বাংলা সাহিত্যের সনেট রচনার প্রবর্তক কে?
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
গদেবেন্দ্রনাথ সেন
D
মোহিত লাল মজুমদার
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে সনেট রচনার সূচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক ঘটনা, যা আধুনিক কাব্যরীতিকে নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছে। বাংলা ভাষায় প্রথম সনেট রচনার কৃতিত্ব যিনি অর্জন করেন তিনি হলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তিনি পাশ্চাত্য সাহিত্যের প্রভাব গ্রহণ করে বাংলা কবিতায় এক নতুন ধারার সূচনা করেন, যার ফলস্বরূপ বাংলা সাহিত্য সমৃদ্ধ হয় বৈচিত্র্য ও রূপগত পরিশীলনে।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ইংরেজি ও ইউরোপীয় সাহিত্যের গভীর অধ্যয়ন করেছিলেন। ইতালীয় কবি পেত্রার্ক ও ইংরেজ কবি মিলটন-এর সনেট রচনার ধারা থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হন। পশ্চিমা ছন্দ ও কাঠামোকে বাংলা ভাষায় রূপান্তর করা ছিল একটি কঠিন কাজ, কিন্তু মাইকেল তার অসাধারণ দক্ষতা ও ভাষাবোধ দিয়ে তা সফলভাবে সম্পন্ন করেন। এর ফলে বাংলা কাব্যে একটি নতুন রীতির সূচনা ঘটে।
তিনি প্রথম সনেট রচনা করেন ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’ নামক গ্রন্থে। এই কাব্যগ্রন্থে মোট ৭২টি সনেট সংকলিত হয়েছিল, যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম সনেটগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃত। এই সনেটগুলোতে দেশপ্রেম, মানবতাবাদ, প্রকৃতিপ্রেম, ধর্ম, প্রেম ও দার্শনিক চিন্তার মতো নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। মাইকেল শুধু সনেটের কাঠামোই অনুসরণ করেননি, বরং এর মাধ্যমে তিনি বাঙালি সমাজের ভাবনা ও অনুভূতিকে শিল্পরূপে প্রকাশ করেছেন।
তার সনেটগুলোতে চতুর্দশ পঙ্ক্তির বিন্যাস, অন্ত্যমিলের সূক্ষ্ম ব্যবহার, এবং ভাবগত ঐক্য স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। তিনি বাংলা ভাষায় ইতালীয় ও ইংরেজি সনেটরীতির মিশ্রণ ঘটান, যা তাকে বাংলা সনেটের জনক হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়। তার সনেটগুলোতে দেখা যায় উচ্চ ভাবধারা ও গভীর ভাবুকতা, যা বাংলা সাহিত্যে আগে দেখা যায়নি।
মাইকেল মধুসূদনের সনেট কেবল একটি সাহিত্যরীতি নয়, বরং এটি ছিল আধুনিক বাঙালি চেতনার প্রতিফলন। তিনি প্রমাণ করেন যে বাংলা ভাষা শুধু সহজ কবিতা নয়, বরং জটিল ও পরিশীলিত কবিতার মাধ্যমও হতে পারে। তার এই সৃষ্টিশীল প্রয়াস পরবর্তী কবিদের, বিশেষ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মোহিতলাল মজুমদার ও জীবনানন্দ দাশের মতো কবিদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে ওঠে।
অতএব, বাংলা সাহিত্যে সনেট রচনার প্রবর্তক হিসেবে মাইকেল মধুসূদন দত্ত-এর নাম সর্বজনস্বীকৃত। তার উদ্যোগেই বাংলা কবিতায় ইউরোপীয় রীতির সার্থক প্রয়োগ ঘটে, যা বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের ভিত্তি স্থাপন করে।
0
Updated: 3 days ago
মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'বীরাঙ্গনা' কোন ধরনের কাব্য?
Created: 3 weeks ago
A
পত্রকাব্য
B
নাট্যকাব্য
C
গীতিকাব্য
D
নৃত্যকাব্য
‘বীরাঙ্গনা কাব্য’
-
এটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত পত্রকাব্য।
-
কাব্যটি ১৮৬২ সালে প্রকাশিত হয় এবং বাংলা সাহিত্যে পত্রাকারের প্রথম কাব্য হিসেবে পরিচিত।
-
রোমান কাব্য ‘হেরোইদাইদস’ অনুকরণে ‘বীরাঙ্গনা’ রচিত।
-
কাব্যে মোট ১১টি পত্র রয়েছে।
-
পৌরাণিক নারীরা মধুসূদনের হাতে আধুনিক মানুষ হিসেবে পুনর্জাগরিত হয়েছেন এবং তাদের প্রণয়, কামনা ও ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নির্ভীকচিত্তে প্রকাশ করেছেন।
-
বীরাঙ্গনা (১৮৬২) পত্রকাব্যের নায়িকাদের মধ্যে জনা, কৈকেয়ী, তারা প্রমুখ পৌরাণিক নারী তাদের স্বামী বা প্রেমিকের প্রতি নিজের বাসনা ও চাওয়া প্রকাশ করেছেন।
-
নারী চরিত্রে এই ধরনের দৃঢ়তা বাংলা সাহিত্যে মধুসূদনের আগে আর কারও রচনায় দেখা যায়নি।
0
Updated: 3 weeks ago
মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'একেই কি বলে সভ্যতা'র প্রভাব রয়েছে নিচের কোন প্রহসনে?
Created: 1 month ago
A
এর উপায় কি
B
টালা অভিনয়
C
ফাঁস কাগজ
D
কমলে কামিনী
‘এর উপায় কি’ প্রহসন
-
রচয়িতা: মীর মশাররফ হোসেন
-
এটি একটি উনিশ শতকের প্রহসন, যা সমাজের কিছু মানুষের স্ত্রীর প্রতি অবহেলা, মদ ও পতিতাবৃত্তিতে আকৃষ্ট হয়ে বিভিন্ন অনাচার ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণকে তুলে ধরে।
-
প্রহসনে প্রভাব রয়েছে মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ নাটকের।
উল্লেখযোগ্য চরিত্র
-
রাধাকান্ত
-
স্ত্রী মুক্তকেশী
-
নয়নতারা
-
ইয়ার মদন প্রমুখ
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
0
Updated: 1 month ago
‘মদনিকা’ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত কোন নাটকের চরিত্র?
Created: 1 month ago
A
পদ্মাবতী
B
মেঘনাদবধ
C
কৃষ্ণকুমারী
D
শর্মিষ্ঠা
‘কৃষ্ণকুমারী’ মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ নাটক, যা বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ট্রাজেডি হিসেবে স্বীকৃত। নাটকটির কাহিনি সংগৃহীত হয়েছে উইলিয়াম টডের ‘রাজস্থান’ নামক গ্রন্থ থেকে। এটি ১৮৬০ সালে রচিত হলেও ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হয়। প্রায় সাত বছর পর, ১৮৬৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শোভাবাজার থিয়েটারে নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়।
এই নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ—
-
কৃষ্ণকুমারী
-
মদনিকা
-
ভীমসিংহ
-
জগৎসিংহ
-
ধনদাস প্রমুখ
উৎস:
0
Updated: 1 month ago