দুই বর্ণের পরস্পর মিলনকে কি বলে?
A
সন্ধি
B
কারক
C
সমাস
D
প্রত্যয়
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ব্যাকরণে ধ্বনি ও বর্ণের মিলনের মাধ্যমে নতুন শব্দ সৃষ্টির একটি প্রক্রিয়া রয়েছে, যাকে সন্ধি বলা হয়। এটি এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে দুটি বর্ণ বা ধ্বনি পরস্পরের সংযোগে উচ্চারণ ও রূপে পরিবর্তন ঘটিয়ে একটি নতুন শব্দ তৈরি করে। তাই প্রশ্নে “দুই বর্ণের পরস্পর মিলনকে কি বলে?” – এর সঠিক উত্তর হলো “সন্ধি”।
সন্ধি শব্দটি সংস্কৃত “সন্ধি” থেকে এসেছে, যার অর্থ সংযোগ বা মিলন।
-
যখন দুটি বর্ণ বা ধ্বনি পাশাপাশি আসে, তখন উচ্চারণের সুবিধার্থে বা ধ্বনিগত কারণে তারা একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়।
-
এই মিলনে ধ্বনি পরিবর্তন ঘটে, কখনও স্বরবর্ণের রূপ বদলে যায়, কখনও ব্যঞ্জনবর্ণে পরিবর্তন আসে।
-
এর ফলে নতুন ও সহজ উচ্চারণযোগ্য একটি শব্দ গঠিত হয়, যা ভাষার ধ্বনিতাত্ত্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
বাংলা ব্যাকরণে প্রধানত তিন প্রকারের সন্ধি দেখা যায় —
-
স্বরসন্ধি: দুই স্বরবর্ণের মিলন থেকে নতুন স্বরধ্বনি তৈরি হয়। যেমন— রাম + ইন্দ্র = রামেন্দ্র।
-
ব্যঞ্জনসন্ধি: দুই ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে পরিবর্তন ঘটে। যেমন— তৎ + কর্ষণ = তৎকর্ষণ → তৎকর্ষণ।
-
বিসর্গসন্ধি: কোনো শব্দের শেষে থাকা “ঃ” চিহ্ন বা বিসর্গ পরবর্তী বর্ণের সঙ্গে মিলিত হয়ে পরিবর্তিত হয়। যেমন— তঃ + করোতি = তঃকরোতি → তঃকরোতি।
অন্য বিকল্পগুলোর মধ্যে কোনোটি “দুই বর্ণের মিলন” অর্থ প্রকাশ করে না।
-
কারক শব্দটি বাক্যে ক্রিয়া ও কর্মের সম্পর্ক নির্দেশ করে।
-
সমাস হলো দুটি বা ততোধিক শব্দের যোগে নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া, যেখানে অর্থগত মিলন ঘটে, ধ্বনিগত নয়।
-
প্রত্যয় হলো শব্দের শেষে যুক্ত একটি অংশ, যা মূল শব্দের অর্থ বা ব্যাকরণিক রূপ পরিবর্তন করে, কিন্তু এটি দুই বর্ণের মিলন নয়।
তাই ব্যাকরণিকভাবে “দুই বর্ণের পরস্পর মিলন” বলতে বোঝায় সন্ধি, যা ধ্বনি বা বর্ণের সংযোগের মাধ্যমে নতুন রূপ তৈরি করে।
অতএব, প্রশ্নটির সঠিক উত্তর হলো “সন্ধি”।
0
Updated: 3 days ago
নাবিক এর সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
Created: 3 days ago
A
নৈ + বিক
B
নো +ইক
C
নে + ইক
D
কোনোটি নয়
বাংলা ভাষায় সন্ধি এমন এক প্রক্রিয়া যেখানে দুটি ধ্বনি বা শব্দ মিলিত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে। এই মিলনের ফলে উচ্চারণ ও অক্ষর উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু সব শব্দই সন্ধি দ্বারা গঠিত নয়; কিছু শব্দ নিজস্ব রূপে মৌলিক বা তৎসম, অর্থাৎ কোনো সন্ধি প্রক্রিয়া থেকে উদ্ভূত নয়। প্রশ্নে উল্লিখিত শব্দ “নাবিক” তেমনই একটি শব্দ। সঠিক উত্তর “কোনোটি নয়” কারণ “নাবিক” শব্দের কোনো সন্ধি বিচ্ছেদ হয় না।
