সিদ্ধ চালে কি পরিমাণ শ্বেতসার থাকে?
A
৭১%
B
৭৩%
C
৭৪%
D
৭৯%
উত্তরের বিবরণ
সিদ্ধ চাল বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য উপাদানগুলোর একটি। এটি কার্বোহাইড্রেটের একটি উৎকৃষ্ট উৎস, যা শরীরে শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। সিদ্ধ চালে শ্বেতসারের পরিমাণ অন্যান্য ধরনের চালের তুলনায় কিছুটা বেশি, তাই এটি শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত।
• সিদ্ধ চাল তৈরি করা হয় চালের দানা অল্প সিদ্ধ করে শুকিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে, ফলে এর পুষ্টিগুণ তুলনামূলকভাবে অক্ষুণ্ন থাকে।
• এতে প্রায় ৭৯% শ্বেতসার (Starch) থাকে, যা শরীরের জন্য প্রধান শক্তির জোগানদাতা উপাদান।
• শ্বেতসার আসলে একটি জটিল কার্বোহাইড্রেট, যা শরীরে গ্লুকোজে রূপান্তরিত হয়ে শক্তি সরবরাহ করে।
• সিদ্ধ চালের এই উচ্চ শ্বেতসার উপাদান একে দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার অপরিহার্য অংশে পরিণত করেছে।
• অন্য বিকল্পগুলো যেমন ৭১%, ৭৩%, ৭৪%—এসব পরিমাণ সাধারণত আধসিদ্ধ বা আতপ চালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, কিন্তু সিদ্ধ চালে তা আরও বেশি থাকে।
• সিদ্ধ চাল শুধু শ্বেতসারে নয়, এতে কিছু পরিমাণ প্রোটিন (৬–৭%), চর্বি (০.৩–০.৫%) এবং আঁশ (০.২–০.৫%) বিদ্যমান।
• এটি হজমে সহজ এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, এজন্য শ্রমজীবী মানুষের খাদ্যতালিকায় এর ব্যবহার বেশি।
• সিদ্ধ চাল তৈরির সময় চালের বাইরের স্তরে থাকা ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স দানার ভেতরে চলে আসে, ফলে এটি পুষ্টিকর হয়।
• এই চাল থেকে প্রাপ্ত শক্তি শরীরের দৈনন্দিন কার্যক্রম, পেশীর কাজ এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।
• বাংলাদেশে গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন প্রায় ৪০০–৫০০ গ্রাম চাল খেয়ে তার দৈনিক শক্তির প্রয়োজনীয়তার বড় অংশ পূরণ করে।
• ৭৯% শ্বেতসারযুক্ত সিদ্ধ চাল তাই শুধুমাত্র খাদ্য নয়, বরং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
• সিদ্ধ চালের আরেকটি উপকারিতা হলো এটি সংরক্ষণে তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ভালো থাকে এবং রান্নার পর নরম ও সুস্বাদু হয়।
সুতরাং, বলা যায় যে সিদ্ধ চালে প্রায় ৭৯% শ্বেতসার থাকে, যা একে শক্তি সরবরাহের জন্য সবচেয়ে কার্যকর খাদ্যদ্রব্যে পরিণত করেছে।
 
                            
                        
                        
                        
