কখনো কখনো শিলাবৃষ্টি হয়। এ ধরনের বৃষ্টির কারণ কি ?
A
মেঘের পানির কণা খুবই উত্তপ্ত হয়ে যায়
B
মেঘে পানিকণারর চেয়ে ক্লোরিনের পরিমান বেশি হয়ে গেলে
C
মেঘের পানির কণার সাথে বাতাসের ভাসমান রাসাউওনিক পদার্থের বিক্রিয়ার ফলে
D
মেঘের পানির কণা খুব ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায়
উত্তরের বিবরণ
শিলাবৃষ্টি একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যা ঘটে বিশেষ ধরনের মেঘে—বিশেষত কিউমুলোনিম্বাস (Cumulonimbus) মেঘে। এই মেঘের অভ্যন্তরে তীব্র বায়ুপ্রবাহের কারণে পানিকণা ওপরে নিচে ঘুরতে থাকে। যখন এই পানিকণাগুলো খুব ঠান্ডা অঞ্চলে পৌঁছায়, তখন তারা বরফে পরিণত হয়। এই বরফ কণাগুলো ক্রমে বড় হতে হতে শিলা আকারে পৃথিবীতে পতিত হয়। এ কারণেই বলা হয়, শিলাবৃষ্টি ঘটে মেঘের পানিকণা খুব ঠান্ডা হয়ে যাওয়ায়।
• শিলাবৃষ্টির সৃষ্টি প্রক্রিয়া: আর্দ্র বায়ু উপরে উঠলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কমে যায়। এতে মেঘের ভেতর থাকা পানিকণাগুলো জমে বরফের টুকরোতে পরিণত হয়। যখন এই বরফ কণাগুলো ওজনের কারণে নিচে পড়ে, তখনই আমরা শিলাবৃষ্টি দেখি।
• তীব্র উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহের ভূমিকা: কিউমুলোনিম্বাস মেঘে তীব্র উর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহ বরফ কণাগুলোকে বারবার উপরে নিচে ঠেলে দেয়। এতে বরফ কণাগুলোর চারপাশে আরও পানি জমে নতুন স্তর তৈরি হয়, ফলে শিলাগুলো বড় হতে থাকে।
• তাপমাত্রার প্রভাব: শিলাবৃষ্টি সাধারণত তখনই হয় যখন মেঘের উপরের অংশের তাপমাত্রা ০° সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়। এত নিম্ন তাপমাত্রায় পানিকণা দ্রুত বরফে রূপান্তরিত হয়।
• শিলার গঠন ও আকার: প্রতিটি শিলা মূলত একাধিক বরফস্তর দ্বারা গঠিত। এতে কখনো মসৃণ আবার কখনো রুক্ষ পৃষ্ঠ দেখা যায়। শিলার আকার কয়েক মিলিমিটার থেকে কয়েক সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
• শিলাবৃষ্টির সময় ও স্থান: এটি সাধারণত গ্রীষ্মকালে বা বর্ষার শুরুতে ঘটে, যখন তাপমাত্রা হঠাৎ পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে উষ্ণ ও আর্দ্র এলাকায়, যেমন বাংলাদেশেও মাঝে মাঝে শিলাবৃষ্টি দেখা যায়।
• অন্য বিকল্পগুলোর ত্রুটি:
– ক) বিকল্পটি ভুল, কারণ শিলাবৃষ্টিতে মেঘের পানিকণা উত্তপ্ত নয়, বরং ঠান্ডা হয়।
– খ) বিকল্পটি অযৌক্তিক, কারণ মেঘে ক্লোরিনের উপস্থিতি নেই বা এর কোনো ভূমিকা নেই।
– গ) বিকল্পটিও ভুল, কারণ রাসায়নিক বিক্রিয়া নয়, তাপমাত্রা ও বায়ুপ্রবাহই প্রধান কারণ।
• অর্থনৈতিক প্রভাব: শিলাবৃষ্টি অনেক সময় কৃষিক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হয়। ফসল, ফলমূল ও গাছপালা নষ্ট হয়, এমনকি ঘরবাড়ির ছাদও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
• প্রতিরোধের উপায়: শিলাবৃষ্টির আগাম পূর্বাভাস জানার জন্য আবহাওয়া অধিদপ্তর আধুনিক রাডার ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কৃষকরা এসব তথ্য জেনে ফসল সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে পারেন।
সবশেষে বলা যায়, শিলাবৃষ্টি একটি স্বাভাবিক কিন্তু আকস্মিক বায়ুমণ্ডলীয় ঘটনা, যা মূলত মেঘের পানিকণার অত্যধিক ঠান্ডা হয়ে বরফে পরিণত হওয়ার ফলেই ঘটে।
0
Updated: 1 day ago
ভূ-ত্বকের মোট আয়তনের কত শতাংশ পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত?
