নারীর প্রতি সকল রকম বৈষম্য নির্মূল করার আন্তর্জাতিক চুক্তি বা কনভেনশন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। এই চুক্তি মূলত নারী অধিকার ও লিঙ্গ সমতার স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে তৈরি করা হয়। এটি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যাতে তারা নারী ও পুরুষের মধ্যে সমানাধিকার নিশ্চিত করে এবং নারীদের প্রতি যে কোনো প্রকার বৈষম্য নির্মূল করতে কাজ করে। বিশ্বের অনেক দেশ এই চুক্তি স্বাক্ষর ও অনুমোদন করে নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
-
কনভেনশনটির পূর্ণ নাম হলো “Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women” (CEDAW)। এটি জাতিসংঘের মাধ্যমে প্রণীত এবং নারীদের প্রতি বৈষম্য প্রতিহত করার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড স্থাপন করে।
-
স্বাক্ষরের সাল ১৯৭৯। এই বছরটি আন্তর্জাতিক নারী আন্দোলনের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে গণ্য হয়। ১৯৭৯ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে সমস্ত প্রকার বৈষম্য নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়ে এই চুক্তি গৃহীত হয়।
-
উদ্দেশ্য হলো নারী ও পুরুষের মধ্যে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রগুলোতে সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এটি শিক্ষার সুযোগ, চাকরি, স্বাস্থ্যসেবা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, এবং আইনি সুরক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
-
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব: চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে বাধ্য করা হয় যে তারা আইন ও নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে নারীর প্রতি বৈষম্য রোধ করবে এবং নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক উন্নয়নের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
-
গুরুত্ব: CEDAW স্বাক্ষরের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নারী অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিকভাবে একত্রিত হয়েছে। এটি নারীদের জীবনে সমান সুযোগ ও মর্যাদা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি কাঠামোগত ভিত্তি প্রদান করেছে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, ১৯৭৯ সালে স্বাক্ষরিত এই কনভেনশনটি নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রধান দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করে। এটি শুধু আইনগত দিক থেকে নয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মানদণ্ডেও নারীর ক্ষমতায়ন ও সমতা নিশ্চিত করার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এই চুক্তি নারীর অধিকার রক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশগ্রহণে সমান সুযোগ এবং সমাজে বৈষম্য প্রতিহত করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখে।
তাহলে, গ) ১৯৭৯ সাল হলো সঠিক উত্তর।