কোনটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস?
A
চিলেকোঠার সিপাই
B
আগুনের পরশমণি
C
একাত্তরের দিনগুলি
D
পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘আগুনের পরশমণি’ অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এর রচয়িতা হুমায়ূন আহমেদ, যিনি ১৯৯৪ সালে উপন্যাসটি প্রকাশ করেন এবং পরে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করে সেটিকে আরও জনপ্রিয় করে তোলেন। এই উপন্যাসে তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র, মানুষের ভয়, ভালোবাসা ও দেশপ্রেমকে গভীর আবেগে ফুটিয়ে তুলেছেন।
উপন্যাসটির মূল প্রেক্ষাপট একটি ছোট গ্রামের পরিবারকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। গ্রামটির মানুষের জীবনে যুদ্ধ কিভাবে প্রভাব ফেলে, তারা কিভাবে স্বাধীনতার স্বপ্নে জেগে ওঠে—সেই কাহিনিই এখানে বাস্তবভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
-
‘আগুনের পরশমণি’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্ররা সাধারণ মানুষ হলেও তাদের মধ্যে রয়েছে গভীর দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের মানসিকতা।
-
গল্পে দেখা যায়—একজন তরুণ মুক্তিযোদ্ধা গ্রামের এক পরিবারের আশ্রয় নেয়, আর এই পরিবারের জীবনে শুরু হয় নতুন এক সংগ্রাম।
-
হুমায়ূন আহমেদ যুদ্ধের নির্মমতা, মানুষের ভয়, আশা ও ত্যাগকে খুব সূক্ষ্মভাবে প্রকাশ করেছেন।
-
উপন্যাসটির ভাষা সহজ ও সাবলীল, যা পাঠককে সরাসরি চরিত্রগুলোর অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত করে।
-
এতে ধর্ম, সংস্কার ও মানবতার মধ্যে সংঘাতের পাশাপাশি স্বাধীনতার অনুপ্রেরণাও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
-
লেখক শুধু যুদ্ধের বীরত্ব নয়, বরং যুদ্ধের ভেতর লুকিয়ে থাকা মানবিকতা, প্রেম ও কষ্টকেও তুলে ধরেছেন।
-
এই উপন্যাসের মাধ্যমে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধ কেবল রণক্ষেত্রের লড়াই নয়; এটি ছিল হৃদয়ের যুদ্ধ—ন্যায়, স্বাধীনতা ও অস্তিত্বের জন্য সংগ্রাম।
-
পরবর্তীতে লেখক নিজেই উপন্যাসটির ওপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম সফল ও দর্শকপ্রিয় কাজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
-
চলচ্চিত্রে মুনমুন, আবুল হায়াত, ডলি জহুরসহ আরও অনেক অভিনয়শিল্পীর বাস্তবধর্মী অভিনয় গল্পকে আরও জীবন্ত করে তোলে।
-
‘আগুনের পরশমণি’ আজও পাঠকদের কাছে শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়, বরং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগিয়ে রাখার একটি প্রতীকী রচনা হিসেবে বিবেচিত।
সার্বিকভাবে বলা যায়, ‘আগুনের পরশমণি’ হলো এমন একটি উপন্যাস যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে সাহিত্যরূপে অমর করে রেখেছে। এটি শুধু একটি যুদ্ধের গল্প নয়, বরং মানুষের ভালোবাসা, ত্যাগ ও সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি।
0
Updated: 3 days ago
"আমার সোনার বাংলা" গানটির সুরকার কে?
