বাংলা সাহিত্যের জনক কে?
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তাঁকে ‘বাংলা সাহিত্যের জনক’ বলা হয় কারণ তিনিই প্রথম আধুনিক বাংলা গদ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। তাঁর রচনায় ভাষার সরলতা, স্বাভাবিকতা ও যুক্তিবোধের প্রকাশ ঘটে। তাঁর সাহিত্যচর্চা ও সংস্কারমূলক কাজ বাংলা সমাজে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
মূল তথ্যসমূহ নিচে তুলে ধরা হলো—
-
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ২৬ সেপ্টেম্বর ১৮২০ সালে মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও তিনি অধ্যবসায়ের মাধ্যমে কোলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি শিক্ষকতা ও প্রশাসনিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হন।
-
ভাষা সংস্কার: বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যকে সহজ, প্রাঞ্জল ও সাধারণ পাঠকের উপযোগী করে তুলেছিলেন। তাঁর আগে বাংলা গদ্যে সংস্কৃত ভাষার প্রভাব প্রবল ছিল, যা সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য মনে হতো। তিনি সেই কঠিন ভাষার পরিবর্তে সহজবোধ্য, কথ্যরীতির বাংলা চালু করেন। ফলে বাংলা ভাষা প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে মিশে যায়।
-
সাহিত্যকর্ম: তাঁর বিখ্যাত রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’, ‘শকুন্তলা’, ‘সিতার বনবাস’, ‘বার্ণপরিচয়’ ইত্যাদি। বিশেষত ‘বার্ণপরিচয়’ বাংলা শিক্ষার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অবদান। এই বইয়ের মাধ্যমে শিশুদের জন্য বাংলা বর্ণমালা শেখা সহজ হয় এবং এটি আজও প্রাথমিক শিক্ষার প্রথম পাঠ্যবই হিসেবে ব্যবহৃত।
-
সামাজিক সংস্কার: বিদ্যাসাগর শুধু সাহিত্যিকই নন, তিনি ছিলেন সমাজসংস্কারকও। তিনি বিধবা বিবাহ প্রবর্তন ও নারী শিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর প্রচেষ্টায় ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ সরকার ‘হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন’ পাশ করে। এছাড়া মেয়েদের বিদ্যালয় স্থাপনে তিনি নেতৃত্ব দেন এবং নারী শিক্ষার পথ খুলে দেন।
-
শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান: তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষাবিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। তাঁর প্রচেষ্টায় শিক্ষাব্যবস্থায় বাস্তবধর্মী ও আধুনিক পদ্ধতির প্রবর্তন হয়। তিনি বিশ্বাস করতেন, শিক্ষা মানুষের মনের অন্ধকার দূর করে সমাজকে আলোকিত করতে পারে।
-
ভাষা ও সাহিত্যে প্রভাব: বিদ্যাসাগরের গদ্যরীতি পরবর্তীকালে বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, প্রমথ চৌধুরী প্রমুখের লেখায় গভীর প্রভাব ফেলেছে। তিনি বাংলা গদ্যের পথপ্রদর্শক হিসেবে নতুন ধারার সূচনা করেন। এজন্যই তাঁকে যথার্থভাবে ‘বাংলা সাহিত্যের জনক’ বলা হয়।
-
মৃত্যু: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ২৯ জুলাই ১৮৯১ সালে কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু তাঁর আদর্শ, সাহিত্য ও মানবপ্রেম আজও বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতিতে অমর হয়ে আছে।
সব মিলিয়ে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কেবল একজন সাহিত্যিক নন, তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার স্থপতি, সমাজসংস্কারক ও শিক্ষার আলোকবর্তিকা। তাঁর প্রবর্তিত সহজ গদ্যরীতি এবং মানবিক আদর্শ বাংলা সাহিত্যের ভিত্তিকে দৃঢ় করে তুলেছিল, যার জন্যই তিনি অনন্যভাবে পরিচিত বাংলা সাহিত্যের জনক হিসেবে।
0
Updated: 1 day ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত মৌলিক গ্রন্থ কোনটি?
Created: 3 weeks ago
A
সীতার বনবাস
B
অল্প হইল
C
শকুন্তলা
D
ব্রজবিলাস
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ এবং সমাজসংস্কারক। তিনি জনহিতৈষী চিন্তাধারার অধিকারী এবং বাংলা গদ্যের জনক হিসেবে সুপরিচিত।
-
জন্ম ও মৃত্যু: ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন; ২৯ জুলাই, ১৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
-
পদবি ও স্বাক্ষর: পৈতৃক পদবি বন্দ্যোপাধ্যায়; স্বাক্ষর করতেন 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামে।
-
উপাধি: ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ তাঁকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
-
ভাষা ও সাহিত্য: বাংলা গদ্যের প্রবর্তক; প্রথম যতি বা বিরামচিহ্ন স্থাপন করেন।
-
প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ: 'বেতাল পঞ্চবিংশতি'।
-
বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক গদ্য রচনা: 'প্রভাবতী সম্ভাষণ'।
-
ব্যাকরণ গ্রন্থ: 'ব্যাকরণ কৌমুদী'।
বিখ্যাত গ্রন্থ:
-
শকুন্তলা
-
সীতার বনবাস
-
ভ্রান্তিবিলাস
মৌলিক রচনা:
-
অতি অল্প হইল
-
আবার অতি অল্প হইল
-
ব্রজবিলাস
-
বিধবা বিবাহ ও যশোরের হিন্দু ধর্মরক্ষিণী সভা
-
রত্ন পরীক্ষা
শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
-
আখ্যান মঞ্জরী
-
বোধোদয়
-
বর্ণপরিচয়
-
কথামালা
0
Updated: 3 weeks ago
কোনটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আত্মজীবনী?
Created: 2 months ago
A
স্মৃতি কথামালা
B
আত্মচরিত
C
আত্মকথা
D
আমার কথা
বাংলা গদ্যে আত্মজীবনী রচনার পথপ্রদর্শক: ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
বাংলা সাহিত্যে প্রথম আত্মজীবনী লিখেছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তার আত্মজীবনীর নাম ‘বিদ্যাসাগর চরিত’ বা ‘আত্মচরিত’।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পরিচয়:
-
জন্ম: ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।
-
পেশা: সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক, জনহিতৈষী।
-
সম্মান: ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ তাকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি দিয়েছে।
-
প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ: ‘বেতালপঞ্চবিংশতি’।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কিছু বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম:
-
শকুন্তলা,
-
সীতার বনবাসের,
-
ভ্রান্তিবিলাস।
শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
-
আখ্যান মঞ্জরী,
-
বোধোদয়,
-
বর্ণপরিচয়,
-
কথামালা।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
Created: 1 month ago
A
১৮২৯ সালে
B
১৮৪১ সালে
C
১৮২০ সালে
D
১৮১৪ সালে
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর — ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ ঈশ্বরচন্দ্রকে — ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ — বেতালপঞ্চবিংশতি।
- তার আত্মজীবনীর নাম — বিদ্যাসাগর চরিত বা আত্মচরিত।
তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম:
- শকুন্তলা,
- সীতার বনবাসের,
- ভ্রান্তিবিলাস ইত্যাদি।
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
- আখ্যান মঞ্জরী,
- বোধোদয়,
- বর্ণপরিচয়,
- কথামালা ইত্যাদি।
0
Updated: 1 month ago