‘চোখের বালি’ একটি প্রচলিত বাংলা প্রবাদ, যার অর্থ হলো শত্রু বা এমন কেউ, যাকে দেখলেই মনে বিরক্তি বা ঈর্ষা জাগে। এই প্রবাদটি সাধারণত এমন ব্যক্তিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, যিনি কারও সুখ বা আনন্দে সহ্য করতে পারেন না এবং সবসময় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক মনোভাব পোষণ করেন।
এই বাক্যাংশের উৎপত্তি এসেছে চোখে বালি পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে। যেমন চোখে বালি পড়লে অস্বস্তি, ব্যথা ও জ্বালা সৃষ্টি হয়, তেমনি জীবনে কিছু মানুষ থাকে যারা সর্বদা কষ্ট বা অস্বস্তির কারণ হয়। তাই প্রতীকী অর্থে ‘চোখের বালি’ বলতে এমন শত্রু বা বিরক্তিকর ব্যক্তিকেই বোঝানো হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
-
‘চোখের বালি’ শব্দগুচ্ছটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ‘বালি’ বোঝায় ক্ষুদ্র অথচ বিরক্তিকর কিছু, যা চোখে পড়লে অসহ্য যন্ত্রণা সৃষ্টি করে।
-
এই প্রবাদটি ব্যবহার করা হয় এমন পরিস্থিতিতে, যেখানে কেউ কারও জীবনে বিরক্তি, ঈর্ষা বা শত্রুতার কারণ হয়। যেমন—“ওই মেয়েটি আমার চোখের বালি”—অর্থাৎ সে এমন একজন, যার উপস্থিতি সহ্য হয় না।
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসের নামও রেখেছিলেন ‘চোখের বালি’, যেখানে এই রূপক অর্থটি গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। উপন্যাসে সম্পর্ক, ঈর্ষা, ভালোবাসা ও প্রতিশোধের জটিলতা এই নামের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
-
সাধারণভাবে, এই প্রবাদটি মানসিক বিরাগ বা ঈর্ষার প্রকাশ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কেউ অন্যের সৌন্দর্য, সাফল্য বা সুখ সহ্য করতে না পারলে, তাকে চোখের বালি বলা হয়।
-
এটি কখনও কখনও রাগ বা প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ক্ষেত্রে যেখানে আবেগের সংঘাত থাকে।
সবশেষে বলা যায়, ‘চোখের বালি’ এমন এক রূপক প্রবাদ, যা শত্রুতা, ঈর্ষা ও অসহ্যতার অনুভূতিকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করে। তাই এর প্রকৃত অর্থ ‘শত্রু’ বা এমন কেউ, যিনি কারও জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্ট বা বিরক্তির কারণ হন।