মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি কে?
A
করিম উদ্দিন
B
হাবিব মিয়া
C
মতলব মিয়া
D
ছফা মিয়া
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যজগতে মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে বহু গল্প ও উপন্যাস রচিত হয়েছে, যার মধ্যে “মেঘনা নদীর মাঝি” প্রসিদ্ধ একটি গল্প। এই গল্পে নদীর মাঝি চরিত্রের মাধ্যমে লেখক গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র, নদী নির্ভর মানুষের সংগ্রাম এবং নৌচালনার দক্ষতা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাহিনিতে মতলব মিয়া হচ্ছেন মেঘনা নদীর সবচেয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মাঝি।
নিচে বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হলো—
-
মতলব মিয়ার পরিচয়: তিনি পেশায় একজন মাঝি, যিনি মেঘনা নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর নৌকা চালানোর দক্ষতা, নদীর গতিপথ বোঝার ক্ষমতা এবং ঝড়-জল মোকাবিলার সাহস তাকে অন্য মাঝিদের মধ্যে আলাদা করে তুলেছে।
-
দক্ষতার পরিচয়: মতলব মিয়া মেঘনা নদীর প্রতিটি বাঁক, স্রোত, ভাটির ঢেউ, এমনকি কুয়াশার মধ্যে নৌকা চালানোর পথ পর্যন্ত জানেন। তিনি জানেন কখন পাল তোলা নিরাপদ, কখন নৌকা থামানো উচিত, আর কোথায় নদীর স্রোত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
-
নদী ও জীবনের সম্পর্ক: তাঁর জীবনে নদী কেবল জীবিকার উৎস নয়, এটি তাঁর জীবনের সঙ্গীও বটে। নদীর প্রতিটি ঢেউ যেন তাঁর সঙ্গে কথা বলে, যা তাঁর আত্মার সঙ্গে মিশে আছে।
-
সংগ্রামী চরিত্র: মতলব মিয়া সমাজের সাধারণ এক মানুষ, কিন্তু নিজের পেশায় তিনি নিবেদিতপ্রাণ। নদীতে ঝড় উঠলেও তিনি ভয় পান না। জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করাই তার দৈনন্দিন বাস্তবতা।
-
নৈতিক গুণাবলি: দক্ষতার পাশাপাশি তিনি সৎ, সাহসী ও পরিশ্রমী। অন্য মাঝিরা যখন নদীর ভয়াবহ স্রোত দেখে পিছিয়ে যায়, তখন মতলব মিয়া দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে নৌকার হাল ধরে রাখেন।
-
প্রতীকী অর্থে: সাহিত্যিকভাবে মতলব মিয়া বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতীক, যারা পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং সাহসের মাধ্যমে জীবনের অনিশ্চয়তাকে জয় করে।
-
গল্পের শিক্ষা: এই চরিত্র আমাদের শেখায় যে দক্ষতা ও সাহস একসাথে থাকলে মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারে। মতলব মিয়া তার জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোতেও ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস হারাননি।
সবশেষে বলা যায়, মতলব মিয়া কেবল মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি নন, তিনি নদীজীবনের প্রতীকও বটে। তাঁর মাধ্যমে লেখক দেখিয়েছেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা মানুষের আসল শক্তি নিহিত থাকে পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা ও সাহসের মধ্যে।
0
Updated: 1 day ago
বিভা : কিরণ :: সুবলিত: ?
