ব্লটুথ (Bluetooth) কার নামানুসারে নামকরন করা হয়?
A
ডেকমার্কের রাজা
B
জামানের সম্রাট
C
ব্রিটেনের রানী
D
সুইজারল্যান্ডের রাজকুমার
উত্তরের বিবরণ
ব্লুটুথ নামটির একটি ঐতিহাসিক উৎস রয়েছে, যা প্রযুক্তি জগতের সাথে ইতিহাসের এক সুন্দর সংযোগ সৃষ্টি করেছে। এই নামটি এসেছে ডেনমার্কের রাজা হ্যারাল্ড ব্লুটুথ (Harald Bluetooth)-এর নামানুসারে। রাজা হ্যারাল্ড ছিলেন এমন একজন শাসক, যিনি নবম শতাব্দীতে ডেনমার্ক ও নরওয়ে একত্রিত করেছিলেন। ঠিক যেমন ব্লুটুথ প্রযুক্তি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসকে সংযুক্ত করে, রাজা হ্যারাল্ডও বিভিন্ন অঞ্চলকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন।
• রাজা হ্যারাল্ড ব্লুটুথ (Harald Gormsson) ডেনমার্কের রাজা ছিলেন প্রায় ৯৫৮ থেকে ৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি ডেনমার্কে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচলন করেন এবং দেশকে একত্রিত করার জন্য ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
• ১৯৯৭ সালে এরিকসন, আইবিএম, ইন্টেল, নোকিয়া এবং তোশিবা মিলে একটি বিশেষ ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন প্রজেক্ট শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল ছোট দূরত্বে ডেটা স্থানান্তরের জন্য একটি সাধারণ প্রযুক্তি তৈরি করা।
• প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার জিম কার্ডাচ (Jim Kardach) এই নামের প্রস্তাব দেন। তিনি ইতিহাসের রাজা হ্যারাল্ড ব্লুটুথ থেকে অনুপ্রাণিত হন, কারণ ব্লুটুথ প্রযুক্তিও বিভিন্ন ডিভাইসকে “একত্রিত” করে।
• ব্লুটুথ লোগোতেও ঐতিহাসিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে—এটি রাজা হ্যারাল্ডের নামের H এবং B অক্ষর থেকে গঠিত একটি নর্ডিক রুন চিহ্ন (Nordic runes)।
• ব্লুটুথ প্রযুক্তির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ১৯৯৯ সালে, এবং বর্তমানে এটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, হেডফোন, স্পিকার ও স্মার্ট ডিভাইসে বহুল ব্যবহৃত একটি সংযোগ মাধ্যম।
• এই প্রযুক্তি ২.৪ গিগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাজ করে এবং এটি শর্ট-রেঞ্জ ওয়্যারলেস কমিউনিকেশন হিসেবে পরিচিত।
সুতরাং, “ব্লুটুথ” নামটি কেবল একটি প্রযুক্তিগত শব্দ নয়; এটি ইতিহাস ও আধুনিক প্রযুক্তির এক সুন্দর মিশেল। যেমন রাজা হ্যারাল্ড ব্লুটুথ বিচ্ছিন্ন রাজ্যগুলোকে একত্র করেছিলেন, তেমনি ব্লুটুথ প্রযুক্তি আজ বিচ্ছিন্ন ডিভাইসগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে মানুষকে সংযুক্ত করেছে।
0
Updated: 2 days ago