‘চাঁদমুখ’ শব্দটি উপমিত কর্মধারয় সমাস, যেখানে উপমান ও উপমেয়—দুটি পদ একত্রে একটি নতুন অর্থ তৈরি করে। এখানে ‘চাঁদ’ হলো উপমান, আর ‘মুখ’ হলো উপমেয়। অর্থাৎ মুখকে চাঁদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। তাই ‘চাঁদমুখ’-এর ব্যাস বাক্য দাঁড়ায়—চাঁদের ন্যায় মুখ বা চাঁদের মত মুখ।
এই সমাসে সাধারণ গুণটি সরাসরি উল্লেখ করা হয় না, বরং তা ধারণা করে নিতে হয়। উপমেয় পদটি প্রথমে থাকে এবং তার পরেই উপমান পদ যুক্ত হয়।
-
সাধারণ গুণটি ব্যাসবাক্যে না থাকলেও তা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। যেমন—চাঁদের মতো উজ্জ্বল ও সুন্দর মুখ বোঝাতে ‘চাঁদমুখ’ ব্যবহৃত হয়।
-
উপমিত কর্মধারয় সমাস-এ দুটি পদ অর্থগতভাবে পরস্পরের সঙ্গে তুলনামূলক সম্পর্ক স্থাপন করে।
-
এই সমাসে উপমেয় পদটি পূর্বে বসে, যেমন—“মুখ চন্দ্রের ন্যায়” থেকে “চন্দ্রমুখ”, বা “পুরুষ সিংহের ন্যায়” থেকে “সিংহপুরুষ”।
-
এমন সমাসে উপমান বা তুলনার বস্তু সাধারণত বিশেষ গুণ বা সৌন্দর্যের প্রতীক হয়। যেমন, চাঁদ সৌন্দর্যের প্রতীক, তাই ‘চাঁদমুখ’ মানে সুন্দর মুখ।
-
ব্যাকরণগতভাবে এটি কর্মধারয় সমাসের একটি বিশেষ রূপ, যেখানে তুলনামূলক অর্থে উপমানকে যোগ করে নতুন শব্দ গঠিত হয়।
-
সাহিত্যিক ব্যবহারেও এই ধরণের সমাসের প্রচলন ব্যাপক। যেমন—“পদ্মনয়ন”, “চন্দ্রবদন”, “সিংহহৃদয়” প্রভৃতি শব্দেও একই কাঠামো দেখা যায়।
অতএব, ‘চাঁদমুখ’ এমন এক শব্দ, যেখানে মুখকে চাঁদের সঙ্গে তুলনা করে সৌন্দর্য প্রকাশ করা হয়েছে। এ কারণেই এটি উপমিত কর্মধারয় সমাসের অন্তর্গত, যার ব্যাসবাক্য—“চাঁদের মত মুখ।”