Created: 1 day ago
A
সুবিদিত
B
সুগঠিত
C
সুবিনীত
D
বিধিত
“বিভা” অর্থ আলোক বা উজ্জ্বলতা, আর “কিরণ” হচ্ছে সেই আলোকের প্রকাশ। অর্থাৎ, কিরণ বিভার ফল বা প্রকাশ। একইভাবে, “সুবলিত” মানে হচ্ছে সুন্দরভাবে গঠিত বা সাজানো কিছু। তাই এর সঙ্গে অর্থগতভাবে মিলবে “সুগঠিত”, কারণ এটি বোঝায় সুসংগঠিত বা সুন্দরভাবে নির্মিত কিছু।
-
বিভা মানে আলো বা দীপ্তি, যা প্রকাশ পায় কিরণে। কিরণ হলো বিভার প্রতিফলন।
-
সুবলিত মানে ভালোভাবে গঠিত বা সাজানো। এটি সৌন্দর্য ও পরিপূর্ণতার ইঙ্গিত দেয়।
-
সুগঠিত অর্থও একই ধরনের — অর্থাৎ, সুন্দরভাবে গঠিত বা শক্তভাবে নির্মিত কিছু।
-
দুই শব্দেই “সু” উপসর্গ রয়েছে, যা ভালো বা সুন্দর বোঝায়, এবং “গঠিত” শব্দটি “বলিত”-এর মতো গঠন বা বিন্যাসের ধারণা বহন করে।
-
এই কারণে “সুবলিত” ও “সুগঠিত” শব্দের মধ্যে সম্পর্ক “বিভা” ও “কিরণ”-এর মতোই — একটির মূল ভাব অপরটির প্রকাশ বা ফল।
অন্য বিকল্পগুলো কেন ভুল তা দেখা যাক:
-
সুবিদিত মানে সুপরিচিত বা বিখ্যাত, যা “সুবলিত”-এর সঙ্গে অর্থে মেলে না।
-
সুবিনীত মানে ভদ্র বা মার্জিত, যা গঠন বা বিন্যাসের ধারণা বহন করে না।
-
বিধিত মানে নির্ধারিত বা স্থির করা, যা “সুবলিত”-এর অর্থগত সম্পর্কের বাইরে।
তাই সবচেয়ে উপযুক্ত উত্তর হলো “সুগঠিত”, কারণ এটি “সুবলিত”-এর অর্থের সঙ্গে সমার্থক ও সম্পর্কযুক্ত।
0
Updated: 1 day ago
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি-
Created: 1 day ago
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
কাজী নজ্রুল ইসলাম
D
ফররুখ আহমেদ
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে যিনি প্রথম বিদ্রোহী মনোভাব নিয়ে সাহিত্যকে নতুন ধারায় রূপ দিয়েছিলেন তিনি হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তাঁর সাহিত্যকর্মে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য, সমাজবিরোধী চিন্তা, ধর্মীয় কুসংস্কারের প্রতিবাদ এবং ইউরোপীয় ধ্যানধারণার প্রভাব স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি বাংলা কবিতায় যে আধুনিকতার সূচনা করেছিলেন, সেটি পরবর্তী প্রজন্মের সাহিত্যিকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিল।
তিনি তাঁর সাহিত্যজীবনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছিলেন যে সাহিত্য কেবল বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং চিন্তার বিপ্লব ঘটানোর এক শক্তিশালী অস্ত্র।
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪–১৮৭৩) জন্মগ্রহণ করেন যশোর জেলার সাগরদাঁড়িতে। তিনি ছিলেন ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত প্রথমদিকের বাঙালিদের একজন, যিনি পশ্চিমা চিন্তাধারায় প্রভাবিত হয়ে সাহিত্য রচনায় যুক্ত হন।
-
তাঁর রচনাশৈলীতে বিদ্রোহ দেখা যায় ধর্মীয় গোঁড়ামি, সামাজিক কুসংস্কার ও প্রথাবদ্ধ ধ্যানধারণার বিরুদ্ধে। তিনি প্রচলিত সংস্কারকে ভাঙতে চেয়েছিলেন এবং সমাজে নতুন আলো জ্বালাতে সচেষ্ট ছিলেন।
-
বাংলা কাব্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রবর্তনের কৃতিত্ব তাঁর। এই ছন্দে লেখা ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য সৃষ্টি হিসেবে স্বীকৃত।
-
তাঁর কবিতায় মানবজীবনের দুঃখ, সংগ্রাম, প্রেম, অহংকার ও বিদ্রোহ—সবকিছুর মিলন ঘটেছে। বিশেষত, রাবণের চরিত্রকে তিনি এক বীরের প্রতীকে রূপ দিয়েছেন, যা বিদ্রোহী চিন্তারই প্রকাশ।
-
‘তিলোত্তমা সম্ভব’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’, ও ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’—এসব রচনায় সমাজ, ধর্ম ও নৈতিকতার প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে তাঁর চিন্তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।
-
তিনি খ্রিষ্টান ধর্মে দীক্ষিত হয়ে সমাজের তীব্র বিরোধিতার শিকার হন, কিন্তু তাতেও তিনি নিজের আদর্শে অবিচল ছিলেন। এই সাহস ও আত্মবিশ্বাসই তাঁকে বিদ্রোহী কবির মর্যাদায় উন্নীত করেছে।
-
তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে বাংলা ভাষা পেয়েছে এক নতুন রূপ, যেখানে ভাবের গভীরতা ও শব্দচয়নের সৌন্দর্য একসঙ্গে মিশে গেছে।
-
মধুসূদন বাংলা নাটককেও আধুনিক রূপ দেন। তাঁর ‘শর্মিষ্ঠা’ ও ‘পদ্মাবতী’ নাটকে পাশ্চাত্য নাট্যরীতির প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
সুতরাং, মাইকেল মধুসূদন দত্তই আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি, যিনি পুরনো সাহিত্যধারাকে ভেঙে নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন। তাঁর এই বিদ্রোহই পরবর্তীতে কাজী নজরুল ইসলামের মতো কবিদের পথ দেখিয়েছে।
0
Updated: 1 day ago
কোনটি ঠিক?
