বাংলা 'মহাভারতের' শ্রেষ্ঠ অনুবাদক হলেন-
A
সন্ধ্যাকর নন্দী
B
কাশীরাম দাস
C
মালাধর বসু
D
শ্রীকর নন্দী
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে মহাকাব্য অনুবাদের ক্ষেত্রে কাশীরাম দাসকে বিশেষভাবে উচ্চ মূল্যায়ন করা হয়। তিনি মহাভারতকে সর্বোত্তমভাবে বাংলায় অনুবাদ করেছেন, যা কেবল ভাষাগত দিক থেকে নয়, সাহিত্যিক ও শিক্ষামূলক দিক থেকেও সমৃদ্ধ। তার অনুবাদে মূল কাব্যের ভাব, নৈতিকতা এবং চরিত্রের গভীরতা বাংলা পাঠকের জন্য সহজবোধ্য ও গ্রহণযোগ্যভাবে উপস্থাপিত হয়েছে।
এর মূল দিকগুলো হলো:
-
ভাষার সরলতা ও প্রাঞ্জলতা: কাশীরাম দাসের অনুবাদে ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল এবং ছন্দময়, যা পাঠকের জন্য কাব্যের ভাব বোঝা সহজ করে।
-
মূল ভাবের রক্ষা: তিনি মহাভারতের মূল কাহিনী, নৈতিক শিক্ষা ও চরিত্রের বৈশিষ্ট্য যথাযথভাবে রক্ষা করেছেন, ফলে পাঠক মূল কাব্যের গভীরতা অনুভব করতে পারেন।
-
সাহিত্যিক দক্ষতা: অনুবাদ শুধু ভাষান্তর নয়, বরং এতে সাহিত্যিক সৌন্দর্য ও আবেগের প্রভাব বজায় রাখা হয়েছে। এটি বাংলা সাহিত্যের কাব্যশৈলীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
-
শিক্ষামূলক ও নৈতিক দিক: মহাভারতের গল্পে নিহিত নৈতিকতা, ধর্ম এবং মানবিক মূল্যবোধ অনুবাদের মাধ্যমে পাঠকের কাছে স্পষ্টভাবে পৌঁছেছে।
-
বাংলা সাহিত্যে প্রভাব: কাশীরাম দাসের অনুবাদ বাংলা সাহিত্যের মহাকাব্যিক অনুবাদপ্রচেষ্টার মাপকাঠি স্থাপন করেছে এবং পরবর্তী অনুবাদক ও লেখকদের জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সারসংক্ষেপে, কাশীরাম দাস বাংলা ‘মহাভারত’ অনুবাদের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ অনুবাদক, কারণ তিনি মূল কাব্যের ভাব ও নৈতিক শিক্ষাকে সহজ, প্রাঞ্জল ও সাহিত্যিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলায় অনুবাদ করেছেন। তার অনুবাদ বাংলা সাহিত্যের কাব্যিক, শিক্ষামূলক ও নৈতিক প্রভাবকে যুগান্তকারীভাবে প্রভাবিত করেছে।
0
Updated: 1 day ago
'নদী সিকস্তি' কারা?