                        
                        0
Updated: 1 day ago
মানবদেহে হাড় ও দাত গঠন এবং ফসফোলিপিড তৈরি করে কোন খনিজ লবণ ?
Created: 1 day ago
A
ফসফরাস
B
লৌহ
C
সোডিয়াম
D
ম্যাগনেসিয়াম
মানবদেহে হাড় ও দাঁতের গঠন প্রক্রিয়ায় ফসফরাস একটি অপরিহার্য খনিজ লবণ হিসেবে কাজ করে। এটি দেহের গঠনমূলক উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা শুধু হাড় ও দাঁত মজবুত করতেই নয়, বরং কোষের বিভিন্ন জৈব প্রক্রিয়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিচে ফসফরাসের কাজ ও গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
• ফসফরাসের মৌলিক ভূমিকা
ফসফরাস দেহে প্রধানত ক্যালসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ক্যালসিয়াম ফসফেট তৈরি করে, যা হাড় ও দাঁতের দৃঢ়তা নিশ্চিত করে। এই যৌগ ছাড়া মানুষের কঙ্কাল কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দাঁত সহজেই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
• ফসফোলিপিড তৈরিতে ফসফরাসের ভূমিকা
কোষের ঝিল্লি বা মেমব্রেন গঠনের একটি মূল উপাদান হলো ফসফোলিপিড, যা ফসফরাস দ্বারা তৈরি হয়। এটি কোষকে স্থিতিশীল রাখে এবং কোষের ভেতরে-বাইরে পদার্থের আদান-প্রদানে সাহায্য করে।
• শক্তি উৎপাদনে অংশগ্রহণ
ফসফরাসের মাধ্যমে দেহে ATP (Adenosine Triphosphate) নামক শক্তি অণু তৈরি হয়। এটি কোষে শক্তির মুদ্রা হিসেবে কাজ করে এবং দেহের প্রায় সব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে।
• DNA ও RNA গঠনে ফসফরাসের ভূমিকা
জিনগত উপাদান DNA ও RNA উভয়ই ফসফরাস বহন করে। এই উপাদানটি কোষ বিভাজন, উত্তরাধিকার সংরক্ষণ এবং প্রোটিন সংশ্লেষণে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
• অ্যাসিড-বেস ভারসাম্য রক্ষা
ফসফরাস রক্তের pH ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি দেহে অ্যাসিডিক ও ক্ষারীয় অবস্থার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে, যা কোষের স্বাভাবিক কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য।
• ফসফরাসের অভাবজনিত সমস্যা
ফসফরাসের অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায়, দাঁত ভঙ্গুর হয় এবং দেহে ক্লান্তি দেখা দেয়। দীর্ঘমেয়াদে এর ঘাটতি রিকেটস বা অস্টিওম্যালেশিয়ার মতো রোগ সৃষ্টি করতে পারে।
• ফসফরাসের উৎস
দুধ, মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, বাদাম, ও পূর্ণ শস্যজাতীয় খাবারে ফসফরাস প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। নিয়মিত এ ধরনের খাবার গ্রহণ দেহে ফসফরাসের ঘাটতি পূরণ করে।
• অন্যান্য বিকল্পগুলোর ব্যাখ্যা
লৌহ (Iron) রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে কিন্তু হাড় বা ফসফোলিপিড গঠনে নয়।
সোডিয়াম (Sodium) শরীরের পানি ভারসাম্য ও স্নায়ুতন্ত্রের কাজ নিয়ন্ত্রণ করে।
ম্যাগনেসিয়াম (Magnesium) এনজাইম কার্যক্রমে সাহায্য করে, তবে হাড় ও দাঁতের মূল গঠনকারী উপাদান নয়।
সবশেষে বলা যায়, ফসফরাস মানবদেহে হাড়, দাঁত ও কোষ ঝিল্লি গঠনে অপরিহার্য খনিজ। এটি ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিলে শরীরের কাঠামোগত দৃঢ়তা, শক্তি উৎপাদন ও জৈব প্রক্রিয়ার মূল ভিত্তি তৈরি করে।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 1 day ago
একক ভরের কোনো বস্তুর ওজন বিষুবীয় অঞ্চলে কত?
Created: 1 day ago
A
৯.৭৯ নিউটন
B
৯.৭৮ নিউটন
C
৯.৮১ নিউটন
D
৯.৮৩ নিউটন
পৃথিবীর প্রতিটি স্থানে অভিকর্ষজ ত্বরণ বা মাধ্যাকর্ষণ বল সমান নয়। এটি অক্ষাংশ ও উচ্চতার তারতম্যের কারণে পরিবর্তিত হয়। বিষুবরেখায় পৃথিবীর ব্যাসার্ধ সবচেয়ে বেশি এবং ঘূর্ণনজনিত কারণে সেখানে কেন্দ্রাতিগ বলও কার্যকর হয়, যার ফলে ওজন কিছুটা কমে যায়। তাই একক ভরের কোনো বস্তুর ওজন বিষুবীয় অঞ্চলে হয় ৯.৭৮ নিউটন।
• পৃথিবীর ঘূর্ণনের ফলে একটি কেন্দ্রাতিগ বল সৃষ্টি হয় যা বস্তুটিকে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরে ঠেলে দেয়। এই বল সর্বাধিক থাকে বিষুবরেখায় এবং মেরুর দিকে শূন্য হয়।
• বিষুবরেখায় পৃথিবীর ব্যাসার্ধ প্রায় ৬,৩৭৮ কিলোমিটার, আর মেরুতে এটি প্রায় ৬,৩৫৭ কিলোমিটার। এই ব্যাসার্ধের পার্থক্যের কারণে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্ব বিষুব অঞ্চলে বেশি হয়, ফলে অভিকর্ষজ আকর্ষণ কমে যায়।
• অভিকর্ষজ ত্বরণ (g) বিষুবরেখায় প্রায় ৯.৭৮ মিটার/সেকেন্ড² এবং মেরু অঞ্চলে প্রায় ৯.৮৩ মিটার/সেকেন্ড²। অর্থাৎ, বিষুবরেখায় ওজন কিছুটা কম হয়।