Created: 3 days ago
A
রৌদ্র করোটিতে-ভ্রমণ কাহিনী
B
রাইফেল রোটি আওরাত-নাটক
C
সোজবাদিয়ার ঘাট-সিনেমা
D
ঘর মন জানালা-উপন্যাস
“ঘর মন জানালা” একটি উপন্যাস, যা আধুনিক জীবনের জটিলতা, মানুষের অন্তর্দ্বন্দ্ব ও সমাজবাস্তবতার সূক্ষ্ম চিত্র তুলে ধরে। প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে এটি-ই সঠিক উত্তর, কারণ অন্যান্য রচনাগুলো ভিন্ন ঘরানার সাহিত্যকর্ম।
এই উপন্যাসে লেখক মানুষের মানসিক দিক, সামাজিক অবস্থান এবং পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়েন অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে উপস্থাপন করেছেন। গল্পের গঠন, ভাষা ও বর্ণনার ধরণ উপন্যাসের স্বাভাবিক রীতি অনুসারে তৈরি, যা একে অন্যান্য ঘরানার থেকে স্পষ্টভাবে পৃথক করেছে।
-
উপন্যাসের মূল বৈশিষ্ট্য হলো চরিত্র, ঘটনা ও পরিবেশের মাধ্যমে জীবনের বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরা। “ঘর মন জানালা”-তে লেখক এই তিনটি উপাদানকে দক্ষতার সঙ্গে একত্র করেছেন।
-
গল্পে বাস্তবতা ও মানসিক গভীরতার সমন্বয় রয়েছে, যা পাঠককে চরিত্রদের অনুভূতি ও সংগ্রামের সঙ্গে একাত্ম করে তোলে।
-
লেখক এখানে সমাজ ও পারিবারিক মূল্যবোধের পরিবর্তন, মানুষের একাকিত্ব এবং ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষাকে কেন্দ্র করে কাহিনি বিন্যাস করেছেন, যা উপন্যাসের জন্য আদর্শ বিষয়।
-
ভাষা ও শৈলী সহজ হলেও গভীর আবেগময়। এতে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ যেমন আছে, তেমনি বাস্তব জীবনের টানাপোড়েনও ফুটে উঠেছে।
-
“ঘর মন জানালা” নামটিও প্রতীকী— ‘ঘর’ মানে পারিবারিক পরিসর, ‘মন’ মানে ব্যক্তিগত অনুভূতি, আর ‘জানালা’ মানে বাইরের জগতের দিকে মানুষের দৃষ্টিপাত। এই প্রতীকগুলোর মাধ্যমে লেখক মানুষের অন্তর্জগত ও বহির্জগতের সম্পর্ককে সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছেন।
-
কাহিনির অগ্রগতি ধীর এবং বাস্তবধর্মী, যা উপন্যাসের বৈশিষ্ট্য। নাটক বা গল্পের মতো সংক্ষিপ্ত নয়, বরং চরিত্র ও ঘটনার পরিপূর্ণ বিকাশ রয়েছে।
-
উপন্যাসটি পাঠককে শুধু বিনোদন দেয় না, বরং চিন্তা-ভাবনার দিকেও নিয়ে যায়। এটি সামাজিক পরিবর্তন ও মানবিক মূল্যবোধের পুনর্মূল্যায়নের আহ্বান জানায়।
অন্য বিকল্পগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, “রৌদ্র করোটিতে” একটি ভ্রমণকাহিনী, “রাইফেল রোটি আওরাত” একটি নাটক, এবং “সোজবাদিয়ার ঘাট” একটি চলচ্চিত্র। তাই শুধুমাত্র “ঘর মন জানালা” উপন্যাস হিসেবে সঠিক।
সবদিক বিবেচনায় বলা যায়, “ঘর মন জানালা”-ই প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে উপন্যাস হিসেবে যথার্থ ও সঠিক উত্তর।
0
Updated: 3 days ago