কোন সাহিত্যিক 'ব্যাঙাচি' ছদ্মনামে লিখতেন?

A

বুদ্ধদেব বসু

B

জীননান্দ দাশ

C

কাজী নজরুল ইসলাম

D

অচিন্তকুমার সেনগুপ্ত

উত্তরের বিবরণ

img

কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর সাহিত্যজীবনের শুরু থেকেই বিভিন্ন ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন। এর মধ্যে ‘ব্যাঙাচি’ ছিল অন্যতম, যা তিনি ব্যবহার করতেন বিশেষত তাঁর ব্যঙ্গ ও রসাত্মক রচনায়। এই ছদ্মনামের মাধ্যমে তিনি সমাজের কুসংস্কার, অন্যায় ও ভণ্ডামিকে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের মাধ্যমে প্রকাশ করতেন। নজরুলের লেখায় ব্যাঙাচি নামটি তাঁর প্রতিবাদী ও রসিক মানসিকতার প্রতিফলন বহন করে।

‘ব্যাঙাচি’ ছদ্মনামের ব্যবহার: কাজী নজরুল ইসলাম যখন সাংবাদিকতা শুরু করেন, তখন তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় ছোট ছোট প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও ব্যঙ্গাত্মক লেখা প্রকাশ করতেন। এসব রচনায় তিনি ‘ব্যাঙাচি’ নামটি ব্যবহার করে সমাজের অসঙ্গতিগুলোকে রসাত্মক ভঙ্গিতে উপস্থাপন করতেন।

ছদ্মনামের তাৎপর্য: ‘ব্যাঙাচি’ শব্দটি ছোট্ট প্রাণী হলেও জীবন্ত ও চঞ্চল—এই প্রতীকী ধারণার মধ্য দিয়ে নজরুল বোঝাতে চেয়েছিলেন যে, তিনি সমাজের অন্যায়ের কাদা থেকে উঠে আসা এক প্রাণশক্তি, যিনি নিপীড়নের বিরুদ্ধে সরব হবেন।

নজরুলের সাহিত্যিক বৈচিত্র্য: তিনি ছিলেন কবি, গীতিকার, সংগীতজ্ঞ, নাট্যকার ও সাংবাদিক। তাঁর লেখায় দেখা যায় বিদ্রোহ, মানবতা ও প্রেমের মিশ্রণ। ব্যঙ্গাত্মক রচনাগুলোও সেই ধারারই অংশ, যেখানে তিনি ব্যাঙাচি নামে সমাজের অসঙ্গত দিকগুলোতে আঘাত হানতেন।

অন্যান্য ছদ্মনাম: নজরুল ইসলাম শুধু ‘ব্যাঙাচি’ নয়, আরও কিছু ছদ্মনাম ব্যবহার করেছিলেন। যেমন—‘দুখু মিয়া’, ‘সৌরভ’, ‘মুক্তকণ্ঠ’, ‘বুলবুল’ প্রভৃতি। প্রতিটি নামের পেছনেই ছিল তাঁর একেকটি সৃজনশীল উদ্দেশ্য ও সাহিত্যিক মানসিকতা প্রকাশের চেষ্টা।

প্রাসঙ্গিক রচনা ও সময়কাল: ‘ব্যাঙাচি’ নামটি তিনি মূলত ১৯২০-এর দশকে ব্যবহার করেন, যখন তিনি ‘ধূমকেতু’, ‘বিজলী’, ও ‘নবযুগ’ পত্রিকায় লেখালেখি করতেন। তাঁর ব্যঙ্গাত্মক লেখাগুলো সাধারণ মানুষকে হাসির মধ্য দিয়ে সচেতন করে তুলত এবং সমাজে পরিবর্তনের বীজ বপন করত।

সাহিত্যে প্রভাব: কাজী নজরুল ইসলামের এই ছদ্মনাম শুধু এক পরিচয় নয়, বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গি—যেখানে সাহিত্যের মাধ্যমে প্রতিবাদের শক্তি প্রকাশ পেয়েছিল। ‘ব্যাঙাচি’ নামটি তাঁর লেখার প্রাণচাঞ্চল্য, রসবোধ ও সাহসী বক্তব্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।

ভুল বিকল্প বিশ্লেষণ:
বুদ্ধদেব বসু আধুনিক বাংলা সাহিত্যের কবি ও প্রাবন্ধিক, কিন্তু তিনি কোনও ছদ্মনাম হিসেবে ‘ব্যাঙাচি’ ব্যবহার করেননি।
জীবনানন্দ দাশ ছিলেন নিসর্গপ্রেমী ও রোমান্টিক কবি; তাঁর লেখায় ব্যঙ্গ বা রম্য রচনার ধারা ছিল না।
অচিন্তকুমার সেনগুপ্ত ছিলেন প্রবন্ধকার ও ছোটগল্পকার, তবে ‘ব্যাঙাচি’ নামটি তাঁর সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

সুতরাং, ‘ব্যাঙাচি’ ছদ্মনামে লিখতেন কাজী নজরুল ইসলাম, যিনি তাঁর সাহিত্য, ব্যঙ্গ ও মানবিক চেতনার মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যকে নতুন রূপে উজ্জ্বল করেছেন।

Unfavorite

0

Updated: 1 day ago

Related MCQ

সংগীত বিষয়ক গ্রন্থ 'বনগীতি' রচনা করেন কে?

Created: 2 months ago

A

কায়কোবাদ 

B

কাজী নজরুল ইসলাম

C

গোলাম মোস্তফা

D

জসীম উদ্‌দীন

Unfavorite

0

Updated: 2 months ago

২) 'কৃষাণের গান' কবিতার রচয়িতা কে?

Created: 2 months ago

A

বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন

B

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

C

কাজী নজরুল ইসলাম

D

জসীম উদ্‌দীন

Unfavorite

0

Updated: 2 months ago

কাজী নজরুল ইসলাম কোন কবিতা রচনার কারণে কারারুদ্ধ হন?

Created: 1 month ago

A

বিদ্রোহী

B

ধূমকেতু

C

আনন্দময়ীর আগমনে

D

প্রলোয়াল্লাস

Unfavorite

0

Updated: 1 month ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD