'হাত-হদাই' একটি-
A
কাব্যগ্রন্থ
B
উলন্যাস
C
গল্পগ্রন্থ
D
নাটক
উত্তরের বিবরণ
‘হাত-হদাই’ বাংলা নাট্যসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এটি একটি নাটক, যেখানে সমাজ, পরিবার ও মানবজীবনের নানা দিক বাস্তবধর্মী ভাষায় উপস্থাপিত হয়েছে। নাটকটির ভাষা ও সংলাপে গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল রূপ ফুটে উঠেছে, যা পাঠক ও দর্শক উভয়ের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
• ‘হাত-হদাই’ নাটকটি রচনা করেছেন প্রখ্যাত নাট্যকার সেলিম আল দীন (১৯৪৯–২০০৮)। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক নাট্যধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক ও ‘গণনাট্য’ আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত। তাঁর নাটকগুলোতে বাঙালির ঐতিহ্য, লোকজ সংস্কৃতি ও সামাজিক বাস্তবতার সংমিশ্রণ দেখা যায়।
• এই নাটকটি মূলত গ্রামীণ সমাজের জীবনের টানাপোড়েন, কুসংস্কার ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে রচিত। লেখক এতে গ্রামের মানুষের হাসি-কান্না, প্রেম-সংঘাত ও মানসিক টানাপোড়েনকে জীবন্তভাবে উপস্থাপন করেছেন।
• নাটকটির নাম ‘হাত-হদাই’ প্রতীকী অর্থ বহন করে। এখানে ‘হাত’ ও ‘হদাই’ মানুষের পারস্পরিক নির্ভরতা, সহযোগিতা ও দ্বন্দ্বের প্রতিরূপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
• সেলিম আল দীন তাঁর নাটকে দেশজ ভাষা ও লোকধারার শব্দচিত্র ব্যবহার করেছেন, যা তাঁর রচনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি বাংলা নাটকে ‘দেশীয় ফর্ম’ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে লোকসংগীত, পালাগান ও আঞ্চলিক ভাষার মিশ্রণ দেখা যায়।
• নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল ঢাকার নাট্যদল ‘আরন্যক নাট্যদল’-এর মাধ্যমে, যা সেলিম আল দীনেরই প্রতিষ্ঠিত সংগঠন।
• ‘হাত-হদাই’-এর চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনের সাধারণ মানুষ থেকে নেওয়া, যেমন কৃষক, গৃহবধূ, দিনমজুর ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এতে সমাজের শ্রেণি বৈষম্য ও মানবিক টানাপোড়েনের চিত্র ফুটে উঠেছে।
• এই নাটকের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মানবিক বোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা জাগ্রত করা। সেলিম আল দীন বিশ্বাস করতেন, নাটক কেবল বিনোদন নয়, সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমও হতে পারে।
• নাটকটির ভাষা, গঠন ও উপস্থাপনায় এমন বাস্তবতা ও অনুভূতি রয়েছে যা দর্শককে সমাজের আয়না দেখতে সাহায্য করে।
অতএব, ‘হাত-হদাই’ একটি নাটক, যা শুধু সাহিত্য নয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজজীবনের গভীর বাস্তবচিত্রও তুলে ধরে। এর মাধ্যমে সেলিম আল দীন বাংলা নাট্যসাহিত্যে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন।
0
Updated: 1 day ago
সেলিম আল দীনের নাটকে অনুসৃত শিল্পতত্ত্ব -
Created: 6 days ago
A
অস্তিত্ববাদ
B
অভিব্যক্তিবাদ
C
পরাবাস্তববাদ
D
দ্বৈতাদ্বৈতবাদ
সেলিম আল দীন, যিনি ১৯৪৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে খ্যাত, তাঁর রচনায় দ্বৈতাদ্বৈতবাদ শিল্পতত্ত্ব বা সাহিত্যরীতি অনুসৃত হয়েছে। তিনি ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট ফেনি জেলার সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ শীর্ষক অভিসন্দর্ভের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
সেলিম আল দীন ১৯৭৪ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৮৬ সালে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন, যেখানে তিনি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নাটকগুলিতে বাংলাদেশে বসবাসরত বিভিন্ন শ্রেণী, পেশাজীবী, এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সমাজজীবন ও সংস্কৃতির মহাকাব্যিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ-উত্তর বাংলাদেশে তিনি ঢাকা থিয়েটার এবং বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর নাট্য রচনার জন্য তিনি ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী শিল্পতত্ত্ব’ নামে এক নতুন শিল্প রীতি প্রবর্তন করেন, যা বাংলা সাহিত্যে একটি নবতর ধারার সূচনা করে। পাশ্চাত্য শিল্পের বিভাজনকে অস্বীকার করে, সেলিম আল দীন বাঙালির হাজার বছরের নন্দতত্ত্বের আলোকে একটি নতুন শিল্প দর্শন প্রতিষ্ঠা করেন।
শুধু নাটক রচনা নয়, তিনি নাট্যতত্ত্ব সম্পর্কিত বহু গবেষণামূলক প্রবন্ধও রচনা করেছেন, যার মধ্যে অন্যতম ‘মধ্যযুগের বাঙলা নাট্য’ (১৯৯৬)। তিনি বাঙলা নাট্যকোষ নামে নাট্যবিষয়ক একটি কোষগ্রন্থও সংকলন ও সম্পাদনা করেন। এছাড়া, থিয়েটার স্টাডিজ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং নাট্যশিক্ষার্থীদের জন্য ‘নন্দিকেশ্বরের অভিনয় দর্পণ’ (১৯৮২) গ্রন্থটি অনুবাদ ও সম্পাদনা করেন।
সেলিম আল দীনের অন্যান্য প্রকাশিত সাহিত্যকীর্তির মধ্যে রয়েছে:
-
কাব্যগ্রন্থ: কবি ও তিমি,
-
উপন্যাস: অমৃত উপাখ্যান।
তার রচনাসমগ্র ৫ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে (২০০৫-২০০৯)।
0
Updated: 6 days ago
কবর নাটকটি সর্বপ্রথম কোথায় অভিনীত হয়?
Created: 1 month ago
A
বাংলা টেলিভিশনে
B
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে
C
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে
D
রমনা বটমূলে
কবর’ নাটক:
-
পটভূমি: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
-
ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক প্রথম নাটক
-
লেখা: মুনীর চৌধুরী, জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় ১৯৫৩ সালে
-
প্রেক্ষাপট: বামপন্থী রণেশ দাশগুপ্ত জেলখানায় ২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপনের জন্য মুনীর চৌধুরীকে নাটক রচনার অনুরোধ করেন
-
প্রথম অভিনয়: রাজবন্দীদের দ্বারা জেলখানায়
মুনীর চৌধুরীর মৌলিক নাটকসমূহ:
-
রক্তাক্ত প্রান্তর
-
চিঠি
-
কবর
-
দন্ডকারণ্য
অনুবাদ নাটকসমূহ:
-
কেউ কিছু বলতে পারে না
-
রূপার কৌটা
-
মুখরা রমণী বশীকরণ
0
Updated: 1 month ago
‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ নাটকের পটভূমি কি?
Created: 1 week ago
A
সিপাহী যুদ্ধ
B
মুক্তিযুদ্ধ
C
দেশভাগ
D
ভাষা আন্দোলন
0
Updated: 1 week ago