কোন গ্রন্থটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত নয়?
A
ঘুম নেই
B
রাশিয়ার চিঠি
C
যোগাযোগ
D
রক্ত কবরী
উত্তরের বিবরণ
‘ঘুম নেই’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত নয়। এটি বাংলাদেশের আধুনিক সাহিত্যিক সৈয়দ শামসুল হকের একটি বিখ্যাত উপন্যাস। অন্যদিকে, বাকি তিনটি গ্রন্থ — ‘রাশিয়ার চিঠি’, ‘যোগাযোগ’ ও ‘রক্ত কবরী’ — রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
-
‘ঘুম নেই’ সৈয়দ শামসুল হকের রচিত একটি উপন্যাস। এটি প্রকাশিত হয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে। উপন্যাসটিতে ব্যক্তিস্বাধীনতা, সামাজিক সংকট এবং মানসিক দ্বন্দ্বের চিত্র অত্যন্ত বাস্তবভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক তার মানবমন ও সমাজের দ্বন্দ্বকে গভীর মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তাই এটি আধুনিক বাংলা উপন্যাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১–১৯৪১) ছিলেন নোবেলজয়ী কবি, নাট্যকার, গল্পকার ও দার্শনিক। তিনি বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূচনা করেন এবং বহুমাত্রিক প্রতিভার জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন।
-
‘রাশিয়ার চিঠি’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভ্রমণভিত্তিক গদ্যগ্রন্থ। ১৯৩০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন সফরের সময় তিনি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে নিজের অভিজ্ঞতা ও মতামত চিঠির আকারে প্রকাশ করেন। এতে তিনি শিক্ষা, সমাজবিন্যাস, শ্রম ও মানবসমতার আদর্শ বিষয়ে গভীর বিশ্লেষণ করেন।
-
‘যোগাযোগ’ রবীন্দ্রনাথের একটি সামাজিক উপন্যাস, প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে। এতে বাংলার জমিদার সমাজের পতন, ধনসম্পদের মোহ ও পারিবারিক টানাপোড়েনের কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে। উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্র কুমুদ ও বিপ্রদাসের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ সমাজের মূল্যবোধের অবক্ষয় ও নৈতিক দ্বন্দ্ব তুলে ধরেছেন।
-
‘রক্ত কবরী’ রবীন্দ্রনাথের একটি নাটক। এটি প্রেম, আত্মত্যাগ ও মানবতার গল্প নিয়ে রচিত। নাটকটিতে জীবনের বাস্তবতা ও আদর্শবাদকে মেলানো হয়েছে কাব্যিক ভঙ্গিতে।
-
রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যভাণ্ডারে কাব্য, নাটক, উপন্যাস, প্রবন্ধ, চিঠিপত্র, সংগীত—সব মিলিয়ে প্রায় একশাধিক গ্রন্থ রয়েছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে গীতাঞ্জলি, গোরা, ঘরে বাইরে, ডাকঘর, চতুরঙ্গ, শেষের কবিতা ইত্যাদি অন্যতম।
-
অন্যদিকে সৈয়দ শামসুল হক (১৯৩৫–২০১৬) বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাহিত্যিক, যিনি কবিতা, উপন্যাস, নাটক ও গদ্য—সব ক্ষেত্রেই কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত রচনাগুলোর মধ্যে ‘এক মহিলার ছবি’, ‘নিষিদ্ধ লোবান’, ‘পরাণের গহীন ভিতর’, ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সবশেষে বলা যায়, ‘ঘুম নেই’ রবীন্দ্রনাথের নয়, বরং সৈয়দ শামসুল হকের আধুনিক মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। তাই প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে একমাত্র এই গ্রন্থটিই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনাসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
0
Updated: 1 day ago
“তােমারেই যেন ভালােবাসিয়াছি শত রূপে শত বার/জনমে জনমে যুগে যুগে অনিবার।” - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন কবিতার অংশ?
