'অস্তিত্ববাদী' উপন্যাস কোনটি?
A
ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী
B
সংকর সংকীর্তন
C
সূর্যদীঘল বাড়ি
D
কাঁদো নদী কাঁদো
উত্তরের বিবরণ
‘অস্তিত্ববাদী’ ধারা বাংলা সাহিত্যে একটি বিশেষ ধরনের চিন্তাভাবনার পরিচায়ক। অস্তিত্ববাদ মূলত মানুষের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, সংকট, এবং জীবন-উপলব্ধির জটিলতা নিয়ে লেখালিখি করে। এই ধারার সাহিত্য সাধারণত মানব জীবনের অবশ্যকতা, দায়বোধ, উদ্বেগ ও মানসিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যে এই ধারা তুলনামূলকভাবে আধুনিক যুগে প্রবেশ করে এবং বিশেষভাবে লেখকরা মানব জীবনের গভীর মানসিক সমস্যা ও নিজস্ব অভিজ্ঞতাকে উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসেন।
কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসটি এই ধরণের পরিচয়ের সেরা উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে কয়েকটি মূল বিষয় তুলে ধরা যেতে পারে:
-
মানবিক দ্বন্দ্ব ও মানসিক জটিলতা: উপন্যাসের চরিত্রগুলো জীবনের নানা প্রতিকূলতা ও সংকটের মধ্যে নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে। তারা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সমাজের প্রত্যাশার মধ্যে দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হয়।
-
উদ্বেগ ও বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি: অস্তিত্ববাদী সাহিত্যে সাধারণত চরিত্ররা জীবনের অর্থ খোঁজে এবং নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন তোলে। কাঁদো নদী কাঁদো-তে এই ধরনের অভ্যন্তরীণ চিন্তাভাবনা এবং দার্শনিক পর্যবেক্ষণ স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
-
মানব জীবনের জটিল বাস্তবতা: উপন্যাসে কোনো রোমান্টিক বা আদর্শিক চিত্রায়ন নয়, বরং বাস্তবসম্মতভাবে মানুষ ও তার চারপাশের পৃথিবীর সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। এটি অস্তিত্ববাদী সাহিত্যিক চিন্তাভাবনার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
-
ভাষা ও নির্মাণ: লেখকের ভাষা সরল হলেও গভীর। চরিত্রগুলোর অভ্যন্তরীণ ভাবনা এবং জীবনদর্শন পাঠকের কাছে দার্শনিক রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে।
অতএব, কাঁদো নদী কাঁদো শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, এটি মানুষের জীবনের অস্তিত্ব, সংকট ও মানসিক দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে নির্মিত একটি সাহিত্যকর্ম। এটি পাঠককে মানুষের অস্তিত্বের গভীরতা বোঝার সুযোগ দেয় এবং প্রতিটি চরিত্রের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের চিত্রায়ন করে। বাংলার আধুনিক উপন্যাসের মধ্যে এটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য কারণ এটি মানুষের অস্তিত্ব এবং তার সীমাবদ্ধতার চেতনাকে সুস্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলে।
সারসংক্ষেপে বলা যায়, কাঁদো নদী কাঁদো উপন্যাসটি একটি অস্তিত্ববাদী উপন্যাস, যা মানব জীবনের গভীর দার্শনিক ভাবনা, মানসিক দ্বন্দ্ব ও বাস্তবতা-ভিত্তিক অভিজ্ঞতাকে সাহিত্যের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে। এটি পাঠককে শুধু গল্পের সঙ্গে পরিচয় করায় না, বরং জীবনের অবশ্যকতা, দায়বোধ ও স্বাধীনতার সীমা সম্পর্কে চিন্তা করতে প্ররোচিত করে।
0
Updated: 1 day ago
'নদী ও নারী' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
Created: 1 month ago
A
কাজী আবদুল ওদুদ
B
আবুল ফজল
C
রশীদ করিম
D
হুমায়ুন কবির
নদী ও নারী
-
রচয়িতা: হুমায়ুন কবির
-
প্রকাশকাল: ১৯৪৫ সালে মূল বাংলা সংস্করণ; একই বছরে ইংরেজি অনুবাদ ‘Men and Rivers’ প্রকাশিত হয়।
-
পটভূমি: চরের মানুষের দৈনন্দিন জীবন।
-
প্রধান চরিত্র: নজু মিয়া ও আসগর মিয়া—তাদের জীবন ও সম্পর্ককে কেন্দ্র করে গল্পটি আবর্তিত।
-
বিশেষত্ব: পদ্মা নদীর প্রেক্ষাপটে বাঙালি মুসলিম সমাজের জীবনের চিত্রায়ন।
-
চলচ্চিত্র: ১৯৬৫ সালে ঢাকায় উপন্যাসটি চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়।
হুমায়ুন কবির
-
জন্ম: ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯০৬, কোমরপুর, ফরিদপুর
-
মূল নাম: হুমায়ুন জহিরউদ্দিন আমির-ই-কবির
-
পেশা ও অবদান: রাজনীতিবিদ, লেখক ও দার্শনিক; ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে স্মরণীয়।
-
মৃত্যু: ১৮ আগস্ট ১৯৬৯, হৃদরোগে
-
কাব্যগ্রন্থ:
-
স্বপ্নসাধ
-
সাথী
-
অষ্টাদশী
-
-
উপন্যাস: নদী ও নারী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago
'জয়গুন' কোন উপন্যাসের বিখ্যাত চরিত্র?