Created: 5 days ago
A
নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ
B
নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়
C
নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে
D
নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে
বাংলা ভাষায় ‘নদী সিকস্তি’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করা হয় এমন জনগণের বর্ণনার জন্য যারা নদী ভাঙনে সর্বস্বান্ত হয়েছে, অর্থাৎ নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে তাদের বসতভূমি, ফসলি জমি এবং জীবনযাপন হারাতে হয়েছে। এটি কোনো বিশেষ পেশা বা বসবাসের ভিত্তিতে নয়, বরং প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণকে বোঝায়। তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
বিস্তারিত ব্যাখ্যা:
নদী সিকস্তি শব্দের অর্থ:
-
“নদী” → নদী সম্পর্কিত বা নদীর আশেপাশের।
-
“সিকস্তি” → ভুক্তভোগী, ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বস্বান্ত ব্যক্তিদের জন্য ব্যবহৃত।
-
মিলিতভাবে, নদী সিকস্তি অর্থ দাঁড়ায় নদীর ক্ষয় বা ভাঙনের কারণে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ।
বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ:
-
বাংলাদেশে নদীভাঙন একটি সাধারণ সমস্যা। নদীর বালুচর, বাঁধ, ভাঙা পাড়ের কারণে অনেক মানুষ তাদের জমি ও বসতি হারায়।
-
এই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে স্থানীয় ভাষায় নদী সিকস্তি বলা হয়।
-
তারা শুধু বসতিই হারান না, বরং জীবিকার উৎসও অনেকাংশে লোপ পায়।
অন্য বিকল্পগুলোর ভুল ব্যাখ্যা:
-
(খ) নদীর চর জাগলে যারা দখল করতে চায়: এটি নদীর নতুন জমি বা চর দখলকারীদের বোঝায়, কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়।
-
(গ) নদীতে যারা সারা বছর মাছ ধরে: এটি মৎস্যজীবীদের বর্ণনা, যাদের ‘সিকস্তি’ বা ভাঙনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক নেই।
-
(ঘ) নদীর পাড়ে যারা বসবাস করে: এটি শুধু অবস্থান নির্দেশ করে, তবে তারা সবসময় ক্ষতিগ্রস্ত নাও হতে পারে।
সারসংক্ষেপ:
-
নদী সিকস্তি হলো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ।
-
এটি জীবিকার ক্ষতি, বসতি ধ্বংস ও সম্পদের ক্ষয় নির্দেশ করে।
উপসংহার:
বাংলা ভাষায় নদী সিকস্তি বলতে বোঝায় নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ, তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) নদী ভাঙ্গনে সর্বস্বান্ত জনগণ।
0
Updated: 5 days ago
মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি কে?
Created: 1 day ago
A
করিম উদ্দিন
B
হাবিব মিয়া
C
মতলব মিয়া
D
ছফা মিয়া
বাংলা সাহিত্যজগতে মেঘনা নদীকে কেন্দ্র করে বহু গল্প ও উপন্যাস রচিত হয়েছে, যার মধ্যে “মেঘনা নদীর মাঝি” প্রসিদ্ধ একটি গল্প। এই গল্পে নদীর মাঝি চরিত্রের মাধ্যমে লেখক গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র, নদী নির্ভর মানুষের সংগ্রাম এবং নৌচালনার দক্ষতা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই কাহিনিতে মতলব মিয়া হচ্ছেন মেঘনা নদীর সবচেয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ মাঝি।
নিচে বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হলো—
-
মতলব মিয়ার পরিচয়: তিনি পেশায় একজন মাঝি, যিনি মেঘনা নদীতে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁর নৌকা চালানোর দক্ষতা, নদীর গতিপথ বোঝার ক্ষমতা এবং ঝড়-জল মোকাবিলার সাহস তাকে অন্য মাঝিদের মধ্যে আলাদা করে তুলেছে।
-
দক্ষতার পরিচয়: মতলব মিয়া মেঘনা নদীর প্রতিটি বাঁক, স্রোত, ভাটির ঢেউ, এমনকি কুয়াশার মধ্যে নৌকা চালানোর পথ পর্যন্ত জানেন। তিনি জানেন কখন পাল তোলা নিরাপদ, কখন নৌকা থামানো উচিত, আর কোথায় নদীর স্রোত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
-
নদী ও জীবনের সম্পর্ক: তাঁর জীবনে নদী কেবল জীবিকার উৎস নয়, এটি তাঁর জীবনের সঙ্গীও বটে। নদীর প্রতিটি ঢেউ যেন তাঁর সঙ্গে কথা বলে, যা তাঁর আত্মার সঙ্গে মিশে আছে।
-
সংগ্রামী চরিত্র: মতলব মিয়া সমাজের সাধারণ এক মানুষ, কিন্তু নিজের পেশায় তিনি নিবেদিতপ্রাণ। নদীতে ঝড় উঠলেও তিনি ভয় পান না। জীবনের প্রতিকূলতাকে জয় করাই তার দৈনন্দিন বাস্তবতা।
-
নৈতিক গুণাবলি: দক্ষতার পাশাপাশি তিনি সৎ, সাহসী ও পরিশ্রমী। অন্য মাঝিরা যখন নদীর ভয়াবহ স্রোত দেখে পিছিয়ে যায়, তখন মতলব মিয়া দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে নৌকার হাল ধরে রাখেন।
-
প্রতীকী অর্থে: সাহিত্যিকভাবে মতলব মিয়া বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতীক, যারা পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং সাহসের মাধ্যমে জীবনের অনিশ্চয়তাকে জয় করে।
-
গল্পের শিক্ষা: এই চরিত্র আমাদের শেখায় যে দক্ষতা ও সাহস একসাথে থাকলে মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করতে পারে। মতলব মিয়া তার জীবনের কঠিন মুহূর্তগুলোতেও ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস হারাননি।
সবশেষে বলা যায়, মতলব মিয়া কেবল মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি নন, তিনি নদীজীবনের প্রতীকও বটে। তাঁর মাধ্যমে লেখক দেখিয়েছেন, প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা মানুষের আসল শক্তি নিহিত থাকে পরিশ্রম, অভিজ্ঞতা ও সাহসের মধ্যে।
0
Updated: 1 day ago
যোজক কাকে বলে?
