গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির শপথ বাক্য পাঠ করান কে? 

A

প্রধান বিচারপতি 

B

স্পীকার 

C

প্রধানমন্ত্রী 

D

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি

উত্তরের বিবরণ

img

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী হলেও তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের আগে শপথ গ্রহণ একটি বাধ্যতামূলক সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এই শপথের মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রের প্রতি তাঁর আনুগত্য, সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকার এবং রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন। সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদে এই শপথ গ্রহণের বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, যেখানে বলা হয়েছে—রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহণের আগে তাঁকে নির্ধারিত শপথ নিতে হবে। এই শপথ স্পীকার কর্তৃক পাঠ করানো হয়

বাংলাদেশের সংসদীয় গণতন্ত্রে স্পীকার সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকির দায়িত্বে থাকেন। সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে বা বাইরে থেকে হতে পারেন। কিন্তু শপথের সময় রাষ্ট্রপতির বৈধতা কার্যকর হয় কেবল তখনই, যখন তিনি সংবিধান অনুযায়ী শপথ গ্রহণ করেন। এই শপথ অনুষ্ঠানের মূল দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় সংসদের স্পীকার। এভাবে স্পীকার কেবল সংসদের অভিভাবকই নন, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তির দায়িত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়ারও নিয়ন্ত্রক।

এই নিয়মের পেছনে কয়েকটি সাংবিধানিক ও প্রাতিষ্ঠানিক যুক্তি রয়েছে।
প্রথমত, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হন, তাই সংসদের প্রতিনিধি হিসেবে স্পীকারের মাধ্যমে শপথ পাঠ করানো সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতিফলন।
দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রপতি নির্বাহী বিভাগের প্রধান নন; বরং তিনি প্রতীকী রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি সরকারের কার্যক্রমে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেন। এজন্য তাঁর শপথ গ্রহণের দায়িত্ব বিচার বিভাগের পরিবর্তে আইনসভা তথা সংসদের প্রতিনিধি—স্পীকারের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
তৃতীয়ত, এই প্রক্রিয়া ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের বাইরে থেকে স্পীকারকে শপথগ্রহণ করানোর মাধ্যমে রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভ—বিচার, নির্বাহী ও আইনসভা—এর মধ্যে পৃথক অবস্থান ও ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়।

শপথের সময় রাষ্ট্রপতি যে বাক্য পাঠ করেন, তাতে তিনি আল্লাহর নামে বা সোলেম্ন অ্যাফার্মেশন দ্বারা অঙ্গীকার করেন যে, তিনি বাংলাদেশের সংবিধান রক্ষা ও সংরক্ষণ করবেন, রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখবেন, এবং নিজের দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে পালন করবেন। এই শপথ অনুষ্ঠানে সাধারণত প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ, সেনাবাহিনী প্রধানসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকেন।

এভাবে রাষ্ট্রপতির শপথ গ্রহণ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সাংবিধানিক শৃঙ্খলা ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। স্পীকারের মাধ্যমে শপথ পাঠ করানো আসলে রাষ্ট্রের আইনি ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার প্রতীক, যা রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বোচ্চ স্তরে সংবিধানকে কেন্দ্রীয় আসনে স্থাপন করে।

ChatGPT can make mistakes. Check important info.
Unfavorite

0

Updated: 3 days ago

Related MCQ

আওয়ামী মুসলিমলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক কে ছিলেন? 

Created: 3 days ago

A

শেখ মুজিবুর রহমান 

B

মাওলানা ভাষানী

C

 আবুল হাশিম 

D

শামসুল হক

Unfavorite

0

Updated: 3 days ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD