কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন কোনটি?
A
২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ
B
২৫ বৈশাখ ১২৯৮ বঙ্গাব্দ
C
২৫ বৈশাখ ১২৭৬ বঙ্গাব্দ
D
কোনটিই নয়
উত্তরের বিবরণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক বিশেষ দিন হিসেবে চিহ্নিত। তিনি ছিলেন বিশ্বকবি, যিনি সাহিত্য, সংগীত, চিত্রকলা ও দর্শনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রেখে গেছেন। তাঁর জন্ম হয়েছিল ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দে (৭ মে ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। এই দিনটি প্রতিবছর “রবীন্দ্রজয়ন্তী” নামে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে পালিত হয়।
- 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতা ছিলেন মহার্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি তৎকালীন ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন। 
- 
তাঁর মাতা শারদা দেবী, যিনি ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ ও স্নেহশীলা নারী। 
- 
ঠাকুর পরিবারটি ছিল প্রভাবশালী ও শিক্ষিত—যেখানে সংগীত, সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা ছিল নিয়মিত। এই পরিবেশেই রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যিক প্রতিভা বিকশিত হয়। 
- 
ছোটবেলা থেকেই তিনি কবিতা লিখতে শুরু করেন। মাত্র আট বছর বয়সে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। 
- 
১৮৭৮ সালে তিনি ইংল্যান্ডে গিয়ে আইন পড়ার উদ্দেশ্যে ভর্তি হন, কিন্তু সাহিত্যের প্রতি প্রবল আকর্ষণের কারণে তিনি আইন শিক্ষা সম্পূর্ণ করেননি। 
- 
সাহিত্যজগতে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ (১৮৭৮) প্রকাশিত হয়, যা পাঠকদের নজর কাড়ে। 
- 
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বাংলা ভাষার প্রথম নোবেল বিজয়ী; তিনি ১৯১৩ সালে তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘গীতাঞ্জলি’-র জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। 
- 
তিনি শুধু কবি নন, বরং নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, সংগীতজ্ঞ ও দার্শনিক হিসেবেও সমানভাবে পরিচিত। 
- 
তাঁর লেখা দুটি গান—‘আমার সোনার বাংলা’ (বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত) এবং ‘জনগণমন’ (ভারতের জাতীয় সংগীত)—দুই দেশের জাতীয় মর্যাদায় স্থান পেয়েছে, যা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল এক উদাহরণ। 
- 
তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (১৯২১), যা শান্তিনিকেতনে অবস্থিত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য ছিল পূর্ব ও পশ্চিমের শিক্ষার সমন্বয় ঘটানো। 
- 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সাহিত্য ও মানবতার সেবা করে গেছেন। তাঁর মৃত্যু হয় ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ (৭ আগস্ট ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দ)। 
২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ দিনটি তাই শুধু একজন কবির জন্মদিন নয়, বরং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির নবজাগরণের সূচনা-বিন্দু। তাঁর জন্মদিনকে ঘিরে প্রতিবছর নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। তাঁর অমর সৃষ্টি আজও বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে বেঁচে আছে।
 
                            
                        
                        
                        
                        
                        0
Updated: 1 day ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুস্কারর লাভ করেন-
Created: 5 days ago
A
১৯০৫ সালে
B
১৯১৩ সালে
C
১৯২৩ সালে
D
১৯২৫ সালে
আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি
সাধারণ জ্ঞান
নোবেল পুরস্কার
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
অন্যান্য সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর সাহিত্যকীর্তি শুধু বাংলাতেই নয়, সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। সাহিত্য ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। নিচে তাঁর নোবেল প্রাপ্তির সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরা হলো।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এটি ছিল বাংলা ভাষার এবং সমগ্র এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার। এই পুরস্কার তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয় এবং বাংলা সাহিত্যের মর্যাদা বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করে।
- 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার পান তাঁর কাব্যগ্রন্থ “গীতাঞ্জলি”-র জন্য। ইংরেজিতে অনূদিত “Gitanjali: Song Offerings” বইটি ১৯১২ সালে লন্ডনে প্রকাশিত হয় এবং এর কাব্যিক ভাব, গভীর আধ্যাত্মিকতা ও মানবতার বার্তা পশ্চিমা পাঠক ও সমালোচকদের গভীরভাবে স্পর্শ করে। 
- 
১৯১৩ সালে সুইডিশ একাডেমি সাহিত্য ক্ষেত্রে এই অনন্য কীর্তির স্বীকৃতি হিসেবে তাঁকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করে। 
- 
গীতাঞ্জলির কবিতাগুলোতে রবীন্দ্রনাথ ঈশ্বর, মানবতা ও প্রকৃতির এক গভীর মিলন ঘটিয়েছেন। এর ভাষা সহজ অথচ ভাবগভীর, যা ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতা ও মানবিক অনুভূতিকে একত্রিত করেছে। 
- 
নোবেল প্রাপ্তির পর তাঁর খ্যাতি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি ভারতের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও চিন্তাধারার এক বিশ্বদূত হিসেবে পরিচিত হন। 
- 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাপ্তি শুধু একজন ব্যক্তির সম্মান নয়, এটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। 
- 
উল্লেখযোগ্য যে, তিনি তখনো ভারতের স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে এই সম্মান পান, যা উপনিবেশিক ভারতে এক বিরল ঘটনা ছিল। 
- 
গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকাটি লিখেছিলেন বিখ্যাত ইংরেজ কবি ডব্লিউ. বি. ইয়েটস (W. B. Yeats), যিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা দেখে গভীরভাবে মুগ্ধ হয়েছিলেন। 
- 
তাঁর এই অর্জন বিশ্বে প্রমাণ করে যে, পূর্বের সাহিত্যও পশ্চিমের সমান গভীরতা ও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ হতে পারে। 
সবশেষে বলা যায়, ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার অর্জন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন ও সাহিত্যজগতে এক অনন্য মাইলফলক। এটি শুধু তাঁর ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সমগ্র বাংলা জাতির গর্ব ও আত্মমর্যাদার প্রতীক।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 5 days ago