Created: 1 week ago
A
পদ
B
বর্গ
C
বাক্য
D
সবগুলোই
যোজক এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ, যা ভাষার গঠনকে সংযোজিত ও অর্থবহ করে তোলে। এটি বাক্যের মধ্যে বিভিন্ন পদ, বাক্যাংশ বা বাক্যকে যুক্ত করে অর্থের ঐক্য সৃষ্টি করে। বাংলা ভাষায় যোজকের ব্যবহার বাক্যের সুষমা ও যুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রাখে। যোজক সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ:
-
সংজ্ঞা: যেসব শব্দ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য বাক্য বা বাক্যের অংশবিশেষের সংযোজন, বিয়োজন বা সম্পর্ক স্থাপন করে, তাদের যোজক বলা হয়।
-
মূল কাজ: যোজকের প্রধান কাজ হলো দুটি বা ততোধিক শব্দ, পদবন্ধ, উপবাক্য বা বাক্যকে যুক্ত করা, যাতে বাক্যের মধ্যে সম্পর্ক স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়।
-
ব্যবহারিক দিক: এটি বাক্যকে জটিল না করে, বরং অর্থগতভাবে আরও সম্পূর্ণ ও সুন্দর করে তোলে।
-
যোজকের প্রকারভেদ:
-
সমুচ্চয় যোজক: দুটি সমপদ বা সমার্থক অংশ যুক্ত করে। যেমন— এবং, আর, ও, কিংবা, অথবা।
-
অধোজ্ঞাপক যোজক: একটি অংশ অপর অংশের অধীনতা প্রকাশ করে। যেমন— যদিও, যদি, কারণ, যেন, যাতে।
-
-
উদাহরণ:
-
রবি এবং রিমা আজ স্কুলে গেছে।
-
তুমি এলে আর আমি গেলাম।
-
যদি বৃষ্টি হয় তবে মাঠে খেলা হবে না।
-
-
ব্যাকরণে গুরুত্ব:
যোজক ছাড়া বাক্যের ভাব অসম্পূর্ণ থেকে যায়। এটি ভাষার গঠন ও ভাব প্রকাশের ভারসাম্য রক্ষা করে। -
বাক্যে অবস্থান: সাধারণত দুই পদের বা বাক্যের মাঝখানে ব্যবহৃত হয়, তবে কখনও কখনও বাক্যের শুরুতেও আসতে পারে।
-
অর্থগত ভূমিকা: যোজক শুধু সংযোগ নয়, বাক্যের আবেগ, কারণ, ফলাফল, তুলনা ও শর্ত প্রকাশেও ভূমিকা রাখে।
-
ভাষার সৌন্দর্য বৃদ্ধি: যোজকের সঠিক প্রয়োগ ভাষাকে সাবলীল, সংগঠিত ও শ্রুতিমধুর করে তোলে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, যোজক হলো এমন এক পদ যা শব্দ, পদবন্ধ ও বাক্যকে যুক্ত করে সম্পূর্ণ অর্থবোধক বাক্য রচনা করতে সহায়তা করে। এটি ভাষার কাঠামোগত ভারসাম্য বজায় রাখে এবং ভাব প্রকাশকে প্রাঞ্জল করে তোলে।
0
Updated: 1 week ago