Created: 1 month ago
A
অনন্ত প্রেম
B
উপহার
C
ব্যক্ত প্রেম
D
শেষ উপহার
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মানসী" কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘অনন্ত প্রেম’ কবিতার উল্লেখযোগ্য পঙ্ক্তিগুলো গভীর প্রেমের অনুভূতি প্রকাশ করে। কবিতায় প্রিয়তমকে শত রূপে, শতবার, জনমে জনমে ভালোবাসার অমর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়েছে।
কবিতায় চিরকাল ধরে মুগ্ধ হৃদয়ে গীতহার গাঁথার মাধ্যমে প্রেমের গভীরতা এবং উপহারের প্রতিফলন ফুটে উঠেছে।
-
"মানসী" কাব্যগ্রন্থ:
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত এটি ১৮৯০ সালে প্রকাশিত হয়েছে এবং এটি কবির কাব্যকলার পূর্ণ প্রতিষ্ঠামূলক গ্রন্থ হিসেবে বিবেচিত।
-
বুদ্ধদেব বসু এই কাব্যকে “রবীন্দ্র-কাব্যের অণুবিশ্ব” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
-
গ্রন্থে মোট ৬৬টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত।
-
রবীন্দ্রনাথ নিজে লিখেছেন, “নূতন আবেষ্টনে এই কবিতাগুলি সহসা যেন নবদেহ ধারণ করল।”
-
-
মানসীর কবিতার বিভাজন:
-
কবিতাগুলো মূলত দুই ভাগে বিভক্ত: একদিকে অতীত জীবনের পিছুটানমূলক কবিতা এবং অন্যদিকে নবযৌবনের নিরুদ্ধ উদ্দীপনার খরদীপ্তি।
-
-
উল্লেখযোগ্য কবিতাসমূহ:
-
উপহার
-
নিস্ফল উপহার
-
ক্ষণিক মিলন
-
নিস্ফল কামনা
-
অহল্যার প্রতি
-
নবদম্পতির প্রেমালাপ
-
মানসিক অভিসার
-
পুরুষের উক্তি
-
নারীর উক্তি
-
ব্যক্ত প্রেম
-
গুপ্ত প্রেম
-
অনন্ত প্রেম
-
শেষ উপহার
-
-
‘অনন্ত প্রেম’ কবিতা:
-
কবিতায় প্রেমিক বা প্রিয়তমকে চিরকাল ধরে অনন্তভাবে ভালোবাসার অনুভূতি ফুটে উঠেছে।
-
প্রেমের গভীরতা প্রকাশ পেয়েছে গীতহার ও উপহারের প্রতীকী ব্যবহার দ্বারা।
-
পঙ্ক্তিগুলোর পুনরাবৃত্তি ও ছন্দ প্রেমের স্থায়িত্ব এবং যুগপৎ অনুভূতির জোরদার প্রতিফলন ঘটায়।
-
0
Updated: 1 month ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নাটক কোনটি?
