কোন সংস্থা সুন্দরবনকেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে?
A
ইউনিসেফ
B
ইউএনডিপি
C
বিশ্বব্যাংক
D
ইউনেস্কো
উত্তরের বিবরণ
সুন্দরবন পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য ভান্ডার। এই বন বাংলাদেশের গর্ব, কারণ এটি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীকই নয়, বরং পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুন্দরবনের এই বিশ্বমানের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো (UNESCO), যেটি একে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মূল তথ্যাবলি:
-
ইউনেস্কো বা United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization হলো জাতিসংঘের একটি বিশেষ সংস্থা, যার প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৫ সালে, এবং এর সদর দপ্তর অবস্থিত প্যারিসে (ফ্রান্স)।
-
এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
-
ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক, প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্য (World Heritage Site) হিসেবে ঘোষণা করে।
-
সুন্দরবনকে ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
-
এই ঘোষণা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেয় এবং সুন্দরবনের সংরক্ষণে বৈশ্বিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
সুন্দরবনের গুরুত্ব:
-
সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
-
এখানে বসবাস করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা বাংলাদেশে বন্যপ্রাণীর প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
-
এছাড়াও এখানে রয়েছে চিত্রা হরিণ, কুমির, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও মাছ।
-
সুন্দরবন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক বন্যা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি অনেকটা কমিয়ে দেয়।
অন্য বিকল্পগুলোর বিশ্লেষণ:
-
ইউনিসেফ (UNICEF) শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কল্যাণে কাজ করে, তবে বিশ্ব ঐতিহ্যের ঘোষণা দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।
-
ইউএনডিপি (UNDP) জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি, যা মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানব উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে।
-
বিশ্বব্যাংক (World Bank) অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে, কিন্তু ঐতিহ্য ঘোষণার দায়িত্ব তাদের নয়।
সুতরাং, সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ইউনেস্কো, যা বাংলাদেশের জন্য একটি আন্তর্জাতিক গর্বের স্বীকৃতি।
0
Updated: 2 days ago
সুন্দরবন বাংলাদেশের কতটি জেলায় রয়েছে?
Created: 3 days ago
A
৩টি
B
৪টি
C
৬টি
D
৫টি
সুন্দরবন বাংলাদেশের ৩টি জেলায় বিস্তৃত।
এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সুন্দরবন মূলত বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা—এই তিনটি জেলায় বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে।
ভৌগোলিকভাবে বিশ্লেষণ করলে—
-
খুলনা জেলা: সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় অংশ খুলনা জেলায় অবস্থিত, যেখানে কটকা, হারবাড়িয়া ও দুবলার চরসহ গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল রয়েছে।
-
বাগেরহাট জেলা: এই অংশে করমজল, হিরণ পয়েন্ট ও অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্র অবস্থিত।
-
সাতক্ষীরা জেলা: এখানে সুন্দরবনের পশ্চিম প্রান্তের বনভূমি রয়েছে, যা ভারতের সুন্দরবনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করেছে।
সুন্দরবন শুধুমাত্র বনভূমি নয়, এটি দেশের প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রাচীর, যা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করে। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবেও স্বীকৃত।
অতএব, সঠিক উত্তর হলো—
ক) ৩টি।
0
Updated: 3 days ago
বাংলাদেশের প্রথম রামসার সাইট-
Created: 1 month ago
A
টাঙ্গুয়ার হাওর
B
চলনবিল
C
হাইল হাওর
D
সুন্দরবন
রামসার সাইট:
-
রামসার কনভেনশন বা রামসার চুক্তি হলো একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা ১৯৭১ সালে ইরানের রামসার শহরে স্বাক্ষরিত হয়।
-
এর উদ্দেশ্য হলো জলাভূমি (wetlands) সংরক্ষণ এবং সারা বিশ্বে এসব এলাকার টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা।
-
বাংলাদেশ ১৯৯২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রামসার সনদ কার্যকর করে।
-
বাংলাদেশের ২টি স্থান রামসার সাইট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
-
রামসার সাইট দুটো হলো: সুন্দরবন ও টাঙ্গুয়ার হাওর।
-
বাংলাদেশের প্রথম রামসার সাইট সুন্দরবন।
-
১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবনকে রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট হলো টাঙ্গুয়ার হাওর, যা সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত।
-
২০০০ সালের ২৯ জানুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওরকে সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
0
Updated: 1 month ago
সুন্দরবন-এর কত শতাংশ বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমার মধ্যে পড়েছে?
Created: 2 months ago
A
৫০%
B
৫৮%
C
৬২%
D
৬৬%
সুন্দরবন
সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনভূমি। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর বদ্বীপ এলাকায় বিস্তৃত। ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী বনটি কর্কটক্রান্তির কিছুটা দক্ষিণে ২১°৩০´-২২°৩০´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯°০০´-৮৯°৫৫´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে রয়েছে।
এই বিশাল বনভূমির মোট আয়তনের প্রায় ৬২ শতাংশ বাংলাদেশের ভেতরে পড়েছে। বাংলাদেশ অংশের আয়তন প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার, যা দেশের সবচেয়ে বড় একক বনভূমি। বনের বাকি অংশ ভারতের অন্তর্গত।
সুন্দরবন মূলত বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় জেলাগুলোতে বিস্তৃত। এখানে প্রধান বৃক্ষ হলো সুন্দরী গাছ, যাকে কেন্দ্র করে বনটির নামকরণ হয়েছে। এছাড়া বনটিতে গরান, গেওয়া, কেওড়া, ধুন্দল, গোলপাতা ইত্যাদি বৃক্ষও প্রচুর পরিমাণে জন্মে।
এসব কারণে সুন্দরবনকে শুধু বাংলাদেশের নয়, পুরো পৃথিবীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়।
তথ্যসূত্র: বাংলাপিডিয়া, বনবিভাগ, ভূগোল ও পরিবেশ (নবম-দশম শ্রেণি)।
0
Updated: 2 months ago