লাভ বা ক্ষতির শতকরা হার নির্ধারণ করার জন্য মূলত ক্রয়মূল্য ও বিক্রয়মূল্যের পার্থক্য বিবেচনা করা হয়। এখানে ক্রয়মূল্য কম এবং বিক্রয়মূল্য তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ক্রেতা স্পষ্টভাবে লাভবান হয়েছেন। অর্থাৎ বিক্রয়ের মাধ্যমে তিনি মূল খরচের অতিরিক্ত অর্থ অর্জন করেছেন। এখন দেখা যাক, কেন এই ক্ষেত্রে ২০% লাভ সঠিক উত্তর হয়।
প্রথমে প্রতিটি বলপেনের ক্রয়মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। ১৫টি বলপেন কেনা হয়েছে মোট ৭৫ টাকায়, অর্থাৎ প্রতিটি বলপেনের ক্রয়মূল্য ৭৫ ভাগ ১৫ করলে পাওয়া যায় ৫ টাকা। অপরদিকে, একই ১৫টি বলপেন বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়, ফলে প্রতিটি বলপেন বিক্রি হয়েছে ৬ টাকায়। অর্থাৎ প্রতিটি পেন বিক্রিতে লাভ হয়েছে ১ টাকা।
এখন, শতকরা লাভ নির্ধারণ করতে হলে এই অতিরিক্ত লাভকে ক্রয়মূল্যের সাথে তুলনা করতে হয়। লাভের শতকরা হার নির্ণয়ের সূত্র হলো —
(লাভ ÷ ক্রয়মূল্য) × ১০০
এখানে লাভ = ১ টাকা এবং ক্রয়মূল্য = ৫ টাকা। সুতরাং, (১ ÷ ৫) × ১০০ = ২০%। অর্থাৎ বিক্রেতা প্রতি বলপেনে ২০ শতাংশ হারে লাভ করেছেন।
এই হিসাব অনুযায়ী বোঝা যায়, মোট ১৫টি বলপেন বিক্রিতে মোট লাভ হয়েছে ১৫ × ১ = ১৫ টাকা। অর্থাৎ ৭৫ টাকায় কেনা পণ্য বিক্রি করে মোট ৯০ টাকা পাওয়া গেছে। ফলে মোট লাভ দাঁড়ায় ৯০ – ৭৫ = ১৫ টাকা, যা ৭৫ টাকার ২০ শতাংশের সমান।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— লাভের হার কখনোই বিক্রয়মূল্যের উপর নয়, বরং ক্রয়মূল্যের উপর নির্ভর করে। কারণ ক্রয়মূল্যই আসলে সেই ভিত্তি, যার উপরে লাভ বা ক্ষতির শতাংশ নির্ণয় করা হয়। তাই যদি কেউ ৭৫ টাকায় ক্রয় করে ৯০ টাকায় বিক্রি করেন, তাহলে তাঁর মূলধনের তুলনায় ২০% অতিরিক্ত অর্থ অর্জিত হয়েছে।
আরও গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, এই ধরনের প্রশ্ন থেকে ব্যবসায়িক মৌলিক ধারণা পাওয়া যায়— কীভাবে একটি পণ্য ক্রয়মূল্যের তুলনায় বেশি দামে বিক্রি করলে লাভের হার বাড়ে, এবং কম দামে বিক্রি করলে ক্ষতি হয়। একজন সচেতন ব্যবসায়ী সাধারণত তার পণ্যের ক্রয়মূল্য, পরিবহন খরচ, মজুরি ইত্যাদি বিবেচনা করে বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে যাতে লাভের হার নির্দিষ্ট থাকে।
সুতরাং এই প্রশ্নে বিক্রেতা পণ্যটি এমন মূল্যে বিক্রি করেছেন, যেখানে তাঁর ক্রয়মূল্যের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি অর্থ এসেছে। এভাবেই প্রমাণ হয় যে সঠিক উত্তর ২০%, কারণ এটি ক্রয়মূল্যের উপর নির্ভর করে সুনির্দিষ্ট গাণিতিক লাভের হার নির্দেশ করে।