Created: 1 day ago
A
নবান্ন
B
রাজা
C
ইডিপাস
D
কৃষ্ণকুমারী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে নাটকের মাধ্যমে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন। তাঁর রচিত নাটক ‘রাজা’ মানবজীবনের রহস্য, আত্ম-অনুসন্ধান এবং ঈশ্বরচেতনার এক গভীর দার্শনিক প্রকাশ। এটি শুধুমাত্র একটি নাটক নয়, বরং মানুষের অন্তর্লোক ও আত্মার মুক্তির এক প্রতীকী উপাখ্যান, যেখানে রাজাকে দেখা যায় এক অদৃশ্য শক্তির প্রতিরূপ হিসেবে। এই নাটকটি রবীন্দ্রনাথের প্রতীকী নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
• ‘রাজা’ নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১০ সালে। এটি মূলত একটি প্রতীকী ও আধ্যাত্মিক নাটক, যেখানে রাজাকে দেখা যায় ঈশ্বর বা পরম চেতনার প্রতীক হিসেবে, আর সুরঞ্জন চরিত্রটি মানুষের আত্মাকে প্রতিনিধিত্ব করে। নাটকটির মূল বক্তব্য—মানবজীবনে সত্য ও ঈশ্বরচেতনা উপলব্ধির প্রয়াস।
• এই নাটকে রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। রাজা এখানে দৃশ্যমান নয়, তবু তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র অনুভূত হয়। এটি ঈশ্বরের সেই অদৃশ্য উপস্থিতির রূপক, যিনি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন আত্মবিকাশ ও সত্যসন্ধানে।
• নাটকের ভাষা ও সংলাপ কাব্যময়, যা একে সাধারণ বাস্তবধর্মী নাটক থেকে আলাদা করেছে। রবীন্দ্রনাথ এই নাটকের মাধ্যমে নাট্যসাহিত্যে কবিত্ব, দর্শন ও প্রতীকের এক সুমিলন ঘটান।
• ‘রাজা’ নাটকের চরিত্রগুলো প্রতীকী। যেমন—সুরঞ্জন মানুষের মন, রাজা ঈশ্বর বা অন্তর আত্মা, সুরঙ্গমা চিরসঙ্গিনী আত্মা, এবং রাজসভা মানসিক জগৎকে বোঝায়। এসব চরিত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের অন্তর্গত সংঘাত, আত্মদহন এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।
• এই নাটকের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের “আত্মার রাজত্ব” ধারণা তুলে ধরেছেন। বাহ্যিক রাজা বা শক্তি নয়, বরং অন্তরের রাজাই মানুষকে পরিচালিত করে—এই দার্শনিক বক্তব্যই নাটকের মূল প্রেরণা।
• সাহিত্য বিশারদদের মতে, ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথের ‘প্রতীকী নাটক ত্রয়ী’—রাজা, ডাকঘর, ও মুকুট—এর মধ্যে সবচেয়ে গভীরতর ভাবসম্পন্ন রচনা।
অন্য বিকল্পগুলো সঠিক নয় কারণ—
-
‘নবান্ন’ নাটকটি রচিত হয়েছে বিজন ভট্টাচার্য কর্তৃক, যেখানে বাংলার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
-
‘ইডিপাস’ একটি গ্রিক ট্র্যাজেডি, যার রচয়িতা সফোক্লিস; এটি ভাগ্য ও নিয়তির বিরুদ্ধে মানব সংগ্রামের গল্প।
-
‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত, যেখানে ঐতিহাসিক পটভূমিতে রাজনীতি ও প্রেমের সংঘাত দেখা যায়।
অতএব, উপর্যুক্ত বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট যে ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য দার্শনিক ও প্রতীকী নাট্যকর্ম, যা বাংলা নাট্যসাহিত্যে এক যুগান্তকারী সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 1 day ago
'চতুরঙ্গ' গ্রন্থটি কার রচিত?
Created: 1 month ago
A
নাটক
B
উপন্যাস
C
কাব্যগ্রন্থ
D
ভ্রমণকাহিনী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চতুরঙ্গ’ একটি বিখ্যাত উপন্যাস, যা প্রকাশিত হয় ১৯১৬ সালে। এই উপন্যাসের নামকরণ করা হয়েছে সংস্কৃত শব্দ ‘চতুরঙ্গ’ থেকে, যার অর্থ ‘চারটি অংশ’ বা ‘চতুর্ভুজ’, কারণ উপন্যাসে চারটি অধ্যায় রয়েছে এবং প্রতিটি অধ্যায়ের নামকরণ করা হয়েছে প্রধান চরিত্রদের নামে। উপন্যাসের মূল চরিত্রগুলো হলো শচীশ, দামিনী এবং শ্রীবিলাস।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলো হলো:
-
ঘরে-বাইরে
-
চোখের বালি
-
শেষের কবিতা
-
যোগাযোগ
-
নৌকাডুবি
-
বউ ঠাকুরানীর হাট
-
দুই বোন
-
মালঞ্চ
-
চতুরঙ্গ
-
গোরা
-
রাজর্ষি
-
চার অধ্যায়
উৎস:
0
Updated: 1 month ago