বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয় কোন তারিখে?
A
২৬ মার্চ, ১৯৭১
B
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
C
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
D
১০ জানুয়ারি, ১৯৭২
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন, যা স্বাধীনতার পর একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সংবিধান প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। এই সংবিধান দেশের শাসনব্যবস্থা, নাগরিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের মূলনীতির ভিত্তি স্থাপন করে। নিচে সংবিধান প্রণয়ন ও কার্যকর হওয়ার মূল তথ্যগুলো ধাপে ধাপে উল্লেখ করা হলো।
-
সংবিধান প্রণয়নের সূচনা:
১১ এপ্রিল ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করেন। এই কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. কামাল হোসেন। কমিটিতে মোট ৩৪ জন সদস্য ছিলেন, যারা বাংলাদেশের প্রথম সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হন। -
সংবিধান প্রণয়ন কমিটির উদ্দেশ্য:
তাদের প্রধান কাজ ছিল একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য সংবিধানের খসড়া তৈরি করা, যেখানে জনগণের মৌলিক অধিকার, রাষ্ট্রের কাঠামো এবং ন্যায়বিচারের নীতি নির্ধারিত থাকবে। -
সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন ও অনুমোদন:
১২ অক্টোবর ১৯৭২ সালে সংবিধানের খসড়া জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়। এরপর প্রায় এক মাসের আলোচনা শেষে ৪ নভেম্বর ১৯৭২ সালে জাতীয় সংসদে সংবিধানটি গৃহীত হয়। এটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়েছিল। -
সংবিধান কার্যকর হওয়ার তারিখ:
সংবিধানটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর করা হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে, অর্থাৎ বিজয় দিবসে। এই দিনটি বেছে নেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয়ের প্রতীক হিসেবে। কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে পাকিস্তানের আইন ও সংবিধানের সব ধারা বাংলাদেশে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়। -
সংবিধানের মূল কাঠামো:
সংবিধানটি ১১টি ভাগে বিভক্ত, এতে মোট ১৫৩টি অনুচ্ছেদ ও ৪টি তফসিল রয়েছে। এতে রাষ্ট্রের চারটি মৌলিক নীতি নির্ধারণ করা হয়েছে — জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। -
সংবিধানের ভাষা ও বৈশিষ্ট্য:
বাংলাদেশের সংবিধান বাংলা ভাষায় রচিত, যা বিশ্বের অন্যতম প্রথম বাংলা সংবিধান হিসেবে স্বীকৃত। এটি জনগণের সার্বভৌমত্বকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয় এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার যেমন বাকস্বাধীনতা, সমতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। -
প্রথম সংশোধনী ও পরিবর্তন:
সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর এর প্রথম সংশোধনী হয় ১৯৭৩ সালে, যার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার আইনি ভিত্তি তৈরি হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে সংবিধানে মোট ১৭টি সংশোধনী আনা হয়েছে (সর্বশেষ ১৭তমটি ২০১৮ সালে)। -
সংবিধানের গুরুত্ব:
এই সংবিধান বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা, নাগরিক অধিকার ও আইনব্যবস্থার মূল স্তম্ভ। এটি নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করে এবং রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় রাখে।
সুতরাং, বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ সালে, যা শুধু একটি আইনগত দিন নয়, বরং স্বাধীন বাংলাদেশের পূর্ণতা অর্জনের ঐতিহাসিক মাইলফলক।
0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশের হস্তলিখিত সংবিধানটির অঙ্গসজ্জা কে করেন?
Created: 2 months ago
A
কামরুল হাসান
B
জয়নুল আবেদীন
C
আব্দুর রউফ
D
হাশেম খান
বাংলাদেশের সংবিধান
-
সংবিধান প্রণয়ন কমিটি:
-
গঠন: ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল
-
সভাপতি: আইন বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেন
-
সদস্য সংখ্যা: ৩৪ জন
-
-
কার্যকরী হওয়ার তারিখ: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২
-
মূল লেখক: শিল্পী আব্দুর রউফ
-
অঙ্গসজ্জা (Illustration/Decoration): শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন
-
প্রচ্ছদ: শীতলপাটিতে লেখা: “গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান”
-
স্বাক্ষর:
-
গণপরিষদের ৩৯৯ জন সদস্য হস্তলিখিত মূল সংবিধানে স্বাক্ষর করেন
-
স্বাক্ষর করা হয় বাংলা ও ইংরেজি লিপিতে, তারিখ: ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭২
-
একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত স্বাক্ষর করেননি
-
সূত্র: জাতীয় তথ্য বাতায়ন, বাংলাদেশ সংবিধান, আরিফ খান।
0
Updated: 2 months ago
‘আইনের দৃষ্টিতে সকল নাগরিক সমান' এ কথাটি সংবিধানের কত নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
২৭ নং অনুচ্ছেদ
B
১৯ নং অনুচ্ছেদ
C
২৯ নং অনুচ্ছেদ
D
২৮ নং অনুচ্ছেদ
0
Updated: 1 month ago
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গণপরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয় -
Created: 1 month ago
A
১৭ জুন , ১৯৭২
B
২১ মার্চ, ১৯৭২
C
১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২
D
৪ নভেম্বর, ১৯৭২
বাংলাদেশের সংবিধান (১৯৭২) সংক্রান্ত তথ্য:
-
গৃহীত: ৪ নভেম্বর, ১৯৭২ (গণপরিষদ কর্তৃক)
-
কার্যকর: ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭২ (বিজয় দিবস)
-
মোট অনুচ্ছেদ: ১৫৩ টি
-
অধ্যায়/ভাগ: ১১টি
-
তফসিল: ৭টি
-
মূলনীতি: ৪টি
-
প্রস্তাবনা: ১টি
0
Updated: 1 month ago