বাংলা গদ্যের 'যথার্থ শিল্পী' বলা হয় কাকে?
A
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে
B
মীর মশাররফ হোসেনকে
C
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে
D
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের ‘যথার্থ শিল্পী’ বলা হয়, কারণ তিনি গদ্যে সরলতা, প্রাঞ্জলতা ও যুক্তিসঙ্গত ভাব প্রকাশের মাধ্যমে পাঠকের কাছে গভীর প্রভাব ফেলেেছেন। তার গদ্যরচনার বিশেষত্ব হলো ভাষার স্বাভাবিকতা, স্পষ্টতা এবং শিক্ষামূলক উদ্দেশ্য। তিনি গদ্যকে শুধুমাত্র তথ্যপ্রদান বা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেননি, বরং এতে সাহিত্যিক সৌন্দর্য ও মানবিক দৃষ্টিকোণও প্রয়োগ করেছেন।
এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
-
সরল ও প্রাঞ্জল ভাষা: বিদ্যাসাগরের লেখা গদ্যে অপ্রয়োজনীয় জটিলতা নেই। তিনি পাঠককে সহজ ও স্বচ্ছ ভাষায় ভাব পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
-
যুক্তিসঙ্গত প্রকাশ: তার গদ্যরচনায় ভাবের ধারাবাহিকতা এবং যুক্তির প্রাধান্য থাকে। প্রতিটি বাক্য এবং প্যারাগ্রাফ বিন্যস্ত ও সুসংগঠিত, যা পাঠকের বোঝাপড়া সহজ করে।
-
শিক্ষামূলক উদ্দেশ্য: বিদ্যাসাগরের গদ্য প্রায়শই শিক্ষা, নৈতিকতা ও সামাজিক সচেতনতা প্রচারের উদ্দেশ্য নিয়ে লেখা হয়। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষাবিষয়ক প্রবন্ধ, প্রাতিষ্ঠানিক নথি বা সাহিত্যিক রচনা।
-
সাহিত্যিক সৌন্দর্য: সরলতার সঙ্গে সঙ্গে তার গদ্যে ভাষার সৌন্দর্য ও ছন্দও থাকে। এটি বাংলা গদ্যের শৈল্পিক দিককে সমৃদ্ধ করে।
-
গদ্যের প্রভাব: বিদ্যাসাগরের প্রবন্ধ, চিঠি, বক্তৃতা এবং শিক্ষামূলক লেখা পাঠকদের সাহিত্যিক ও নৈতিক মূল্যবোধ বোঝার সুযোগ দেয়। তার লেখা আধুনিক বাংলা গদ্যের ভিত্তি স্থাপন করেছে।
সারসংক্ষেপে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের যথার্থ শিল্পী বলা হয়, কারণ তিনি সরলতা, প্রাঞ্জলতা এবং যুক্তিসঙ্গত ভাষা ব্যবহার করে বাংলা গদ্যকে শিক্ষামূলক, সাহিত্যিক এবং মানবিক দিক থেকে সমৃদ্ধ করেছেন। তার লেখা গদ্য বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার সূচনা এবং পাঠকের জন্য বোধ্য ও প্রভাবশালী সাহিত্যিক উদাহরণ হিসেবে পরিচিত।
0
Updated: 1 day ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন?
Created: 1 month ago
A
১৮২৯ সালে
B
১৮৪১ সালে
C
১৮২০ সালে
D
১৮১৪ সালে
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর — ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ ঈশ্বরচন্দ্রকে — ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ — বেতালপঞ্চবিংশতি।
- তার আত্মজীবনীর নাম — বিদ্যাসাগর চরিত বা আত্মচরিত।
তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম:
- শকুন্তলা,
- সীতার বনবাসের,
- ভ্রান্তিবিলাস ইত্যাদি।
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
- আখ্যান মঞ্জরী,
- বোধোদয়,
- বর্ণপরিচয়,
- কথামালা ইত্যাদি।
0
Updated: 1 month ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রথম কোনগ্রন্থে বিরামচিহ্ন ব্যবহার করেন?
Created: 2 weeks ago
A
বেতাল পঞ্চবিংশতি
B
ব্যকরণ কৌমুদী
C
শকুন্তলা
D
ভূগোলখগোল বর্ণনম
বাংলা গদ্যভাষার বিকাশে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান অনন্য। তাঁর রচিত ও সম্পাদিত ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’ ছিল সেই প্রথম গ্রন্থ, যেখানে বাংলা গদ্য জড়তা ও দুর্বোধ্যতা থেকে মুক্ত হয়ে সাহিত্যিক রূপে আত্মপ্রকাশ করে। তিনি গদ্যের ভাষাকে শুধু সরল করেননি, বরং তাকে নিয়ম, শৃঙ্খলা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ করেছেন।
-
বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যের বিশৃঙ্খল ও অনিয়মিত রূপকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন।
-
তিনি কমা ও অন্যান্য যতিচিহ্নের সুষ্ঠু ব্যবহার করে বাক্যকে অর্থবোধক অংশে বিভক্ত করেন, ফলে ভাষা হয় সুসংগঠিত।
-
গদ্যে উপবাক্য ও অন্বয় প্রয়োগের মাধ্যমে তিনি বাক্যগঠনকে যুক্তিসঙ্গত ও ভাবসম্পন্ন করেন।
-
ভাবের গভীরতা অনুযায়ী বাক্যের দৈর্ঘ্য ও ছন্দে বৈচিত্র্য আনেন, যা গদ্যে লাবণ্য ও সংগতি সৃষ্টি করে।
-
তাঁর এই শৈলীকৌশল বাংলা গদ্যকে প্রথমবারের মতো সাহিত্যসুলভ মর্যাদা ও নান্দনিক পূর্ণতা দেয়।
0
Updated: 2 weeks ago
ঈশ্বরচন্দ্রকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে কোন প্রতিষ্ঠান?
Created: 3 weeks ago
A
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ
B
সংস্কৃত কলেজ
C
হিন্দু কলেজ
D
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট সংস্কৃত পণ্ডিত, লেখক, শিক্ষাবিদ, সমাজসংস্কারক এবং জনহিতৈষী। তিনি বাংলা গদ্যের জনক হিসেবে পরিচিত এবং ভাষা, সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
-
জন্ম ও মৃত্যু: ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ; ২৯ জুলাই ১৮৯১ সালে মৃত্যুবরণ।
-
পদবি ও স্বাক্ষর: পৈতৃক পদবি বন্দ্যোপাধ্যায়; স্বাক্ষর করতেন 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামে।
-
উপাধি: ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ তাঁকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
-
ভাষা ও সাহিত্য: বাংলা গদ্যের প্রবর্তক; বাংলা গদ্যে প্রথম যতি বা বিরামচিহ্ন স্থাপন করেন।
-
প্রকাশিত গ্রন্থ: প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ 'বেতাল পঞ্চবিংশতি'; বাংলা ভাষায় প্রথম মৌলিক গদ্য রচনা 'প্রভাবতী সম্ভাষণ'।
-
ব্যাকরণগ্রন্থ: 'ব্যাকরণ কৌমুদী'।
0
Updated: 3 weeks ago