতাঞ্জলির ভাব ও আধ্যাত্মিকতা, প্রকৃতি ও প্রেমের অনুভূতি তুলে ধরে। সম্পূর্ণ অনুবাদ না হলেও, এই গ্রন্থের মাধ্যমে গীতাঞ্জলির মর্ম অনেকটাই ইংরেজি পাঠকের কাছে পৌঁছে।
-
Song Offerings এর জন্য রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।
0
Updated: 2 months ago