ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের নাম-
A
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
B
বাংলা সাহিত্যের কথা
C
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
D
বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত
উত্তরের বিবরণ
ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য গবেষণায় এক অনন্য ব্যক্তিত্ব। তাঁর রচিত ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান হিসেবে গণ্য হয়। এই গ্রন্থে তিনি বাংলা সাহিত্যের উৎস, বিকাশ ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। গ্রন্থটি কেবল সাহিত্য ইতিহাস নয়, বরং ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও সমাজজীবনের পারস্পরিক সম্পর্কও তুলে ধরে।
– ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ গ্রন্থটি মূলত বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ধারা থেকে আধুনিক পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বিশ্লেষণধর্মী কাজ। এখানে তিনি বাংলা সাহিত্যের উৎপত্তিকে পালি, সংস্কৃত, প্রাকৃত ও আপভ্রংশ ভাষার ধারার সঙ্গে যুক্ত করে দেখিয়েছেন।
– বইটিতে তিনি সাহিত্যকে ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারার সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, যা বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক বিকাশ বোঝাতে সহায়ক।
– ড. শহীদুল্লাহর বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, বাংলা ভাষার মূল শিকড় আর্য ও দ্রাবিড় ভাষার সংমিশ্রণে গঠিত, এবং এর সাহিত্যও তেমনি বহুমাত্রিক উৎস থেকে সমৃদ্ধ হয়েছে।
– তিনি প্রমাণ করেছেন যে বাংলা সাহিত্য কেবল কাব্যিক প্রকাশ নয়, বরং সমাজের ইতিহাস, ধর্মীয় চেতনা ও জাতিগত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন।
– গ্রন্থে চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি, মুকুন্দরাম, ভারতচন্দ্র প্রমুখ কবিদের সাহিত্যকীর্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্যের ধারাবাহিকতা তুলে ধরেছেন।
– আধুনিক যুগে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ লেখকের অবদান নিয়েও তিনি সম্যক আলোচনা করেছেন।
– তাঁর এই গ্রন্থের ভাষা প্রাঞ্জল, তথ্যভিত্তিক ও বিশ্লেষণধর্মী হওয়ায় এটি গবেষণার ক্ষেত্রে অন্যতম নির্ভরযোগ্য উৎস হিসেবে স্বীকৃত।
– বইটির মাধ্যমে ড. শহীদুল্লাহ প্রমাণ করেছেন যে সাহিত্য শুধু রস বা বিনোদনের মাধ্যম নয়, বরং জাতিসত্তার পরিচয় ও ঐতিহ্যের বাহক।
– তিনি সাহিত্য ইতিহাস লেখার সময় কোনো ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব না রেখে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেছেন, যা তাঁর রচনাকে আরও মূল্যবান করে তুলেছে।
– এই গ্রন্থের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে তিনি সাহিত্যকে যুগভিত্তিকভাবে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন—প্রাক-চৈতন্য যুগ, চৈতন্য যুগ ও পরবর্তী আধুনিক যুগ—যার ফলে বাংলা সাহিত্যের বিকাশের একটি স্পষ্ট ধারাবাহিক চিত্র পাওয়া যায়।
সব মিলিয়ে, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ বাংলা সাহিত্য ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে একটি দিকনির্দেশক গ্রন্থ। এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির শেকড় অন্বেষণের পাশাপাশি আমাদের সাহিত্যিক ঐতিহ্যের পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা উপস্থাপন করে।
0
Updated: 3 days ago
ডঃ মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহর মতে বড় চন্ডী দাসের জীবনকাল কত?