Created: 3 weeks ago
A
৫%
B
২৫%
C
৫০%
D
৭৫%
পাললিক শিলা হলো সেই ধরনের শিলা যা পলি সঞ্চিত হয়ে গঠিত হয়। এগুলো সাধারণত স্তরীভূত এবং বিভিন্ন জীবাশ্ম ধারণ করে, তাই মানুষের দৈনন্দিন জীবনে এদের ব্যবহার ব্যাপক।
-
উদাহরণ: চুনাপাথর, বেলেপাথর, পাথুরিয়া কয়লা, সৈন্ধব লবণ, খড়িমাটি ইত্যাদি।
-
পাললিক শিলা মূলত পলল বা তলানি থেকে গঠিত, তাই এটিকে পাললিক শিলা বলা হয়।
-
শিলার পলি সাধারণত স্তরে স্তরে সঞ্চিত হয়, ফলে এটিকে স্তরীভূত শিলা হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়।
-
পাললিক শিলা ভূ-ত্বকের মোট আয়তনের প্রায় ৫% গঠন করে, কিন্তু মহাদেশীয় ভূ-ত্বকের উন্মুক্ত অংশের প্রায় ৭৫% পাললিক শিলায় গঠিত।
-
প্রধান বৈশিষ্ট্য: স্তরীভূত, জীবাশ্ম বিশিষ্ট, অকেলাসিত, তরঙ্গচিহ্নযুক্ত, কোমল।
-
প্রধান প্রকারভেদ:
১. যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠিত: উদাহরণ—বেলেপাথর।
২. রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় গঠিত: উদাহরণ—চুনাপাথর।
৩. জৈবিক উপায়ে গঠিত: উদাহরণ—বাংলাদেশের জামালগঞ্জের কয়লা ও গোপালগঞ্জের পিট কয়লা।
0
Updated: 3 weeks ago
পৃথিবীর প্রথম পর্যায়ে সৃষ্ট শিলাকে কী বলা হয়?
