'অপমান' শব্দের 'অপ' উপসর্গটি কোন অর্থে ব্যাবহৃত হয়?
A
বিপরীত
B
নিকৃষ্ট
C
নিকৃত
D
অভাব
উত্তরের বিবরণ
‘অপমান’ শব্দে ব্যবহৃত ‘অপ’ উপসর্গটি মূলত বিপরীত বা বিরুদ্ধ অর্থ প্রকাশ করে। এই উপসর্গ যোগে শব্দের মানে সাধারণত বিপরীত, অন্য বা নীচু ভাব প্রকাশ পায়। এখানে ‘অপ’ মানে ‘বিরুদ্ধ’, আর ‘মান’ মানে ‘সম্মান’। ফলে ‘অপমান’ শব্দের অর্থ দাঁড়ায় ‘সম্মানের বিপরীত’ বা ‘অবমাননা’। নিচে এই উপসর্গের অর্থ ও ব্যবহার নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ দেওয়া হলো।
• ‘অপ’ উপসর্গের মূল অর্থ হলো বিরুদ্ধ, বিপরীত, বা অন্য দিক। এটি সংস্কৃত উৎসের উপসর্গ যা ক্রিয়া বা বিশেষ্যের আগে বসে শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে বিপরীত ভাব প্রকাশ করে।
• ‘অপমান’ শব্দে ‘অপ’ + ‘মান’ যোগে তৈরি হয়েছে একটি নেতিবাচক অর্থবাহী শব্দ, যেখানে ‘মান’ মানে সম্মান বা মর্যাদা, আর ‘অপ’ যুক্ত হওয়ায় অর্থ দাঁড়িয়েছে সম্মানের বিপরীত অর্থাৎ অসম্মান।
• এই উপসর্গটি সাধারণত অবনতি, নিন্দা বা বিরোধী ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, অপকার (উপকারের বিপরীত), অপবিত্র (পবিত্রের বিপরীত), অপদার্থ (পদার্থহীন বা অর্থহীন ব্যক্তি), অপশক্তি (দুর্বলতা), ইত্যাদি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘অপ’ উপসর্গটি মূল শব্দের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করছে।
• ‘অপ’ ও ‘অ’ উপসর্গের পার্থক্য বোঝা জরুরি। ‘অ’ উপসর্গ সাধারণত ন্যায্যভাবে ‘না’ বা ‘নেই’ অর্থ দেয় (যেমন: অসৎ, অনৈতিক, অশুভ), কিন্তু ‘অপ’ উপসর্গ স্পষ্টভাবে বিরোধিতা বা নিচু ভাব প্রকাশ করে (যেমন: অপকারী, অপশব্দ)। তাই ‘অপ’ কিছুটা শক্তিশালী নেতিবাচক ভাব বহন করে।
• বাংলা ভাষায় ‘অপ’ উপসর্গ সংস্কৃত থেকে গৃহীত হয়ে ধীরে ধীরে আধুনিক বাংলা শব্দগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। এটি প্রায়ই এমন শব্দ তৈরি করে যা নৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক দিক থেকে নিন্দনীয় অর্থ বহন করে।
• শব্দগঠন বিশ্লেষণ করলে:
- 
মূল শব্দ: মান (সম্মান) 
- 
উপসর্গ: অপ (বিপরীত অর্থে) 
- 
গঠিত শব্দ: অপমান (সম্মানের বিপরীত বা অসম্মান) 
• এইভাবে দেখা যায়, ‘অপ’ উপসর্গটি শুধু অর্থের বিপরীততা নয়, বরং একটি নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের বিপরীত অবস্থা প্রকাশ করে।
সুতরাং, ‘অপমান’ শব্দের ‘অপ’ উপসর্গটি বিপরীত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, কারণ এটি ‘সম্মান’-এর বিপরীত অর্থ বা ভাব প্রকাশ করে।
 
                            
                        
                        
                        