Created: 2 weeks ago
A
খ্রিষ্টীয় ১৩৭০-১৪৩৩
B
খ্রিষ্টীয় ১৩৭৩-১৪০৪
C
খ্রিষ্টীয় ১৩৮৬-১৪২০
D
খ্রিষ্টীয় ১৩২৬-১৩৯৫
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র মতে, বড়ু চণ্ডীদাসের জীবনকাল ১৩৭০ থেকে ১৪৩৩ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি এই সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন ঐতিহাসিক দলিল, ভাষাগত বিশ্লেষণ ও সাহিত্যিক প্রমাণের ভিত্তিতে।
-
বড়ু চণ্ডীদাস মধ্যযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ বৈষ্ণব কবি, যিনি মানবপ্রেম ও ভক্তিবাদের সংমিশ্রণে বাংলা কাব্যকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেন।
-
তাঁর রচনায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’, যা বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম কাব্যগ্রন্থগুলোর একটি।
-
ড. শহীদুল্লাহ্র নির্ধারিত এই সময়কাল অনুযায়ী চণ্ডীদাস ছিলেন চতুর্দশ থেকে পঞ্চদশ শতকের সন্ধিক্ষণের কবি, যিনি বৈষ্ণব আন্দোলনের প্রারম্ভিক যুগে সাহিত্যচর্চা করেছেন।
-
তাঁর কবিতায় ভক্তি, মানবতা ও প্রেমের মিলনধারা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
0
Updated: 2 weeks ago
আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’উক্তিটি কার?
Created: 1 month ago
A
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
B
আবু জাফর শামসুদ্দীন
C
মীর মশাররফ হোসেন
D
প্রমথ চৌধুরী
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
-
জন্ম: ১০ জুলাই ১৮৮৫, পেয়ারা গ্রাম, চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ।
-
মৃত্যু: ১৯৬৯।
-
তিনি একজন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও ভাষাতত্ত্ববিদ।
-
বিখ্যাত উক্তি: “আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।”
অর্জন ও কর্মকাণ্ড:
-
ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ে বহু প্রবন্ধ লিখেছেন এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন।
-
মুসলিম বাংলার প্রথম শিশুপত্রিকা আঙুর (১৯২০) তাঁর সম্পাদনায় আত্মপ্রকাশ করে।
-
আঞ্চলিক ভাষার অভিধান সম্পাদনা তাঁর বিশেষ কীর্তি।
-
মুহম্মদ আবদুল হাই-এর সঙ্গে যুগ্ম-সম্পাদিত Traditional Culture in East Pakistan (১৯৬১)।
-
Buddhist Mystic Songs (১৯৬০) চর্যাপদের অনুবাদ ও সম্পাদনা।
-
চর্যাপদ সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম প্রমাণের স্বীকৃতি তার।
প্রকাশিত ও সম্পাদিত গ্রন্থসমূহ:
-
সিন্দবাদ সওদাগরের গল্প
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
দীওয়ান-ই-হাফিজ
-
শিকওয়াহ ও জওয়াব-ই-শিকওয়াহ
-
রুবাইয়াত-ই-উমর খয়্যাম
-
Essays on Islam
-
আমাদের সমস্যা
-
পদ্মাবতী
-
বাংলা সাহিত্যের কথা (২ খণ্ড)
-
বিদ্যাপতি শতক
-
বাংলা আদব কী তারিখ
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস
-
বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত
-
কুরআন শরীফ
-
অমরকাব্য
-
সেকালের রূপকথা
0
Updated: 1 month ago
'আঞ্চলিক ভাষার অভিধান' সম্পাদনা করেন কে?
Created: 1 month ago
A
নজিবুর রহমান
B
আহমদ শরীফ
C
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
D
আব্দুল হাই
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
-
তিনি ভারতীয় উপমহাদেশের একজন স্মরণীয় বাঙালি ব্যক্তিত্ব, বহুভাষাবিদ, বিশিষ্ট শিক্ষক ও দার্শনিক ছিলেন।
-
তাঁর জন্ম ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে।
-
তিনি ‘জ্ঞানতাপস’ নামে অধিক পরিচিত।
-
তাঁকে বলা হয় ‘চলিষ্ণু অভিধান’।
-
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতিসত্তা সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত উক্তি—
“আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।” -
তিনি ১৯৫৯ সালে ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ রচনা করেন।
-
এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনা করেন।
তাঁর ভাষা ও সাহিত্যবিষয়ক উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ
-
ভাষা ও সাহিত্য
-
বাঙ্গালা ব্যাকরণ
-
বাংলা সাহিত্যের কথা
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ইত্যাদি
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 1 month ago