অর্থের পরিবর্তন, সংকোচন বা সম্প্রসারণ সাধারণত উপসর্গের প্রভাবে ঘটে। শব্দের শুরুতে উপসর্গ যুক্ত হলে মূল শব্দের অর্থে নতুন ভাব, বৃদ্ধি বা বিপরীত অর্থ প্রকাশ পায়। এর ফলে ভাষা হয় আরও সমৃদ্ধ ও অর্থবহ।
উপসর্গের প্রভাব ও ব্যবহার:
• উপসর্গ শব্দের আগে যুক্ত হয়ে তার অর্থ পরিবর্তন বা সম্প্রসারণ ঘটায়।
• উপসর্গগুলো মূল শব্দকে নতুন অর্থ দেয়, যেমন— অ, নি, প্রতি, অপ, অধি, অতি ইত্যাদি।
• ‘অ’ উপসর্গ সাধারণত অর্থের বিপরীততা বোঝায়। যেমন— ন্যায় → অন্যায় (ন্যায়ের বিপরীত)।
• ‘অতি’ উপসর্গ অর্থের অতিরিক্ততা বা বৃদ্ধি প্রকাশ করে। যেমন— শয় → অতিশয় (অত্যন্ত)।
• ‘প্রতি’ উপসর্গ বিরোধ বা প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে। যেমন— ক্রিয়া → প্রতিক্রিয়া (উত্তর বা প্রতিউত্তর)।
• ‘নি’ উপসর্গ সাধারণত নিচের দিকে গতি বা বিনয় প্রকাশ করে। যেমন— লিখা → নিলিখা (নিচের দিকে লেখা)।
• এসব উপসর্গের কারণে শব্দের অর্থ সংকুচিত, সম্প্রসারিত বা পরিবর্তিত হয়।
• উপসর্গ ভাষার প্রকাশক্ষমতা ও শব্দভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে।
অন্যান্য বিকল্পের ভূমিকা:
• সন্ধি কেবল ধ্বনিগত পরিবর্তন ঘটায়, অর্থের নয়।
• অনুসর্গ মূলত শব্দের পরে যুক্ত হয়, অর্থ নয় বরং রূপ পরিবর্তন করে।
• প্রত্যয় শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি করে, কিন্তু মূল অর্থকে পরিবর্তন করে না।
অতএব, শব্দের অর্থ সংকোচন, সম্প্রসারণ ও পরিবর্তনের কারণ একমাত্র উপসর্গ, যা বাংলা ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।