লুঙ্গি কোন ভাষার শব্দ?
A
ফারসি
B
সংস্কৃত
C
বর্মী
D
আরবি
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত অনেক শব্দের উৎস ভিন্ন ভিন্ন ভাষা থেকে এসেছে। এর মধ্যে “লুঙ্গি” শব্দটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি প্রচলিত শব্দ হলেও এর উৎস বর্মী ভাষা। এটি প্রমাণ করে বাংলা ভাষার বৈচিত্র্য এবং বহুভাষাগত মিশ্রণ। নিচে এই শব্দটির উৎস, ব্যুৎপত্তি ও ব্যবহার সম্পর্কিত মূল তথ্য তুলে ধরা হলো।
-
উৎপত্তি ও ব্যুৎপত্তি: “লুঙ্গি” শব্দটি এসেছে বর্মী ভাষার ‘লৌঙ্গি’ শব্দ থেকে, যার অর্থ কোমরে জড়ানো কাপড়। এটি পরবর্তীতে বাংলায় এসে উচ্চারণে পরিবর্তিত হয়ে “লুঙ্গি” হয়েছে।
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুসারে, কেউ কেউ মনে করেন এটি ফারসি শব্দ ‘লঙ্গি’ থেকে উদ্ভূত, তবে অধিকাংশ ভাষাবিদ বর্মী উৎসকেই সঠিক মনে করেন। -
অর্থ ও ব্যবহার: লুঙ্গি বলতে বোঝায় কোমরে জড়িয়ে পরিধানযোগ্য এক ধরনের কাপড়। এটি দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি প্রথাগত পোশাক, যা বিশেষত বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার ও শ্রীলঙ্কায় প্রচলিত।
বাংলার গ্রামীণ জীবনে এটি পুরুষদের সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশাক। -
ভাষাগত বিস্তার: “লুঙ্গি” শব্দটি কেবল বাংলা নয়, বরং হিন্দি, সিন্ধি, তেলুগু, ওড়িয়া, কন্নড়, মালয়ালম ও তামিল ভাষাতেও ব্যবহৃত হয়। এতে বোঝা যায় শব্দটি আঞ্চলিকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ ব্যবহারে এসেছে।
-
সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য: লুঙ্গি শুধু পোশাক নয়, এটি বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ। গ্রামীণ ও শহুরে জীবনে এটি আরামদায়ক পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অনেক অঞ্চলে লুঙ্গির নকশা ও রঙে স্থানীয় ঐতিহ্যের ছাপ দেখা যায়, যেমন চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীর রঙিন লুঙ্গি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।
-
ভাষাগত মিশ্রণ:
বাংলা ভাষায় বহু শব্দ বিদেশি উৎস থেকে এসেছে। যেমন—
মায়ানমার (বর্মী) শব্দ: ফুঙ্গি, লুঙ্গি
জাপানি শব্দ: রিক্সা, হারিকিরি
হিন্দি শব্দ: চিঠি, ঠিকানা, পানি
ফারসি শব্দ: দরজা, জানালা, দুনিয়া
এসব শব্দ আজ বাংলার সঙ্গে এতটাই মিশে গেছে যে এগুলোকে আলাদা ভাষার অংশ বলা কঠিন। -
ভাষাবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি: গবেষকদের মতে, বাংলা ভাষা একটি মিশ্র ভাষা, যার ভাণ্ডারে সংস্কৃত, ফারসি, আরবি, পর্তুগিজ, ইংরেজি ও বর্মী ভাষার শব্দ যুক্ত হয়েছে। “লুঙ্গি” সেই ধারারই একটি সুন্দর উদাহরণ, যা ভাষার ধারাবাহিক বিনিময়ের প্রমাণ বহন করে।
সুতরাং, বলা যায় যে “লুঙ্গি” শব্দটি মূলত বর্মী ভাষার “লৌঙ্গি” শব্দ থেকে এসেছে, যা পরে বাংলা ভাষায় অভিযোজিত হয়েছে। এটি ভাষাগত আদান-প্রদানের এক জীবন্ত নিদর্শন এবং দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির বহুমাত্রিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন।
0
Updated: 1 day ago
’মোড়ক’ শব্দের সঠিক প্রকৃত-প্রত্যয় কোনটি?