Created: 2 weeks ago
A
কাজী নজরুল ইসলাম
B
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
C
দেবাশীষ রায়
D
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
‘আমার সোনার বাংলা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এক অনন্য দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এটি বাঙালির জাতীয় চেতনা, দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগের প্রতীক।
প্রকাশ ও প্রেক্ষাপট:
-
গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩১২ বঙ্গাব্দে (১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ) ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায়।
-
এটি রচিত হয়েছিল ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গ প্রক্রিয়ার বিরোধিতা জানাতে। বঙ্গভঙ্গের সময় বাঙালির হৃদয়ে যে দেশপ্রেমের ঢেউ উঠেছিল, এই গান সেই আবেগের এক সজীব প্রকাশ।
-
‘আমার সোনার বাংলা’ সঙ্গীতটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বদেশ পর্যায়ের গান, যেখানে মাটির টান, প্রকৃতিপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি ভক্তি একত্রে মিশে আছে।
সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য ও তাৎপর্য:
-
এই গানের প্রথম ১০ পঙ্ক্তি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
-
গানটি রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’-এর স্বরবিতান অংশে অন্তর্ভুক্ত।
-
গানের সুর করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে, তবে এতে বাউল গগন হরকরা-এর জনপ্রিয় গান “আমার মন যে করে আয় রে উড়ু উড়ু”-এর সুরের প্রভাব বিদ্যমান।
-
এই গান বাংলার প্রকৃতি, মাটি, ধানক্ষেত, নদী ও বাতাসের মধ্য দিয়ে এক স্নিগ্ধ দেশপ্রেমের আবহ সৃষ্টি করে।
অতএব, ‘আমার সোনার বাংলা’ কেবল একটি দেশাত্মবোধক গান নয়, এটি বাঙালির স্বাধীনতা, ঐক্য ও মাতৃভূমির প্রতি অনন্ত ভালোবাসার প্রতীক।
0
Updated: 2 weeks ago
জেলে জীবন কেন্দ্রিক উপন্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
গঙ্গা
B
পুতুলনাচের ইতিকথা
C
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
D
গৃহদাহ
গঙ্গা উপন্যাস
-
সমরেশ বসুর বিখ্যাত রচনা ‘গঙ্গা’ প্রকাশিত হয় ১৯৫৭ সালে।
-
উপন্যাসটির মূল পটভূমি হলো জেলে সম্প্রদায়ের জীবন—বিশেষত অবিভক্ত ২৪ পরগনার মাছধরা মানুষদের জীবনসংগ্রাম।
-
এখানে মূল কেন্দ্রবিন্দু চরিত্র নয়, বরং জেলেদের জীবন। তাদের দৈনন্দিন কষ্ট, লড়াই ও অভ্যাস—সবই লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন।
-
চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে: সাইদার নিবারণ, নিবারণের ভাই পাঁচু, ছেলে বিলাস, বশীর, সয়ারাম, পাচী (ছায়া), রসিক, দুলাল, দামিনী, হিমি, আতর, মহাজন ব্রজেন ঠাকুর প্রমুখ।
-
প্রথমে মনে হয় বিলাস ও হিমিই নায়ক-নায়িকা, কিন্তু আসলে সব চরিত্রকে ঘিরে আছেন নিবারণ—তাই নিবারণকেই কেন্দ্রীয় চরিত্র ধরা হয়।
পুতুলনাচের ইতিকথা
-
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯৩৬ সালে।
-
লেখকের মতে, সাহিত্যেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। এ উপন্যাসে সেই দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ দেখা যায়।
-
ব্রিটিশ আমলে বাঙালি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানসিক দ্বন্দ্ব ও অস্তিত্ব সংকট শশী চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
-
এখানে ‘পুতুল’ বলতে বোঝানো হয়েছে—যারা নিজের দৃঢ় অবস্থান রাখতে পারে না, বরং অন্যের সামান্য প্রভাবেই দোদুল্যমান হয়ে যায়।
-
প্রধান চরিত্র: শশী, কুসুম, হারু ঘোষ প্রমুখ।
হাঁসুলী বাঁকের উপকথা
-
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই উপন্যাসটি মূলত আঞ্চলিক কাহিনি।
-
কাহিনি আবর্তিত হয়েছে বাঁশবাড়ি গ্রামের কাহার জাতিকে ঘিরে।
-
পুরোনো বিশ্বাস, কুসংস্কার আর সময়ের পরিবর্তনে তাদের জীবনে যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়, তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
গৃহদাহ
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘গৃহদাহ’, যা প্রকাশিত হয় ১৯২০ সালে, মাসিক ভারতবর্ষ পত্রিকায়।
-
এর মূল বিষয় হলো ত্রিভুজ প্রেম।
-
নায়িকা অচলা—যার প্রতি মহিম ও সুরেশ দুই পুরুষের আকর্ষণ-বিকর্ষণ এই কাহিনির মূল কেন্দ্র।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
'ইব্রাহিম কার্দি' বিখ্যাত চরিত্রটি কোন গ্রন্থে পাওয়া যায়?
Created: 2 months ago
A
বিষাদ সিন্ধু
B
রক্তাক্ত প্রান্তর
C
নীল দর্পণ
D
জমিদার দর্পণ
‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটক
-
‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ মুনীর চৌধুরী রচিত নাটক, যা মহাকবি কায়কোবাদের ‘মহাশ্মশান’ গ্রন্থের কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত।
-
এটি মুনীর চৌধুরীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌলিক নাটক।
-
নাটকটি রচিত হয়েছে পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (১৭৬১) অবলম্বনে এবং এতে তিনটি অঙ্ক রয়েছে।
-
‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ ঐতিহাসিক নাটক নয়, বরং ইতিহাস-আশ্রিত নাটক হিসেবে পরিচিত।
-
নাটকের জনপ্রিয় উক্তি:
“মানুষ মরে গেলে পচে যায়। বেঁচে থাকলে বদলায়।”
-
উক্তিটি বলেছেন নবাব সুজাউদ্দৌলা।
-
-
উল্লেখযোগ্য চরিত্র: ইব্রাহিম কার্দি, জোহরা, হিরণবালা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা এবং বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 2 months ago