নাবিক শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত “নাবিক” শব্দ থেকেই, যার অর্থ নৌযান চালক বা জলযানের অধিনায়ক।
-
“নাব” শব্দটি সংস্কৃত “নৌ” বা “নৌকা” অর্থে ব্যবহৃত হয়, যার সঙ্গে “ইক” প্রত্যয় যুক্ত হয়ে “নাবিক” শব্দটি গঠিত হয়েছে।
-
তবে এই যোগসূত্রটি সন্ধি নয়, বরং প্রত্যয় যোগে শব্দগঠন। অর্থাৎ এখানে শব্দের কোনো ধ্বনি মিলন বা পরিবর্তন ঘটেনি, শুধু মূল শব্দের সঙ্গে প্রত্যয় যুক্ত হয়েছে।
-
ব্যাকরণ অনুসারে, সন্ধি তখনই হয় যখন দুটি শব্দ বা ধাতু মিলিত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি করে এবং সেখানে উচ্চারণগত পরিবর্তন দেখা যায়, যেমন— “রাজ + ইন্দ্র = রাজেন্দ্র” বা “গুরু + আচার্য = গুরুাচার্য”।
-
কিন্তু “নাবিক” শব্দে এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অন্য বিকল্পগুলো ভুল কারণ—
-
নৈ + বিক: এখানে “নৈ” কোনো অর্থবোধক শব্দ নয়, তাই এর মাধ্যমে “নাবিক” তৈরি সম্ভব নয়।
-
নো + ইক: ধ্বনিগতভাবে কাছাকাছি মনে হলেও “নো” শব্দটি আলাদাভাবে অর্থবোধক নয় এবং এই রূপটি ব্যাকরণগতভাবে অগ্রহণযোগ্য।
-
নে + ইক: একইভাবে, “নে” ও “ইক” মিলে কোনো অর্থপূর্ণ বা প্রামাণ্য রূপ দেয় না।
মূল যুক্তিগুলো হলো:
-
“নাবিক” একটি তৎসম শব্দ, যা সরাসরি সংস্কৃত ভাষা থেকে গৃহীত।
-
এতে কোনো স্বর বা ব্যঞ্জনের পরিবর্তন হয়নি, তাই এটি সন্ধি নয়।
-
শব্দটি গঠিত হয়েছে মূল শব্দ “নৌ” বা “নাব” থেকে “ইক” প্রত্যয় সংযোজনে।
সুতরাং, “নাবিক” শব্দে কোনো সন্ধি প্রক্রিয়া বিদ্যমান নেই। তাই প্রদত্ত প্রশ্নে সঠিক উত্তর হলো “কোনোটি নয়”।
0
Updated: 3 days ago
’গঙ্গোর্মি’ শব্দের সঠিক সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
গঙ্গা + ঊর্মি
B
গঙ্গা + উর্মি
C
গঙা + উর্মি
D
গঙ্গা + ওর্মি
স্বরসন্ধি হলো দুইটি স্বরধ্বনির মিলন, যা শব্দের সঠিক উচ্চারণ ও রূপ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
নিয়ম: অ-কার বা আ-কারের পরে উ-কার থাকলে, উভয়ে মিলিত হয়ে ও-কার গঠন করে এবং ও-কার পূর্ববর্তী ব্যঞ্জনে যুক্ত হয়।
-
উদাহরণ:
-
সূর্য + উদয় = সূর্যোদয়
-
যথা + উচিত = যথোচিত
-
গৃহ + ঊর্ধ্ব = গৃহোর্ধ্ব
-
গঙ্গা + ঊর্মি = গঙ্গোর্মি
-
-
অন্যান্য উদাহরণ: নীলোৎপল, চলোর্মি, মহোৎসব, নবোঢ়া, ফলোদয়, যথোপযুক্ত, হিতোপদেশ, পরোপকার, প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি।
0
Updated: 1 month ago
’প্রাতরাশ’ শব্দটির সঠিক সন্ধি - বিচ্ছেদ কোনটি?
Created: 2 months ago
A
প্রাত + আশ
B
প্রাতঃ + আঁশ
C
প্রাতঃ + আশ
D
প্রাতঃ + রাশ
অ-ধ্বনির সঙ্গে বিসর্গ মিলন
অ-ধ্বনির সঙ্গে বিসর্গ যুক্ত হয়ে এর পরে অ, আ, উ ধ্বনি এলে বিসর্গ ও অ-ধ্বনি মিলিত হয়।
উদাহরণ:
-
পুনঃ + অধিকার = পুনরধিকার
-
প্রাতঃ + আশ = প্রাতরাশ
-
পুনঃ + আবৃত্তি = পুনরাবৃত্তি
-
পুনঃ + উক্ত = পুনরুক্ত
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, অষ্টম শ্রেণি, ২০২৫ সালের সংস্করণ
0
Updated: 2 months ago