Created: 1 month ago
A
সূর্য-দীঘল বাড়ী
B
সংশপ্তক
C
সারেং বৌ
D
পদ্মা নদীর মাঝি
‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ উপন্যাস
-
রচয়িতা: আবু ইসহাক
-
প্রকাশ: ১৯৫৫
-
বিষয়: সামাজিক উপন্যাস; বাংলাদেশের গ্রাম জীবনের বিশ্বস্ত চিত্র
-
পটভূমি: বিশ্বযুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, দেশবিভাগ
-
কেন্দ্রীয় চরিত্র: জয়গুন
অন্যান্য চরিত্রসমূহ:
-
হাসু
-
মায়মুন
-
শাফি
-
ডা. রমেশ চক্রবর্তী
-
মোরল গদু
আবু ইসহাক সম্পর্কে:
-
জন্ম: ১ নভেম্বর ১৯২৬, শরিয়তপুর জেলার শিরঙ্গল গ্রাম
-
কাজী নজরুল ইসলাম সম্পাদিত নবযুগ পত্রিকায় ‘অভিশাপ’ গল্প প্রকাশিত
-
অন্যান্য প্রকাশনা: সওগাত, আজাদ প্রভৃতি পত্রিকায় রচনা
-
মৃত্যু: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৩, ঢাকা
অন্য রচনাসমূহ:
-
উপন্যাস: পদ্মার পলিদ্বীপ, জাল
-
গল্পগ্রন্থ: হারেম, মহাপতঙ্গ
0
Updated: 1 month ago
রামায়ণের প্রথম বাংলা অনুবাদক -
Created: 1 month ago
A
বাল্মীকি
B
চন্দ্রাবতী
C
কৃত্তিবাস ওঝা
D
কবীন্দ্র পরমেশ্বর
রামায়ণ হলো একটি সংস্কৃত কাব্য, যা রচনা করেন বাল্মীকি। বাল্মীকি পূর্বে দস্যুবৃত্তি করতেন। বাংলা সাহিত্যে রামায়ণের প্রথম অনুবাদ করেন কৃত্তিবাস ওঝা, যিনি মধ্যযুগের অনুবাদ সাহিত্যের প্রথম সূচনা করেন। গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের নির্দেশে কৃত্তিবাস রামায়ণ বাংলায় অনুবাদ করেন। রামায়ণের প্রথম মহিলা অনুবাদক ছিলেন চন্দ্রাবতী।
কৃত্তিবাস ওঝা:
-
সংস্কৃত রামায়ণের প্রথম অনুবাদক কবি।
-
জন্মস্থান: রাজশাহী জেলার প্রেমতলী নিকট, যা কিছু মতান্তরে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গঙ্গাতীরবর্তী ফুলিয়া গ্রাম।
-
‘কৃত্তিবাসী রামায়ণ’ ১৮০২-০৩ সালে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে প্রথমবার পাঁচ খণ্ডে মুদ্রিত হয়।
-
১৮৩০-৩৪ সালে জয়গোপাল তর্কালঙ্কারের সম্পাদনায় এর দ্বিতীয় সংস্করণ দু খণ্ডে প্রকাশিত হয়।
-
অদ্যাবধি রামায়ণের বিভিন্ন সংস্করণের মধ্যে শ্রীরামপুরের প্রথম সংস্করণের পাঠই সর্বোত্তম বলে বিবেচিত।
0
Updated: 1 month ago