Created: 2 months ago
A
√মুড় + অক
B
√মুড় + ওক
C
√মোড় + অক
D
√মূড় + অক
“অক” কৃৎ-প্রত্যয় যোগে শব্দ গঠন
উদাহরণ:
-
√মুড় + অক = মোড়ক
-
√ঝল্ + অক = ঝলক
উল্লেখ্য
-
ক্রিয়ামূল বা ধাতু-কে বলা হয় ক্রিয়া-প্রকৃতি বা প্রকৃতি।
-
ক্রিয়া-প্রকৃতির সঙ্গে যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি যুক্ত হয়, তাকে বলে কৃৎ-প্রত্যয়।
উদাহরণ:
চল্ (ক্রিয়া-প্রকৃতি) + অন (কৃৎ-প্রত্যয়) = চলন (বিশেষ্য পদ)।
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম ও দশম শ্রেণি, ২০১৯ সালের সংস্করণ
0
Updated: 2 months ago
'অশিক্ষিত' শব্দের গঠন কোনটি?
Created: 1 month ago
A
উপসর্গ + মূল শব্দ
B
ধাতু + প্রত্যয়
C
ধাতু + উপসর্গ
D
অব্যয় + অনুসর্গ
সঠিক উত্তর: ক) উপসর্গ + মূল শব্দ
বিশ্লেষণ:
'অশিক্ষিত' শব্দের গঠন:
-
অ (উপসর্গ) + শিক্ষিত (মূল শব্দ)
এখানে:
-
অ একটি নেতিবাচক উপসর্গ যা 'না' বা 'নয়' অর্থ প্রকাশ করে
-
শিক্ষিত হলো মূল শব্দ যার অর্থ 'যে শিক্ষা লাভ করেছে'
-
অ উপসর্গ যোগে শিক্ষিত শব্দের বিপরীত অর্থ তৈরি হয়েছে - 'যে শিক্ষা লাভ করেনি'
অনুরূপ উদাহরণ:
-
অসুস্থ = অ + সুস্থ
-
অযোগ্য = অ + যোগ্য
-
অপরিচিত = অ + পরিচিত
সুতরাং 'অশিক্ষিত' শব্দটি উপসর্গ + মূল শব্দ দিয়ে গঠিত।
উৎস: বাংলা একাডেমী আধুনিক বাংলা অভিধান; বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২২ সংস্করণ)
0
Updated: 1 month ago
লিঙ্গান্তর হয় না এমন শব্দ কোনটি?
Created: 5 days ago
A
সাহেব
B
বেয়াই
C
সঙ্গী
D
কবিরাজ
নিত্য লিঙ্গবাচক শব্দসমূহ
বাংলা ভাষায় শব্দগুলোকে লিঙ্গভিত্তিক তিন প্রকারে ভাগ করা হয় — নিত্য পুরুষবাচক, নিত্য স্ত্রীবাচক, এবং যোগবাচক। এখানে নিত্য পুরুষবাচক ও নিত্য স্ত্রীবাচক শব্দ নিয়ে আলোচনা করা হলো।
নিত্য পুরুষবাচক শব্দ:
যে সমস্ত শব্দের কোনো স্ত্রীবাচক রূপ নেই, সেগুলোকে নিত্য পুরুষবাচক শব্দ বলা হয়। অর্থাৎ, এই ধরনের শব্দ সাধারণত পুরুষ লিঙ্গ বোঝায় এবং এর স্ত্রীবাচক রূপ ব্যবহার হয় না। উদাহরণস্বরূপ—
রাষ্ট্রপতি, বিপত্নীক, কৃতদার, অকৃতদার, কবিরাজ, কুস্তিগির, পুরোহিত, স্ত্রৈণ, কোটিপতি, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, ঢাকি, ঢুলি, চৌকিদার, দফাদার ইত্যাদি।
নিত্য স্ত্রীবাচক শব্দ:
বাংলা ভাষায় এমন কিছু শব্দও রয়েছে যেগুলোর পুরুষবাচক রূপ নেই এবং তারা নিত্য স্ত্রীবাচক শব্দ হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ, এই ধরনের শব্দগুলো শুধুমাত্র নারী লিঙ্গ বোঝায়। যেমন—
সধবা, বিধবা, সপত্নী, সতিন, বিমাতা, ললনা, অঙ্গনা, এয়ো, দাই, কুলটা, অসূর্যম্পশ্যা, অরক্ষণীয়া, লক্ষ্মী, ডাইনি, গর্ভিণী, বেশ্যা ইত্যাদি।
যোগবাচক শব্দের উদাহরণ:
কিছু শব্দের পুরুষবাচক ও স্ত্রীবাচক দুটোই থাকে। যেমন—
-
সঙ্গী (পুরুষ) – সঙ্গিনী (স্ত্রী)
-
সাহেব (পুরুষ) – বিবি (স্ত্রী)
-
বেয়াই (পুরুষ) – বেয়াইন (স্ত্রী)
উৎস:
-
প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিত, ড. হায়াৎ মামুদ
-
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)
0
Updated: 5 days ago