Created: 1 month ago
A
জীবাশ্ম শিলা
B
পাললিক শিলা
C
আগ্নেয় শিলা
D
রূপান্তরিত শিলা
শিলা (Rocks):
-
সংজ্ঞা: ভূত্বক যেসব উপাদান দ্বারা গঠিত, তাদের সাধারণ নাম শিলা।
-
গঠন: দুই বা ততোধিক খনিজ দ্রব্যের সংমিশ্রণে শিলার সৃষ্টি হয়।
-
উদাহরণ: নুড়ি, কাঁকর, গ্রানাইট, কাদা, বালি ইত্যাদি।
-
শ্রেণীবিন্যাস (৩টি প্রধান):
১. আগ্নেয় শিলা (Igneous Rocks)
২. পাললিক শিলা (Sedimentary Rocks)
৩. রূপান্তরিত শিলা (Metamorphic Rocks)
১. আগ্নেয় শিলা (Igneous Rocks):
-
উৎপত্তি: পৃথিবীর প্রথমে গ্যাসপিণ্ড গলিত হয়ে ক্রমশ ঘনীভূত হয়। গলিত অবস্থার শিলা কঠিন হয়ে আগ্নেয় শিলা গঠন করে।
-
বৈশিষ্ট্য:
-
স্ফটিকাকার
-
অস্তরীভূত
-
কঠিন ও কম ভঙ্গুর
-
জীবাশ্ম নেই
-
অপেক্ষাকৃত ভারী
-
-
উৎপাদনের উদাহরণ: ব্যাসল্ট, গ্রানাইট
-
অন্য নাম: প্রাথমিক শিলা, অস্তরীভূত শিলা
প্রকার:
ক) বহিঃজ আগ্নেয় শিলা (Extrusive Igneous Rocks):
-
ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের বাইরে বের হয়ে শীতল হলে গঠিত।
-
বৈশিষ্ট্য: সূক্ষ্ম দানা, গাঢ় রং।
-
উদাহরণ: ব্যাসল্ট, রায়োলাইট, অ্যান্ডিসাইট
খ) অন্তঃজ আগ্নেয় শিলা (Intrusive Igneous Rocks):
-
ম্যাগমা ভূপৃষ্ঠের নিচে জমাট বাঁধলে তৈরি।
-
বৈশিষ্ট্য: স্থূল দানা, হালকা রঙ।
-
উদাহরণ: গ্রানাইট, গ্যাব্রো, ডলোরাইট, ল্যাকোলিথ, ব্যাথোলিথ, ডাইক, সিল
উৎস: ভূগোল ও পরিবেশ, নবম-দশম শ্রেণি।
0
Updated: 1 month ago
এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী গ্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
CH4
B
NH3
C
CO2
D
SO2
এসিড বৃষ্টি হলো এমন বৃষ্টি যার pH মান 5.6 এর কম হয়। এটি সাধারণত মানুষের কার্যকলাপ থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণের ফল। কলকারখানা ও শিল্পাঞ্চলে এই বৃষ্টির pH প্রায় 5.6 থেকে 3.5 পর্যন্ত থাকে। এসিড বৃষ্টির প্রধান কারণ হলো সালফার ডাই অক্সাইড (SO2) এবং নাইট্রোজেন অক্সাইডসমূহ (NO, NO2)।
এসিড বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব:
-
শিল্প এলাকা থেকে নির্গত SO2 বৃষ্টির পানিতে দ্রবীভূত হয়ে এসিড বৃষ্টি সৃষ্টি করে।
-
'তাজমহল'-এর মার্বেল পাথর এবং ধাতব ব্রিজ ও অট্টালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
-
জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ আক্রান্ত হয়; কম pH পানিতে মাছের ডিমের হ্যাচিং প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হয়।
-
বৃষ্টিবন (rain forest) ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বীজের অঙ্কুরোদ্গম ব্যাহত হয়।
-
মাটির ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম ও জিঙ্ক যৌগ ধুয়ে মাটি অনুর্বর হয়ে যায়।
এসিড বৃষ্টির প্রতিকার:
-
পুকুর, হ্রদ ও কৃষি জমিতে চুন বা লাইম ছিটিয়ে অতিরিক্ত এসিডকে ক্যালসিয়াম লবণে রূপান্তর করা।
-
ট্রপোস্ফিয়ারকে SO2 এবং NOx মুক্ত রাখা, যার জন্য শিল্পক্ষেত্রে FGD প্ল্যান্ট এবং মোটরগাড়িতে ক্যাটালাইটিক কনভার্টার ব্যবহার করা হয়।
অতিরিক্তভাবে, কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2), কার্বন মনোঅক্সাইড (CO) এবং নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী নয়। CO2 কেবল দুর্বল কার্বনিক এসিড (H2CO3) তৈরি করে, যা এসিড বৃষ্টি সৃষ্টি করতে সক্ষম নয়।
0
Updated: 1 month ago