• ওজন নির্ভর করে সূত্র W = mg এর ওপর, যেখানে m হলো ভর এবং g হলো অভিকর্ষজ ত্বরণ। যেহেতু বিষুবীয় অঞ্চলে g এর মান ৯.৭৮, তাই একক ভরের বস্তুর ওজনও হবে ৯.৭৮ নিউটন।
• উদাহরণ হিসেবে, যদি ১ কেজি ভরের কোনো বস্তু বিষুবরেখায় রাখা হয়, তবে তার ওজন হবে ৯.৭৮ নিউটন, কিন্তু মেরু অঞ্চলে সেটি হবে ৯.৮৩ নিউটন।
• পৃথিবীর আকৃতি চ্যাপ্টা গোলক (Oblate spheroid)—এই আকারের কারণেই অভিকর্ষজ বল সর্বত্র এক নয়। বিষুবরেখা ফোলা এবং মেরু চ্যাপ্টা হওয়ায় মেরু অঞ্চলে কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থান করে, ফলে সেখানে আকর্ষণ বেশি হয়।
• এছাড়াও, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা যত বাড়ে, পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে দূরত্বও তত বৃদ্ধি পায়, ফলে উচ্চ স্থানগুলোতে g এর মান আরও কম হয়।
• এই পার্থক্যটি দৈনন্দিন জীবনে খুব সূক্ষ্মভাবে অনুভূত হয়, কিন্তু পদার্থবিদ্যায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপগ্রহের কক্ষপথ নির্ণয়, ওজন পরিমাপ বা মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে এই পরিবর্তন বিবেচনায় নেওয়া হয়।
• সংক্ষেপে বলা যায়, পৃথিবীর ঘূর্ণন, ব্যাসার্ধের পার্থক্য ও কেন্দ্রাতিগ বল—এই তিনটি কারণেই বিষুবরেখায় ওজন কম হয়। তাই একক ভরের বস্তুর ওজন বিষুবীয় অঞ্চলে ৯.৭৮ নিউটন।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 1 day ago
স্যাটেলাইট কোন বলের কারণে ঘুরতে থাকে?
Created: 1 day ago
A
অভিকর্ষজ ত্বরণ
B
মাধ্যাকর্ষণ বল
C
আপেক্ষিক বল
D
সমান্তরাল বল
স্যাটেলাইট বা উপগ্রহ পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে থাকে একটি নির্দিষ্ট বলের প্রভাবে। এই বল হলো মাধ্যাকর্ষণ বল, যা পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে সবকিছুকে আকর্ষণ করে। স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে রাখার জন্য এই বল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হলো।
• মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাব: পৃথিবী প্রতিটি বস্তুর উপর আকর্ষণ বল প্রয়োগ করে, যাকে মাধ্যাকর্ষণ বল বলে। স্যাটেলাইট পৃথিবীর চারপাশে ঘুরতে পারে কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তাকে নিজের দিকে টেনে রাখে।
• কেন্দ্রমুখী বল হিসেবে ভূমিকা: স্যাটেলাইট চলার সময় এই মাধ্যাকর্ষণ বলই কেন্দ্রমুখী বল হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ, স্যাটেলাইট কক্ষপথ থেকে ছিটকে না পড়ে বরং নির্দিষ্ট পথে ঘুরতে থাকে।
• বেগ ও বলের ভারসাম্য: স্যাটেলাইটের ঘূর্ণন বেগ ও মাধ্যাকর্ষণ বলের মধ্যে একটি ভারসাম্য থাকে। এই ভারসাম্যের কারণে স্যাটেলাইট স্থিতিশীল কক্ষপথে থেকে যায়। যদি গতি খুব কম হয়, তবে এটি পৃথিবীতে পড়ে যাবে; আবার গতি বেশি হলে কক্ষপথ ছেড়ে মহাকাশে ছিটকে পড়বে।
• উদাহরণ: যেমন—বাংলাদেশের যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের কারণেই নির্দিষ্ট কক্ষপথে থেকে কাজ করছে।
• অভিকর্ষজ ত্বরণ নয়: বিকল্প (ক)-এর অভিকর্ষজ ত্বরণ মূলত পৃথিবীর আকর্ষণ বলের কারণে সৃষ্ট ত্বরণ। তবে স্যাটেলাইটের কক্ষপথে অবস্থানের প্রধান কারণ এটি নয়, বরং মাধ্যাকর্ষণ বলই তাকে ধরে রাখে।
• আপেক্ষিক বলের ধারণা: বিকল্প (গ)-এর আপেক্ষিক বল কেবলমাত্র ভিন্ন ফ্রেমে গতি তুলনা করতে ব্যবহৃত হয়, যা স্যাটেলাইটের কক্ষপথে থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
• সমান্তরাল বলের ভুল ধারণা: বিকল্প (ঘ)-এর সমান্তরাল বল দুটি বস্তুর উপর সমদিকীয় বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, যা স্যাটেলাইটের ঘূর্ণন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।
• বৈজ্ঞানিক ভিত্তি: ইংরেজ বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন প্রথম প্রমাণ করেছিলেন যে, পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলই চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহের গতি নিয়ন্ত্রণ করে। তাঁর গতি সূত্র ও সর্বজনীন মহাকর্ষ সূত্র এই ধারণাকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।
• উপসংহার: তাই বলা যায়, স্যাটেলাইটকে কক্ষপথে ধরে রাখার মূল কারণ হলো মাধ্যাকর্ষণ বল। এটি ছাড়া স্যাটেলাইট তার নির্দিষ্ট পথ ধরে ঘুরতে পারত না।
 
                                    
                                
                                
                                
                                0
Updated: 1 day ago