                        
                        0
Updated: 1 day ago
'অর্বাচীন' শব্দের বিপরীত শব্দ কোনোটি?
Created: 1 day ago
A
নবীন
B
নির্বাচিত
C
প্রাচীন
D
বোকা
‘অর্বাচীন’ শব্দটি সাধারণত এমন ব্যক্তি বা বিষয়কে বোঝায় যিনি বা যা নতুন, অনভিজ্ঞ বা অল্প জ্ঞানসম্পন্ন। তাই এর বিপরীত শব্দ হবে এমন কিছু, যা পুরাতন, অভিজ্ঞ ও জ্ঞানসম্পন্ন বোঝায়। এই কারণেই এর বিপরীত শব্দ ‘প্রাচীন’। নিচে শব্দটির অর্থ ও ব্যবহার সম্পর্কিত বিশদ ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
অর্বাচীন শব্দটি সংস্কৃত উৎস থেকে এসেছে, যার অর্থ ‘নতুন’ বা ‘নবাগত’। এটি প্রায়ই এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যিনি কোনো বিষয়ে অল্প জ্ঞান রাখেন বা সদ্য কোনো কাজে প্রবেশ করেছেন। উদাহরণস্বরূপ, “অর্বাচীন লেখক” বলতে বোঝায় এমন একজন লেখক যিনি নতুন করে সাহিত্যজগতে এসেছেন এবং অভিজ্ঞতা কম।
প্রাচীন শব্দটি ‘অর্বাচীন’-এর একদম বিপরীত ধারণা বহন করে। এটি এমন ব্যক্তি, বস্তু বা চিন্তাধারাকে নির্দেশ করে যা দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান, অভিজ্ঞ এবং ঐতিহ্যবাহী। যেমন, “প্রাচীন সভ্যতা” বলতে বোঝায় বহুদিন পূর্বে প্রতিষ্ঠিত সভ্যতা, যার ইতিহাস ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ।
অর্থগতভাবে দেখা যায়—
• অর্বাচীন বোঝায় নতুন, অল্প অভিজ্ঞ, অপরিপক্ব, অথবা অল্প জ্ঞানসম্পন্ন।
• প্রাচীন বোঝায় পুরাতন, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী, বা ঐতিহ্যবাহী।
• তাই শব্দদ্বয়ের মধ্যে অর্থের দিক থেকে স্পষ্ট বিপরীত সম্পর্ক বিদ্যমান।
ব্যবহারিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি স্পষ্ট। যখন আমরা কাউকে অর্বাচীন বলি, তখন বোঝানো হয় যে তিনি এখনও শেখার পর্যায়ে আছেন। অন্যদিকে, প্রাচীন বা অভিজ্ঞ ব্যক্তি সাধারণত জানেন কীভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে হয়। ফলে এই দুটি শব্দ একই প্রেক্ষাপটে পরস্পরের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে।
ভাষাতাত্ত্বিকভাবে ‘অর্বাচীন’ শব্দটি অর্ + বাচীন থেকে গঠিত। ‘অর্’ মানে সাম্প্রতিক বা নতুন, আর ‘বাচীন’ মানে বলা বা বক্তা। ফলে শব্দটি মূলত নতুন বক্তা বা নবাগত অর্থে ব্যবহৃত। অন্যদিকে, ‘প্রাচীন’ এসেছে ‘প্র’ (অগ্রে) ও ‘অচীন’ (জানা) থেকে, যার অর্থ পূর্বে পরিচিত বা পুরোনো।
উদাহরণস্বরূপ:
• “সে একজন অর্বাচীন ছাত্র, এখনো অনেক কিছু শেখার বাকি।”
• “এই মন্দিরটি অত্যন্ত প্রাচীন, বহু শতাব্দী ধরে টিকে আছে।”
অতএব, শব্দের অর্থ, উৎস ও ব্যবহার—সব দিক থেকেই দেখা যায়, ‘অর্বাচীন’ শব্দের সঠিক বিপরীত শব্দ ‘প্রাচীন’।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 1 day ago
'নানা' শব্দের বিপরীত শব্দ কোনটি?
Created: 9 hours ago
A
তত
B
বহু
C
দুই
D
এক
‘নানা’ শব্দটি বহুত্ব বা বিভিন্নতার অর্থ প্রকাশ করে। এটি এমন অবস্থাকে বোঝায় যেখানে একাধিক বস্তু, ব্যক্তি বা রূপ একসঙ্গে বিদ্যমান থাকে। তাই এর বিপরীত ধারণা প্রকাশ করে এমন শব্দ হলো ‘এক’, যা একত্ব বা একমাত্র অবস্থার নির্দেশ করে।
- 
‘নানা’ শব্দের অর্থ বহু, বিভিন্ন, বিচিত্র বা নানান রকম। যেমন— নানা রঙের ফুল, নানা দেশের মানুষ ইত্যাদি। এখানে দেখা যায়, শব্দটি একাধিক উপাদানের উপস্থিতি বোঝায়। 
- 
এর বিপরীতে ‘এক’ শব্দটি একমাত্র বা একক সত্তাকে প্রকাশ করে। যেমন— একটি বই, একজন মানুষ, এক দেশ ইত্যাদি। অর্থাৎ এখানে কোনো বহুত্ব নেই, এককত্ব বা একতা বোঝানো হয়েছে। 
- 
ভাষাগত দৃষ্টিতে, ‘নানা’ একটি বিশেষণ, যা কোনো বিশেষ্যকে বর্ণনা করে তার বৈচিত্র্য বা বহুত্ব বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে ‘এক’ সংখ্যাবাচক বিশেষণ, যা সংখ্যায় একমাত্র বা একক বোঝায়। 
- 
বিপরীতার্থক শব্দ নির্ধারণে মূল ভিত্তি হলো অর্থের পরস্পরবিরোধিতা। ‘নানা’ বহুর অর্থ প্রকাশ করে, আর ‘এক’ এককের অর্থ প্রকাশ করে। তাই অর্থের দিক থেকে এ দুটির মধ্যে সরাসরি বিরোধ রয়েছে। 
- 
বাংলা ভাষায় বিপরীত শব্দ গঠনের ক্ষেত্রে প্রায়শই অর্থগত বিপরীততা, সংখ্যাগত পার্থক্য বা গুণগত বৈপরীত্য বিবেচনা করা হয়। এখানে সংখ্যাগত ও গুণগত উভয় দিক থেকেই ‘নানা’ ও ‘এক’ একে অপরের বিপরীত। 
- 
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— - 
নানা স্বভাবের মানুষ → এক স্বভাবের মানুষ 
- 
নানা দেশের পোশাক → এক দেশের পোশাক 
- 
নানা রকম খাবার → এক রকম খাবার 
 
- 
এই উদাহরণগুলোতে দেখা যায়, ‘নানা’ শব্দটি বৈচিত্র্য প্রকাশ করছে, আর ‘এক’ শব্দটি একরূপতা প্রকাশ করছে। তাই বিপরীত অর্থে সবচেয়ে সঠিক উত্তর হলো ‘এক’।
সুতরাং, ‘নানা’ শব্দের বিপরীত শব্দ ‘এক’— কারণ এটি অর্থগতভাবে একত্বের ধারণা প্রকাশ করে যা ‘নানা’-এর বহুত্বের সম্পূর্ণ বিপরীত।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 9 hours ago