নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি কোনটি?

A

একত্র

B

একাদশ

C

যুগ্ম

D

দিগন্ত

উত্তরের বিবরণ

img

নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি বাংলা ভাষার এক গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যতিক্রমধর্মী সন্ধি। এটি এমন একটি প্রকার, যেখানে ব্যঞ্জনসন্ধির সাধারণ নিয়ম মেনে শব্দ গঠন না হলেও, দীর্ঘদিনের প্রচলিত ব্যবহারের ফলে শব্দটি স্বীকৃত হয়ে গেছে। অর্থাৎ এটি নিয়মভিত্তিক নয়, বরং ব্যবহার ও প্রচলনের ফলে সিদ্ধ বা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে “এক” + “দশ” → “একাদশ” শব্দটি নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি হিসেবে গৃহীত।

নিচে নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো—

অর্থ ও ধারণা: নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি বলতে এমন এক প্রকার সন্ধিকে বোঝায় যেখানে মূলত ব্যঞ্জনসন্ধির নিয়ম অনুসারে ধ্বনির পরিবর্তন হওয়ার কথা থাকলেও, বাস্তবে শব্দটি নিয়মভিত্তিকভাবে নয় বরং প্রচলিত ব্যবহারের মাধ্যমে গঠিত হয়।

শব্দগঠনের বৈশিষ্ট্য: এখানে ব্যঞ্জনসন্ধির নিয়ম যেমন— “শেষ অক্ষর ব্যঞ্জন হলে পরের শব্দের আদ্য ব্যঞ্জনের সাথে মিলিত হয়ে নতুন ধ্বনি সৃষ্টি করে”— সে নিয়ম কার্যকর হয় না। বরং প্রচলন ও ভাষার ঐতিহ্য অনুযায়ী রূপটি গৃহীত হয়।

উদাহরণ: সবচেয়ে প্রচলিত উদাহরণ হলো “এক” + “দশ” = “একাদশ”। নিয়ম অনুযায়ী এখানে “ক” ও “দ” মিলিত হয়ে নতুন কোনো ধ্বনি সৃষ্টি করার কথা নয়, কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রয়োগে “একাদশ” শব্দটি সিদ্ধ রূপে গৃহীত হয়েছে।

ব্যঞ্জনসন্ধির নিয়ম থেকে পার্থক্য: সাধারণ ব্যঞ্জনসন্ধিতে দুটি শব্দের সংযোগে ধ্বনিগত পরিবর্তন ঘটে, যেমন “তৎ” + “জ্ঞান” → “তজ্জ্ঞান”। কিন্তু নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধিতে ধ্বনিগত পরিবর্তন না হলেও শব্দটি সঠিক ও স্বীকৃত হিসেবে গৃহীত হয়।

ব্যবহারিক প্রভাব: এই ধরনের শব্দ সাধারণত সংস্কৃত বা প্রাচীন উৎস থেকে আগত এবং ধর্মীয়, সাহিত্যিক বা প্রবাদবাক্যে ব্যবহৃত হয়। ভাষার প্রাকৃতিক বিকাশে এই ধরনের রূপগুলো “নিপাতনে সিদ্ধ” নামে পরিচিতি পেয়েছে।

অন্যান্য উদাহরণ: “তদনুসারে”, “তদনন্তর”, “তদ্দশা”, “একাদশ”, “দ্বাদশ” ইত্যাদি শব্দগুলো নিপাতনে সিদ্ধ রূপে দেখা যায়। এদের মধ্যে “একাদশ” সবচেয়ে পরিচিত এবং পাঠ্যপুস্তকে নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধির প্রধান উদাহরণ হিসেবে উল্লেখিত।

ভাষাবিজ্ঞানিক দিক: ভাষাবিজ্ঞান অনুযায়ী, নিপাতনে সিদ্ধ শব্দগুলোর উৎপত্তি “ভাষার ব্যবহারিক অভ্যাস” থেকে। দীর্ঘদিন ধরে একরূপে ব্যবহারের ফলে এগুলো স্বীকৃত রূপ পেয়েছে, যদিও ব্যাকরণিকভাবে সম্পূর্ণ সঙ্গত নয়।

শিক্ষণীয় দিক: বাংলা ব্যাকরণে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধির ধারণা শিক্ষার্থীদের বুঝতে সাহায্য করে যে, ভাষা শুধুমাত্র নিয়ম দ্বারা পরিচালিত নয়, বরং ব্যবহার, প্রচলন ও ঐতিহ্যের প্রভাবেও পরিবর্তিত হয়।

সবশেষে বলা যায়, “একাদশ” নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধির নিখুঁত উদাহরণ, কারণ এটি ব্যাকরণিক নিয়মে নয়, বরং প্রচলিত ভাষা ব্যবহারের ভিত্তিতে স্বীকৃত হয়েছে। এটি ভাষার স্বাভাবিক পরিবর্তন ও ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল প্রমাণ।

Unfavorite

0

Updated: 1 day ago

Related MCQ

'দ্যুলোক' শব্দের যথার্থ সন্ধি-বিচ্ছেদ কোনটি? 

Created: 5 months ago

A

দুঃ + লোক 

B

দিব্‌ + লোক 

C

দ্বি + লোক 

D

দ্বিঃ + লোক

Unfavorite

0

Updated: 5 months ago

কোন সন্ধিটি নিপাতনে সিদ্ধ? 

Created: 3 months ago

A

বাক্ + দান = বাগদান 

B

উৎ + ছেদ = উচ্ছেদ 

C

পর + পর = পরস্পর 

D

সম + সার = সংসার

Unfavorite

0

Updated: 3 months ago

কোনটি নিপাতনে সিদ্ধ ব্যঞ্জনসন্ধি?

Created: 2 months ago

A

আস্পদ

B

স্বাধীন

C

সপ্তর্ষি

D

প্রচ্ছদ

Unfavorite

0

Updated: 2 months ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD